সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে পথের ধারে মুগ্ধতা ছড়িয়ে ফুটেছে ভাটিফুল

কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : শীত বিদায় নিয়ে প্রকৃতিতে ঋতুরাজের মাঝামাঝি অবস্থা। চারদিকে ধুলোর মাঝে প্রকৃতির রুক্ষতার জানান দিচ্ছে। এরইমধ্যে একেবারেই অনাদর আর অবহেলায় জন্ম নিয়ে বেড়ে উঠেছে বাংলাদেশের আদি ফুল ভাটফুল বা বনজুঁই। কাজিপুরের কাঁচা পাকা বিভিন্ন রাস্তার পাশে সাদা ধবধবে এই ফুল এখন সহজেই মানুষের নজর কেড়েছে।
শুরুটা হয়েছে ঋতুরাজের আগমনের পর থেকেই। ঝোপ-ঝাড়ে, বন-জঙ্গলে, সড়ক ও গ্রামীণ মেঠোপথের দু’ধারে, নদী-খাল-দিঘী ও জলাশয়ের পাড়ে, গ্রামীণ পরিবেশের আনাচে-কানাচে, থোকায় থোকায় ফোটা এই ফুল পথচারীদের মাঝে মুগ্ধতা ছড়িয়ে যাচ্ছে। এ ফুলের নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে মানুষের পাশাপাশি মুগ্ধ প্রকৃতির মধুজীবী প্রাণিকুলও।
সরেজমিনে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে চিরচেনা গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ ভাটিফুল তার অপরূপ সৌন্দর্যের পসরা সাজিয়েছে। স্থানভেদে এটির নাম ভাটি ফুল, ভাটফুল, ঘেটু ফুল, ভাত ফুল, ঘণ্টাকর্ণ থাকলেও কাজিপুর অঞ্চলে ‘ভাটি ফুল’ বা ভাইটার ফুল নামেই বহুল পরিচিত। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ভাটি পূজায় এই ফুল ব্যবহার করে থাকে।
এর বৈজ্ঞানিক নাম ক্লোরোডেনড্রাম ভিসকোসাম। এই ফুল ল্যামিয়াসেই পরিবারভূক্ত। এটি ইনফরচুনাটাম প্রজাতির । ভাটি ফুল দেশজ গুল্ম জাতীয় বুনোফুল। ছোট আকৃতির নরম শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট ঝোপ জাতীয় গাছে ভাটি ফুল ফোটে। ফুলের রং সাদা। পাঁচটি পাপড়ি। প্রতিটি ফুলের অভ্যন্তরে বেগুনি রঙের ঢেউ যেন ব্রাশ দিয়ে টেনে দেওয়া হয়েছে। রাতে ভাটিফুল সুবাস ছড়ায়।
আরও পড়ুনএটি একটি ওষধি উদ্ভিদ। এর পাতা কবিরাজরা অ্যাজমা, টিউমার, সাপের কামড়ের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করেন। এছাড়া গ্রামাঞ্চলের মানুষেরা জ্বর, চর্মরোগ ও বিছার হুল ফোটানোতে এর পাতা, ফল, ফুল ও মূল ভেষজ হিসেবে ব্যবহার করেন।
বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলের সর্বত্রই ভাটি ফুলের কম বেশি দেখা মেলে। তবে বহু বিলুপ্ত উদ্ভিদের মতো ভাটি ফুলও বিলুপ্তির দিকে। আমিনা মনসুর ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী আফরোজা নৌশিন জানান, ভাটি ফুল ফুটলেই নিশ্চিত হওয়া যায় প্রকৃতিতে বসন্ত প্রবেশ করেছে। শীত শেষে ভাটি ফুল ফুটলে প্রকৃতির চেহারায় সতেজতার ছাপ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আরেক শিক্ষার্থী তাসমিন জানান, কলেজে আসা-যাওয়ার পথে ভাটি ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করি। গ্রামীণ পরিবেশে এ ফুলের সৌন্দর্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর।
মন্তব্য করুন