ভিডিও সোমবার, ৩১ মার্চ ২০২৫

গ্যাস লাইনে বিস্ফোরণ

গ্যাস লাইনে বিস্ফোরণ। প্রতীকী ছবি

নানাভাবে মানুষের অকাল মৃত্যু হচ্ছে। এই অকাল মৃত্যু রোধ করা যাচ্ছে না। মানুষ পথে, রাজপথে, বন্যায় ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে, ঘূর্নিঝড়, নৌ-রেলপথের সড়ক দুর্ঘটনায়, আগুনে ও গ্যাস বিস্ফোরণে মারা যাচ্ছে। এক মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই আরেক মৃত্যু এসে হাজির হয়। আমরা শোকগ্রস্ত ও হতাশ হই। এটাই বাংলাদেশের সমাজে বাস্তবতা। বাংলাদেশের মানুষের নিয়তি। অন্যান্য দুর্ঘটনার পাশাপাশি ইদানিং গ্যাস বিস্ফোরণে মানুষ হতাহত হচ্ছে।

পত্র-পত্রিকার খবরে প্রকাশ নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় গ্যাসের লাইনে লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে নারীসহ একই পরিবারের তিনজন দগ্ধ হয়েছেন। গত রোববার ভোর চারটার দিকে উপজেলার তল্লা এলাকায় এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস বলছে, ভোরে গ্যাসের চুলা জ্বালাতেই এ ঘটনা ঘটে। গ্যাসের লাইনে লিকেজ থেকে হয়ত এ ঘটনা ঘটেছে। দগ্ধদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। দগ্ধরা হলেন,  হারুন অর রশিদ, রুনা আক্তার ও মিম।

এর আগে সিলেটের গোয়াইন ঘাটে বসতঘরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মা মেয়ে নিহত ও একই পরিবারের চার সদস্য দগ্ধ হয়েছেন। এ ছাড়া ঢাকার ধামরাইয়ে বাসায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে শিশুসহ একই পরিবারের পাঁচজন দগ্ধ হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বাসায় গ্যাস লাইন বিস্ফোরণে দগ্ধ হন জাহিদ হোসেন, তার স্ত্রী রুমা আক্তার ও মেয়ে লাবনী।

পাঁচ থেকে সাত বছর আগেও এসি, গ্যাসলাইন বা গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এত হতাহতের ঘটনা ঘটতো না। চট্টগ্রামের পাথর ঘাটা এলাকায় গ্যাসের পাইপ লাইন বিস্ফোরণে দেয়াল ধসে ৭ জন নিহত এবং ১০ জন দগ্ধ হয়েছিল। এখানেই শেষ নয়, রাজধানীর রূপনগরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ৭ শিশুর মৃত্যু আমাদের হৃদয়ে দাগ কেটে গেছে।

আরও পড়ুন

বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগ বা গ্যাসের চুলার ব্যবহারে অসাবধানতা ও অসচেতনতা, গ্যাসের সিলিন্ডার পরীক্ষা না করা এবং সরবরাহকৃত গ্যাস লাইনের ত্রুটির কারণে বিপদ এবং মর্মান্তিক পরিণতি ডেকে আনতে পারে তার দৃষ্টান্ত এসব দুর্ঘটনা। মানুষকে বলা হয় সৃষ্টির সেরা জীব, আশরাফুল মাখলুকাত। বর্তমান সমাজের মানুষ সবচেয়ে অনিরাপদ। মানুষ যেখানে সেখানে বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছে।

মনে রাখা দরকার, বিভিন্ন সময়ে গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত এলপিজি সিলিন্ডার এবং যানবাহনের সিলিন্ডারও বিস্ফোরিত হয়েছে। মানহীন সিলিন্ডার ব্যবহার করায় নিরাপদ রান্না ঘর যেমন হয়ে উঠেছে বিস্ফোরণের বিপজ্জনক স্থান, তেমনি যানবাহনের নিরাপত্তাও হুমকিতে পড়েছে। ফলে এ পরিস্থিতির অবসানই প্রত্যাশিত। সংশ্লিষ্টদের এই বিষয়টি এড়ানো যাবে না যে, অভিযোগ রয়েছে, বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও যানবাহনে ব্যবহৃত সিলিন্ডারগুলো পাঁচ বছরের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও পুন:পরীক্ষায় কেউ উদ্যোগী হয় না।

এ ছাড়া সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঝুঁকি নিয়ে বিপুল সংখ্যক সিএনজি চালিত যানবাহন চলাচল করছে এমন অভিযোগও বিদ্যমান। আর শুধু যানবাহনে নয়, বাসা বাড়িতেও গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মানুষের ঘটনা মাঝে মধ্যেই ঘটে। বেলুন ফোলানোর কাজে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণেও মানুষ হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। এই সিলিন্ডারগুলোর ঝুঁকি আরও বেশি, কারণ এগুলোর একটা বড় অংশ পুরনো সিলিন্ডার কেটে বানানো হয়। এমনটিও জানা গেছে। অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিধায়, এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ অত্যাবশ্যক। আমরা আশা করব, গ্যাস সিলিন্ডার রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নিজ এলাকায় ঈদের নামাজ আদায় করেছেন হাসনাত আবদুল্লাহ

ঈদের দিনের জিয়ার মাজারে বিএনপির শ্রদ্ধা ও দোয়া

১৫ বছর পর আমরা মুক্ত পরিবেশে ঈদ উদযাপন করছি : মির্জা ফখরুল

পাবলিক ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট'স অ্যাসোসিয়েশন অব জামালপুরের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত 

যশোর সীমান্তে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

রাজশাহীতে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত