ইজারা বন্দোবস্ত নিয়ে বিরোধে একই স্থানে দুই মেলা
বগুড়ার ধুনটে জৌলুস হারাচ্ছে ২শ’ বছরের পুরোনো বকচর মাছ-মিষ্টির মেলা
ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার ধুনট উপজেলায় কালেরপাড়া ইউনিয়নে বকচর এলাকায় ২শ’ বছরের বেশি সময় ধরে আয়োজন করা ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি আর মাছের মেলা তার জৌলুস হারাতে বসেছে। ইজারা বন্দোবস্ত নিয়ে বিরোধের কারণে এবছর এই মেলার পাশেই স্থানীয়রা পাল্টা আরও একটি মেলা বসিয়েছেন। ফলে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর মেলায় লোকজন খুবই কম। একই স্থানে পাল্টাপাল্টি দু’টি মেলার আয়োজন করায় লোকজনের সমাগম নেই একেবারেই।
আজ বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, চারদিকে ফসলের মাঠ। কেউ ধান রোপণ করছেন, কেউবা সবজি। মাঝের একটি ফাঁকা মাঠে বসেছে মাছের মেলা। সকালে নানা স্থান থেকে সেই মেলায় মানুষ আসছেন। এর আগে ট্রাক, পিকআপ ও রিকশায় মাছ ব্যবসায়ীরা মাছ নিয়ে হাজির হয়েছেন মেলায়।
চলছে মাছের বেচাবিক্রি। তবে বিগত বছরের মতো মাছের আমদানি ও বেচাকেনা কম। প্রতিবছর মাঘ মাসের তৃতীয় সপ্তাহের বুধবার এ মেলা বসে। দিনটির জন্য সারা বছর অপেক্ষায় থাকেন স্থানীয়রা।
মেলাকে কেন্দ্র করে প্রতিটি বাড়িতে থাকে নতুন-পুরনো অতিথি দিয়ে ভরা। বকচরসহ আশপাশের গ্রামে যারা বিয়ে করেছেন, সেসব জামাই এই মেলার মূল ক্রেতা। জামাইরা সবচেয়ে বড় মাছ কিনে খুশি মনে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যান। আবার জামাইদের আপ্যায়ন করতে শ্বশুরপক্ষও মেলা থেকে মাছ কিনে নিয়ে যান বাড়িতে। এবারও ব্যবসায়ীরা থরে থরে সাজিয়ে রেখেছেন মাছ।
আরও পড়ুনকেউ মাছ কিনেছেন, কেউবা দেখছেন আর ছবি তুলছেন। মেলায় কোনো কোনো মাছের ওজন ১০ থেকে ২০ কেজি। মাছ ছাড়াও মেলায় বিক্রি হয় বাহারি নামের মিষ্টিসহ হরেকরকম পণ্য। কিন্তু এবছর মেলায় আগত ক্রেতা এবং বিক্রেতা দুটোয় কম।
স্থানীয় বাসিন্দা সাইদুল ইসলাম, শাহজাহান আলী, আব্দুস ছোবাহানসহ অনেকেই জানান, মেলাটির প্রচলন কত বছর আগে শুরু হয়েছে, এর সঠিক তথ্য কেউ বলতে পারে না। তবে গ্রামের মুরব্বিরা জানিয়েছেন ২শ’ বছর আগে এই মেলার প্রচলন শুরু হয়।
এটি মাছের মেলা হলেও মানুষ এটাকে জামাই মেলা হিসেবে চেনে। মেলা উপভোগ করতে আগে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছেন অনেকে। কিন্তু এবার একই স্থানে পাল্টাপাল্টি মেলা লাগানোর কারণে আগের সেই জৌলুস আর নেই।
মন্তব্য করুন