আমরা এখন ভয়ঙ্কর সময় অতিক্রম করছি - রুহুল কবির রিজভী

নাটোর প্রতিনিধি : বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এড. রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, আমরা এখন ভয়ঙ্কর সময় অতিক্রম করছি। কেননা আমরা একটি দুঃস্বপ্নের পর শান্তি ও স্বস্তির মধ্যে থাকতে চেয়েছি। কিন্তু এখন নানাভাবে অর্ন্তঘাত সৃষ্টি করা, নানাভাবে বিভিন্ন দুর্যোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নানা ষড়যন্ত্র করার প্রচেষ্টা চলছে। বাংলাদেশকে আবার তাদের কবজায় নিতে বহু ধরনের খেলাধুলা চলছে। এ ব্যাপারে আমাদের সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
আজ শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে শহরের অনিমা চৌধুরী অডিটোরিয়ামে জিয়া পরিষদ নাটোর আয়োজিত ‘স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নাটোর জেলা জিয়া পরিষদের সভাপতি আহমুদুল হক চৌধুরী স্বপনের সভাপতিত্ব এতে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক উপমন্ত্রী এড. এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. শরিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশের জনগণ শেখ হাসিনার পতন দেখতে চেয়েছেন, সেই সাথে একটি ভালো সরকারও চেয়েছেন। দেশের মানুষ একটি অন্তর্বর্তী সরকার পেয়েছেন। এ সরকারের দায়িত্ব একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করা। কেননা দেশে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন জাদুঘরে চলে গিয়েছিল। সেই জাদুঘর থেকে জীবন্ত অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনকে ফিরিয়ে আনতে হবে। সেই বিশ্বাস দেশের মানুষ ড. ইউনুস সাহেবের ওপর রেখেছেন। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে ডিসেম্বর না জুন, ডিসেম্বর না মার্চ বলা হয়।
তাহলে এটি সরকারের দৃঢ় সংকল্প বা অঙ্গীকার, যেটির ওপর জনগণের আস্থা বাড়ে সেটা অনেকটাই দুর্বল হয়ে যায়। তিনি বলেন, কেউ কেউ বলছেন সংস্কার সম্পাদন না করে নির্বাচন করলে যে দল ক্ষমতায় আসবে, তারা সংস্কার করতে পারবে কিনা সন্দেহ। অথচ সংস্কার হলো রাজনৈতিক অঙ্গীকার। যে দল নির্বাচিত হবে তাদের তো পার্লামেন্টে পাশ করতে হবে।
এই ধরনের ধোঁয়াশা বিভ্রান্তি তৈরি করে কার লাভ হচ্ছে? গণতান্ত্রিক সংগ্রামে আমরা একসাথে লড়াই করেছি। যে সমস্ত দল ও সর্বশেষ ছাত্র-জনতা আমাদের ভেতরই যদি মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং বাড়ে, ভুল বোঝাবুঝি বাড়ে তাহলে তো ফ্যাসিবাদ মাথা তোলার চেষ্টা করবেই। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে তাবেদারী রাষ্ট্র হিসাবে মনে করতো পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত।
আরও পড়ুনকে তাদের আনুগত্য করবে কে তাদের পক্ষে থাকবে তাদেরকে নিয়ে বাংলাদেশকে তাদের কব্জায় নিতে চেয়েছিল। এজন্যই দুনিয়া কাঁপানো ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে এক ভয়ঙ্কর দানবীয় ফ্যাসিস্টের পতন হলো এবং সে পালিয়ে গেল সেই ভারতে। এরপর সেই দেশের মিডিয়া, বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিবিদরা উন্মাদ হয়ে গেল। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার শুরু করল, তারা বলতে লাগলো বাংলাদেশ জঙ্গিবাদের আস্তানা। যেই গুম-খুনের মধ্য দিয়ে রক্ত গঙ্গা বয়িয়ে ক্ষমতার সিংহাসন ধরে রেখেছিল শেখ হাসিনা, সেই শেখ হাসিনাকে তারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে টিকিয়ে রেখে তারা চেয়েছে বাংলাদেশে থাকবে তাদের কব্জার মধ্যে।
তিনি বলেন, তাদের পররাষ্ট্রনীতি, তাদের অভ্যন্তরীণ নীতি, বাণিজ্যিক নীতি যা হবে সেটাই বাংলাদেশকে মানতে হবে। সেটাই করতে চেয়েছিলেন এবং অনেকটাই পূরণ করেছিলেন শেখ হাসিনার মাধ্যমে। তাই শেখ হাসিনা শূন্য বাংলাদেশ তাদের জন্য (ভারতের) খুবই মনো ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের রুখে দিতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
সেমিনারের অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী মহাসচিব প্রফেসর ড. এমতাজ হোসেন, বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক কাজী গোলাম মোর্শেদ, জিয়া পরিষদের রাজশাহী বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম, রাজশাহী জিয়া পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ সালাম বিল্পব, জেলা বিএনপি’র আহবায়ক রহিম নেওয়াজ, সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জিল্লুর রহমান খান বাবুল চৌধুরী, সাইফুল ইসলাম আফতাবসহ পরিষদের নেতৃবৃন্দ। সেমিনার শেষে একটি মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে।
মন্তব্য করুন