ভিডিও রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ। প্রতীকী ছবি

সারা বিশ্বে প্রযুক্তির জয়জয়কার। এমন পরিস্থিতিতে যদি দেশ সাইবার প্রযুক্তি ঝুঁকিতে থাকে তবে তা কতটা আশংকার বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রসঙ্গত: সম্প্রতি পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, প্রযুক্তি খাতে সংস্কার জরুরি। অন্যথায় বড় ধরনের সাইবার ঝুঁকিতে পড়তে পারে দেশ। এ ছাড়া চলমান পরিস্থিতিতে যে কোনো সময় প্রযুক্তি খাতে ঘটে যেতে পারে বড় ধরনের বড় অঘটন। পত্র-পত্রিকার খবরে জানা গেল বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রণীত বিতর্কিত সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিল করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

ব্যাপক সমালোচিত ও বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ রহিত করে বিগত পতিত সরকার সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ প্রণয়ন করে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এ আইনে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন ছিল না। নতুন মোড়কে পুরনো নিবর্তনমূলক ধারণাগুলোই এ আইনে সন্নিবেশিত হয়েছিল। কোনো গুণগত পরিবর্তন আনা হয়নি। কার্যত এটা সাইবার নিরাপত্তার নামে বিগত সরকারের রাজনৈতিক অভিসন্ধি পূরণ তথা বাকস্বাধীনতা, মত প্রকাশের অধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব, ভিন্নমত দমন ও নিপীড়নের হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর আইনটি বাতিলের জোর দাবি ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকার আইনটি বাতিলের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তী সময়ে এ সংক্রান্ত আইনের একটি নতুন খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। সম্প্রতি আগের সাইবার নিরাপত্তা আইনে থাকা বেশকিছু বিতর্কিত ধারা বাদ দিয়ে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৪- এর খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে। এ ছাড়া নতুন করে যুক্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি ধারা। এ বিষয়ে প্রত্যাশা এটি আগের মতো দমন-পীড়নের হাতিয়ার না হয়ে সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতেই প্রয়োগ করা হবে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয় শেখ হাসিনার সরকার। ৮ অক্টোবর ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের দুদিন পরই আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছিলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনসহ সব কালো আইন বাতিল করা হবে। এরপর থেকেই উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে বেশ কিছুদিন ধরেই এই আইন বাতিল বা সংশোধনের বিষয়ে বলা হচ্ছিল।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকরাও সাইবার নিরাপত্তা আইনকে মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য অন্তরায় হিসেবে উল্লেখ করে তা বাতিলের কথা জানান। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গত বছর বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে তার বদলে নতুন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হয়েছিল। কিন্তু এই আইন নিয়ে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে আপত্তি ওঠে। এ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনা হয়। অন্তর্বর্তী সরকার ইতিমধ্যে স্বাধীন মত প্রকাশের কারণে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া এসব মামলায় কেউ গ্রেফতার থাকলে তিনি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে মুক্তি পাবেন বলেও জানানো হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।

আরও পড়ুন

এ বিষয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর আইন মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬; ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এবং সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ এর অধীন গত আগষ্ট পর্যন্ত দেশের ৮টি সাইবার ট্রাইব্যুনালে মোট ৫ হাজার ৮১৮টি মামলা চলমান। বর্তমানে স্পিচ অফেন্স-সম্পর্কিত মোট  এক হাজার ৩৪০টি মামলা চলমান, যার মধ্যে ৪৬১টি মামলা তদন্তকারী সংস্থার কাছে তদন্তাধীন। ৮৭৯টি মামলা দেশের ৮টি সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।

এসব মামলার মধ্যে ডিজিটাল মাধ্যমে মুক্তমত প্রকাশের কারণে দায়ের হওয়া মামলাগুলোকে ‘স্পিচ অফেন্স’ এবং কম্পিউটার হ্যাকিং বা অন্য কোনো ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে জালিয়াতিকে ‘কম্পিউটার অফেন্স’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বর্তমান সরকার স্পিচ অফেন্স-সংক্রান্ত মামলাগুলো দ্রুত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

১ হাজার ৩৪০টি স্পিচ অফেন্স-সম্পর্কিত মামলার মধ্যে বিচারাধীন ৮৭৯টি মামলা আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে দ্রুত প্রত্যাহার করা হবে। ভবিষ্যতে কোনো সরকারই যেন সাইবার সুরক্ষা আইনকে গোষ্ঠী স্বার্থে ব্যবহার না করতে পারে, সেটি নিশ্চিত করা এ আইনের অন্যতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দিনাজপুরের বোচাগঞ্জে গরুর পরিবর্তে কাঠের ঘাঁনি টানছে মোটরসাইকেল

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু খেজুর গুড়

দিগন্ত জোড়া মাঠে সরিষার হলুদ ফুলে রঙিন স্বপ্ন বুনছেন হিলির কৃষকরা

নামুজা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন

বগুড়ার সোনাতলায় জোড়গাছা খালের ফুট ব্রিজে ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পারাপার

করতোয়া মাল্টিমিডিয়া স্কুল এ্যান্ড কলেজ, বগুড়া’র নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ