বিধ্বস্ত সড়ক যেন মৃত্যুফাঁদ

বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার বেড়া পৌর এলাকার তেঘড়ি মহল্লায় বেড়া-হাটুরিয়া সড়কের পাশে মধু শেখের বাড়ি। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় সড়কটি বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক দিয়ে দিনেরাতে শতশত যানবাহন চলাচল করে। চলাচলের অনুপযোগী এই সড়কে প্রায়ই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যানবাহনগুলো দুর্ঘটনায় পড়ছে।
এর মধ্যে গত দুই মাসে একটি নছিমন ও একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মধু শেখের বসতঘরের ওপর গিয়ে পড়েছে। তাঁর বাড়ি সড়কের ঢালুতে বলে ঘরগুলোর অবস্থান সড়ক থেকে কিছুটা নিচে। দুইবার বসতঘরের ওপর যানবাহন পড়ায় ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হলেও ভাগ্যের জোড়ে কেউ হতাহত হননি।
মধু শেখ বলেন, ‘সড়কের এই জায়গা মৃত্যুফাঁদ হয়ে আছে। দুইবার অ্যাকসিডেন্ট হওয়া সত্ত্বেও দিনের বেলা হওয়ায় সে সময় সৌভাগ্যবশত ঘরে কেউ ছিল না। তাই আমার বাড়ির লোকের কোনো ক্ষতি হয়নি। কিন্তু এর পর থেকে সব সময় আতঙ্কে থাকি, কোন সময় আবারও ঘরের ওপর গাড়ি আইস্যা পড়ে।’
মধু শেখের মতো আতঙ্কে আছেন তেঘড়ি মহল্লায় বাস করা সড়কের পাশের অর্ধ শতাধিক পরিবার। কারণ বিধ্বস্ত সড়কের কারণে বেড়া-হাটুরিয়া সড়কের তেঘড়ি অংশে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। গত তিন মাসে বিভিন্ন বাড়ির বেশ কিছু ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। তবে বিধ্বস্ত সড়কের কারণে এই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রী ও চালকেরাও রয়েছেন চরম ঝুঁকিতে। একদিকে তাঁদেরকে দুর্ঘটনার আতঙ্ক নিয়ে ও আরেকদিকে চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে এই সড়কপথে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
আরও পড়ুনএলাকাবাসী ও সড়কে যাতায়াতকারীরা জানান, বেড়ার কানাইবাড়ি মোড় থেকে উপজেলা পরিষদ হয়ে এই সড়কটি মোহনগঞ্জ-নাটিয়াবাড়ি সড়কের সঙ্গে গিয়ে মিশেছে। সড়কটি বেড়া-হাটুরিয়া সড়ক নামে পরিচিত। এই সড়কটির উপজেলা পরিষদ থেকে হাটুরিয়া পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার অংশের বেশির ভাগ অংশই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে তেঘড়ি মহল্লার কাছে সড়কটির অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। এই অংশে অসংখ্য গর্ত সৃষ্টির পাশাপাশি সড়কের পাড়ও বৃষ্টিতে ভেঙেচুরে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। তারপরেও ঝুঁকি নিয়ে এই অংশ দিয়ে যানবাহন চলছে।
সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী অটোরিকশাচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এই সড়ক দিয়া যাওয়ার সময় প্রায়ই অ্যাকসিডেন্ট হতি দেখি। আমি নিজেও একদিন দুর্ঘটনায় পড়ছি। এ ছাড়া এই জায়গা দিয়্যা যাওয়ার সময় গাড়ির যেমন ক্ষতি হতেছে তেমনি চরম কষ্টও হতেছে।’
স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বেড়া কার্যালয়ের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, ‘সড়কটির সংস্কার কাজ খুব শিগগিরই শুরু হবে। ইতিমধ্যেই এর টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।’
মন্তব্য করুন