ভিডিও

রংপুর রাইডার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে ফরচুন বরিশাল

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪, ১০:৪৩ রাত
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪, ০১:০৭ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

ফাইনালে ওঠার লড়াই বা কোয়ালিফায়ার ম্যাচ ছাপিয়ে এটি হয়ে উঠেছিল যেন সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের দ্বৈরথ। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে সেখানে ব্যর্থ দুজনই। তবে দলীয় লড়াইয়ে হাসি তামিমের। সাকিবদের হারিয়ে তারা পৌঁছে গেল বিপিএলের ফাইনালে। বিপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে রংপুর রাইডার্সকে ৬ উইকেটে হারাল ফরচুন বরিশাল।

মিরপুর শের-ই-বাংলা েস্টেডিয়ামে আজ বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) শামীম হোসেনের বিধ্বংসী ইনিংসে ২০ ওভারে ৭ উইকেট ১৪৯ রান তোলে রংপুরে। সেই রান বরিশাল টপকে যায় ৯ বল বাকি রেখে। 

বরিশালের রান তাড়ায় প্রথম তিন ওভার ছিল নিস্তরঙ্গ। সাবধানী ব্যাটিংয়ে শুরু করে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও মেহেদী হাসান মিরাজ। চতুর্থ ওভারে আক্রমণে এসে দুজনকেই ফিরিয়ে দেন আবু হায়দার। তুলে মারার চেষ্টায় মিড অফে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৮ বলে ১০ রান করা তামিম। মিরাজ এলবিডব্লিউ হন ১৪ বলে ৮ করে। 

সেই ধাক্কা অনেকটাই সামাল দিয়ে তৃতীয় উইকেটে ৩৭ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়েন সৌম্য সরকার ও মুশফিক। 

জুটির শুরুতে মুশফিক ছিলেন আগ্রাসী। নিশামের বলে একটি ছক্কা পান তিনি ব্যাটের ওপরের কানায় লেগে। ওই ওভারে দুটি চারও মারেন তিনি। ধীরস্থির শুরুর পর আবু হায়দারের এক ওভারে এক ছক্কা ও দুই চার মারেন সৌম্য। 

বিস্ময়করভাবে, মোহাম্মদ নাবি ও সাকিব আল হাসানকে আক্রমণে আনতে বেশ দেরি করেন রংপুর অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। দশম ওভারে এসেই জুটি ভাঙেন নাবি। ১৮ বলে ২২ রান করা সৌম্য ফেরেন স্টাম্পড হয়ে। তখনও ম্যাচ দোদুল্যমান। ১০ ওভারে বরিশালের রান ৩ উইকেটে ৬৯। শেষ ১০ ওভারে প্রয়োজন ৮১ রান। 

পরের জুটিতেই ম্যাচ হেলে পড়ে বরিশালের দিকে। মুশফিক ও কাইল মেয়ার্সের জুটিতে ৫০ রান আসে ২৭ বলে। রংপুরের ইনিংসকে পরিষ্কার দুটি ভাগে আলাদা করা যায়- প্রথম ১৫ ওভার আর পরের ৫ ওভার। কিংবা বলা যায়, শামীমের আগে আর শামীমের সময়।

রংপুরের স্কোর এক পর্যায়ে একশ হওয়া নিয়েই ছিল টানাটাননি। ১৫ ওভার শেষে রান ছিল ৭ উইকেটে ৮৩। কিন্তু ২০ ওভার শেষে সেই স্কোর পৌঁছে যায় দেড়শর কাছে। কারণ, তখন ছিলেন শামীম!

টস জিতে বোলিংয়ে নামা বরিশাল শুরু থেকেই চেপে ধরে রংপুরকে। ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই দুটি উইকেট নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ওভারের প্রথম বলে বিদায় নেন ওপেনিংয়ে নামা শেখ মেহেদি হাসান (২)। ওভারের শেষ বলে আরও বড় ধাক্বা খায় রংপুর। পুল করার চেষ্টায় উইকেট হারান সাকিব আল হাসান (১)।

বেশি কিছুটা সময় উইকেটে থেকে রনি তালুকদার বিদায় নেন ১২ বলে ৮ রান করে। প্রথম ৫ ওভারে ব্যাট থেকে কোনো বাউন্ডারিই আসেনি। ষষ্ঠ ওভারে প্রথম বাউন্ডারি মারেন জিমি নিশাম। পাওয়ার প্লেতে রংপুর করে ৩ উইকেটে ২৬ রান। 

নিশাম পরে টানা তিনটি বাউন্ডারি মারেন কাইল মেয়ার্সকে। এর দুটিই অবশ্য আসে ব্যাটের কানায় লেগে। তবে আরেকপ্রান্তে ছন্দ পেতে ধুঁকছিলেন নিকোলাস পুরান। 

দুই প্রান্তে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান দেখে অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজকে আক্রমণে আনেন বরিশাল অধিনায়ক। কাজ হয়ে যায় দ্রুতই। মিরাজের প্রথম ওভারেই পুরান বিদায় নেন ১২ বলে ৩ রান করে। পরের ওভারে জেমস ফুলারের শর্ট বলে জিমি নিশাম উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন ২২ বলে ২৮ করে। 

ফুলার একটু পরে ছেড়ে দেন মোহাম্মদ নাবির সহজ ক্যাচ। তবে সেটি পুষিয়ে দেন এই ইংলিশ পেসার নিজেই। এক ওভারেই ফিরিয়ে দেন নাবি (১৫ বলে ১২) ও নুরুল হাসান সোহানকে (১৭ বলে ১৪)। রংপুরের রান তখন ৭ উইকেটে ৭৭। 

আবু হায়দার ক্রিজে গিয়ে প্রথম বলেই দারুণ এক শটে ছক্কা মারেন সোজা ব্যাটে। তবে এরপর তিনি হয়ে যান দর্শক। খ্যাপাটে হয়ে ওঠেন শামীম।

মিরাজকে দুর্দান্ত রিভার্স সুইপে ছক্কায় উড়িয়ে শামীমের পাল্টা আক্রমণের শুরু। পরের ওভারে ছক্কা ও চার মারেন ওবেড ম্যাককয়কে।

ক্যারিবিয়ান এই বাঁহাতি পেসারের পরের ওভারে সত্যিকারের ধ্বংসলীলা চালান শামীম। রিভার্স স্কুপ করে দুটি ছক্কা মারেন তিনি উইকেটের পেছন দিয়ে, কবজির জোরে আরেকটি ছক্কা মিড উইকেট দিয়ে। ওই ওভারে তিনি বাউন্ডারিও মারেন দুটি। ২৪ রান থেকে এক ওভারেই ছুটে যান তিনি ফিফটিতে। ২০ বলে স্পর্শ করেন পঞ্চাশ, যৌথভাবে যা এবারের বিপিএলের দ্রুততম ফিফটি।

শেষ ওভারে আরেকটি বাউন্ডারিতে শামীম শেষ করেন ৫৯ রান নিয়ে। আবু হায়দারের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন অষ্টম উইকেট জুটিতে রান আসে ৭২। তাতে শামীমের অবদান ৫৮, আবু হায়দারের ১২। শেষ ৪ ওভারে রংপুর তোলে ৬০ রান। তাতে ম্যাচ জমে ওঠার রসদ ছিল। কিন্তু পেশাদার রান তাড়ায় রংপুরকে লড়াই জমাতেই দিল না বরিশাল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রংপুর রাইডার্স : ২০ ওভারে ১৪৯/৭ (রনি ৮, মেহেদি ২, সাকিব ১, নিশাম ২৮, পুরান ৩, নাবি ১২, সোহান ১৪, শামীম ৫৯*, আবু হায়দার ১২*; মেয়ার্স ৪-০-২২-১, সাইফ ৪-০-২৭-২, ম্যাককয় ৪-০-৫৩-০, ফুলার ৪-০-২৫-৩, মিরাজ ২-০-৯-১, তাইজুল ২-০-৯-০)।

ফরচুন বরিশাল : (মিরাজ ৮, তামিম ১০, সৌম্য ২২, মুশফিক , মেয়ার্স ২৮, মিলার ; ফারুকি ৪-০-১৬-১, মেহেদি , আবু হায়দার , নিশাম ১-০-১৬-০, হাসান , নাবি , সাকিব)।

ফল : ফরচুন বরিশাল ৭ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ : কাইল মেয়ার্স।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS