প্রমত্ত পদ্মার বুকে এখন ধু ধু বালুচর
সুজানগর (পাবনা) প্রতিনিধি : চৈত্র মাস আসার আগেই পাবনার সুজানগরে এক সময়ের প্রমত্ত পদ্মানদী এখন ধু ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। এতে নদী হারাতে বসেছে তার অতীত ঐতিহ্য এবং অস্তিত্ব। উপজেলার শ্যামনগর গ্রামের পদ্মাপাড়ের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন বলেন, বেশি দিন আগের কথা নয়, প্রচণ্ড স্রোতস্বিনী প্রমত্ত পদ্মার গর্জনে মাঝি মাল্লারা সাহস পায়নি পদ্মার বুকে তার খেয়া নৌকা চালাতে, জেলে সাহস পায়নি তার মাছ ধরা নৌকা চালাতে।
এমনকি অনেক সময় পদ্মার বিশাল ঢেউয়ের ভয়ঙ্কর গর্জনের মুখে ফেরি এবং স্টিমারের মতো ভারি নৌ-যানও চলতে সাহস পায়নি। শুধু তাই না সে সময় পদ্মার প্রচণ্ড স্রোত আর বিশাল ঢেউয়ের গর্জনে পদ্মা পাড়ের মানুষ ভয়ে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে। কিন্তু কালের আবর্তনে সেই প্রমত্ত পদ্মা এখন শুকিয়ে শীর্ণ একটি খালে পরিণত হয়েছে। পদ্মার বুক জুড়ে জেগে উঠেছে ধু ধু বালু চর আর বালু চর।
উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, পাবনার সাতবাড়ীয়া পদ্মা নদীর খেয়াঘাট হতে রাজবাড়ীর হাবাসপুর খেয়াঘাট পর্যন্ত পদ্মা নদীর দূরত্ব প্রায় ৬কিলোমিটার। ২/৩ মাস আগেও দুই জেলার হাজার হাজার মানুষ ব্যবসা বাণিজ্যসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে ওই নৌ-পথে খেয়া নৌকায় যাতায়াত করতেন।
বিশেষ করে দুই জেলার মানুষ বাণিজ্যিকভাবে সবজি এবং মাছ বেচাকেনার জন্য পদ্মা নদী পারি দিয়ে স্থানীয় হাট-বাজারে যেতেন। কিন্তু মাত্র ২/৩ মাসের ব্যবধানে দীর্ঘ ৬কিলোমিটার পদ্মা নদীর সাড়ে ৫ কিলোমিটার শুকিয়ে ধু ধু বালু চর জেগে উঠেছে। আর মাত্র আধা কিলোমিটার পদ্মায় পানি রয়েছে। যে আধা কিলোমিটার পদ্মায় পানি রয়েছে তাতেও কোন বড় এবং ভারি নৌকা চলতে পারে না। পানি একদম কমে যাওয়ায় শুধু ছোট ছোট নৌযান চলাচল করে।
আরও পড়ুনভুক্তভোগী খেয়া নৌকার যাত্রী উপজেলার কাদোয়া গ্রামের বাসিন্দা আলমগীর হোসেন মাস্টার বলেন, বর্তমানে পদ্মা নদীর সাড়ে ৫কিলোমিটার চর পায়ে হেঁটে আর মাত্র আধা কিলোমিটার পদ্মা খেয়া নৌকায় পার হয়ে পাবনা এবং রাজবাড়ী জেলার অভ্যন্তরে যাতায়াত করতে হয়। এতে খেয়া নৌকার যাত্রীদের অসহনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন, পদ্মা নদীর অতীত ঐতিহ্য এবং অস্তিত্ব রক্ষায় নিয়মিত ড্রেজিং করা ছাড়া বিকল্প কোন উপায় নেই।
মন্তব্য করুন