তাপদাহ ও গরমে ওষ্ঠাগত প্রাণ: মানুষ তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন ফুটপাতের দোকানের সস্তার শীতল পানীয়তে

স্টাফ রিপোর্টার : আগের দিনের চেয়ে তাপমাত্রা একটু কমলেও তাপদাহ ও ভ্যাপসা গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত। বিশেষ করে শিশু বৃদ্ধ ও শ্রমজীবী মানুষের। এরই মধ্যে দেশের দুই বিভাগ ও ছয় জেলার ওপর দিয়ে বইছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না। রোদের তীব্র দহনে গায়ে ও চোখে ফোসকা পড়ার মত অবস্থা। ঘাম হচ্ছে দর দর করে। এই অবস্থায় শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী মানুষ রাস্তার পাশের পানীয়র দোকান থেকে শরবত কিনে খাচ্ছেন। যেসব জলাশয়ে পানি আছে তাতে নামতে দেখা গেছে শিশু-কিশোরদের। মাঝে মাঝে আকাশের মুখ ভার হলেও পরমুহূর্তে তা আবারও তেতে উঠছে। এমন যখন অবস্থা সেই সময় আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানা গেছে, দিনের তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে, সেই সাথে আবার ঝড়ের আভাসও দিয়েছে সূত্রটি।
এপ্রিলের শুরু থেকেই উঠতে শুরু করেছিল গরমের পারদ। তারপর থেকে দিনের তাপমাত্রা বাড়ছেই। এবছর গরমের শুরু থেকেই কাঠফাটা গরমের পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছিল আবহাওয়া অধিদফতর। টানা যেভাবে পারদের ঊর্ধ্বমুখী গতি থাকছে, তাতেও সেই ইঙ্গিতই ধরা পড়ছে। তীব্র গরমে রাতে ঘুমাতেও পারছেন না অনেকেই। শিশু, বৃদ্ধ ও রোগীরা গরমে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন। আবার গরম ক্রমেই বাড়তে থাকায় শ্রমজীবী মানুষের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। এরই মধ্যে অনেক এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে গেছে। নলকূপ ও সেচযন্ত্রে পানি উঠছে না ঠিকমত। গরমে ডাব, তরমুজ, দইয়ের চাহিদা আরও বেড়েছে। এদিকে বৃষ্টিহীনতায় কৃষি ও মাছ চাষ নিয়ে চিন্তিত চাষিরা। এছাড়া গরমে ছড়িয়ে পড়ছে নানা রোগব্যাধি। গত কয়েকদিন হলো তাপমাত্রার পারদ ৩৫ থেকে উঠে ৩৯ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই করছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বগুড়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গত কয়েকদিন হলো সূর্যদহনে যেন আগুন ঢেলে দিচ্ছে প্রকৃতিতে। রোদ নয় যেন আগুন নামছে আকাশ থেকে সকাল থেকে সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত। টানা দাবদাহে চারিদিকে বৃষ্টির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে। কিন্তু কাঙ্খিত বৃষ্টির দেখা মিলছে না। স্বস্তি পেয়ে তৃষ্ণার্তরা রাস্তার পাশের দোকান থেকে ১০ টাকা দিয়ে বরফ শীতল বিভিন্ন ফ্লেভারের পানীয় পান করছেন। এতে করে স্বাস্থ্য ঝুঁকিও বেড়ে যাচ্ছে। এদিকে আবহাওয়া অফিস বলছে, বৃষ্টির জন্য আরও অপেক্ষা করতে হবে। গতকাল বগুড়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
জানা গেছে, এবছর গড় বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের তুলনায় কম। সপ্তাহের পর সপ্তাহজুড়ে বৃষ্টির দেখা নেই। তাছাড়া সূর্যের কিরণকাল অর্থাৎ দিনের দৈর্ঘ্য বাড়ছে, যা নিয়ম অনুয়ায়ী ২১ জুন পর্যন্ত বাড়বে। ফলে দিনের তাপমাত্রা আরও অসহনীয় হয়ে উঠছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রার ব্যবধানও কমে গেছে। আক্ষরিক অর্থেই রুদ্ররূপ ধারণ করেছে প্রকৃতি। দিনের পর দিন রোদ আর প্রচন্ড গরমে রুক্ষ হয়ে পড়ছে মাঠ-ঘাট প্রান্তর। নদনদী-খালবিল শুকিয়ে গেছে। প্রাকৃতিক জলাধারগুলো এখন চাষাবাসের আওতায় এসেছে। চলতি বোরো মৌসুমে জমিতে বাড়তি সেচ দিতে হচ্ছে। এতে করে বাড়ছে খরচ। খরায় আম, কাঠাল,ও লিচুসহ ঝরে যাচ্ছে মৌসুমী ফল।
আরও পড়ুনবগুড়া আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, আজ বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বগুড়ার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বুধবার ছিল ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েকদিনেও দেখা মিলবে না কাঙ্খিত বৃষ্টির।
মন্তব্য করুন