নাটোরের লালপুরে বস্তায় আদা চাষে সম্ভাবনার হাতছানি

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি : পদ্মানদী বিধৌত নাটোরের লালপুর উপজেলায় এই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে বস্তা পদ্ধতিতে মসলা জাতীয় ফসল আদার চাষ শুরু হয়েছে। খরচ কম হওয়ায় অনাবাদি পতিত জমি ও বসত বাড়ির আঙিনায় স্বল্প পরিচর্যায় বস্তায় আদা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন লালপুরের কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। বস্তা পদ্ধতিতে উৎপাদিত আদা প্রায় ২৫ লাখ টাকা বিক্রির আশা করছেন কৃষক ও কৃষি বিভাগ।
সরেজমিনে উপজেলার দুড়ুদুয়িরা ইউনিয়নের আট্রিকা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আম ও মেহগুনি বাগানের মধ্যে সারি সারি বস্তা আদার গাছে ভরে আছে। প্রথমবারের মতো বস্তা পদ্ধতিতে আদার চাষ করেছেন গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাগানে কৃষি অফিসের পরামর্শে ১ হাজার ৪৫০টি বস্তায় আদার চাষ করেছেন। মাটি, জৈব ও রাসায়নিক সার ও আদার বীজসহ তার মোট খরচ হয়েছে প্রায় এক লাখ টাকা।
সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, আদার বীজ বপণের পর তেমন কোন পরিচর্যা করতে হয়নি। বস্তায় আদা চাষের ফলে বৃষ্টি হলেও যেমন আদা নষ্ট হয় না, তেমনি আগাছাও জন্মে না। শুধু দু’বার কীটনাশক স্প্রে করতে হয়েছে। দুই এক মাস পরেই আদা উঠতে শুরু করবে। বস্তা প্রতি দেড় থেকে দুই কেজি আদার ফলন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। বাজার দর ভালো থাকলে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার আদা বিক্রি করবেন বলে জানান তিনি।
বালিতিতা ইনলামপুর গ্রামের খাইরুল ইসলাম বাড়ির আঙিনায় ৭৫০টি বস্তায় আদার চাষ করেছেন। জায়গাটি পতিত হওয়ায় আগে কোন ফসলের চাষ হয়নি। এবার কৃষি অফিসের পরামর্শে আদার চাষ শুরু করেছেন তিনি। লালপুর উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলায় এবছর ৮৬ জন কৃষক ১২ হাজার ৭শ’ টি বস্তায় আদার চাষ করেছেন।
আরও পড়ুনযা থেকে প্রায় ১২ হাজার ৭শ’ কেজি আদা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। লালপুরে মইশাল, বারি-২, বারি ৩ ও থাই এই চারটি জাতের আদার চাষ হচ্ছে। লালপুর উপজেলা কৃষি অফিসার প্রীতম কুমার হোড় জানান, তারা কৃষকদের আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করছেন।
আদার বীজ সরবারহ করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। চাষ বৃদ্ধি পেলে আগামীতে লালপুরে আদার চাহিদা পূরণ করে তা দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন এই কর্মকর্তা।
মন্তব্য করুন