খোল রেখে নিয়ে গেছে তামার তার
পাহারাদারকে বেঁধে গভীর নলকূপের তিনটি ট্রান্সফরমার চুরি

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : কালাই পৌরশহরের পোড়াগ্যাড়া মাঠে পাহারাদারকে বেঁধে রেখে একটি গভীর নলকূপের ১০ কেভি তিনটি ট্রান্সফরমার চুরি করে নিয়ে গেছে চোরেরা। বৈদ্যুতিক খুঁটির মাথা থেকে নিচে নেমে তামার তার নিয়ে খোল তিনটি রেখে যার তারা। ঘটনাটি ঘটে গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে। আজ শনিবার (৩ মে) সকালে চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমারের অধীনস্ত গভীর নলকূপের মালিক বিষয়টি জানার পর স্থানীয় পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি ও থানা পুলিশকে জানন।
চলতি মৌসুমের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এ উপজেলায় ৭৯টি ট্রান্সফরমার ও ১৫টি মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। চুরির ভয়াবহতা এতটাই বেড়েছে যে, চোরেরা এখন চুরির পর ঘটনাস্থলে ট্রান্সফরমারের খোল রেখে শুধুমাত্র তামার তার নিয়ে যাচ্ছে। ফলে কোনো কাজে আসছে না এসব ফেলে যাওয়া খালি বোতল। এতে ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে বহুগুণ।
গভীর নলকূপের মালিক ও পাহারাদারের সাথে কথা বলে জানা যায়, মৌসুমের শুরু থেকে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গভীর-অগভীর নলকূপে সংযোগকৃত বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ও মিটার চুরি অব্যাহত রয়েছে। সে কারণে কালাই পৌরশহরের প্রামানিক পাড়া মহল্লার বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন প্রামানিক পোড়াগ্যাড়া মাঠে তার গভীর নলকূপে সংযোগকৃত বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার, মিটার ও সেচ কাজ পরিচালনার জন্য পাহারাদার রাখেন।
প্রত্যকে দিনের মতো শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি পাহারাদারকে গভীর নলকূপে রেখে বাড়িতে আসেন। এরই মধ্যে রাত সাড়ে ৯টার দিকে চোরেরা গভীর নলকূপে গিয়ে পাহারাদারকে ঘরের মধ্যে বেঁধে রেখে বৈদ্যুতিক খুঁটির মাথা থেকে তিনটি ট্রান্সফরমার নিচে নেমে খালি বোতল রেখে তামার তার চুরি করে নিয়ে যায়। শনিবার সকালে কৃষকরা মাঠে গিয়ে গভীর নলকূপ ঘরের জানালা দিয়ে দেখতে পান পাহারাদার দেলোয়ারকে চোরেরা মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে হাত-পা বেঁধে ঘরের মেঝেতে ফেলে রেখেছে। খবর পেয়ে সেচপাম্পের মালিক এসে পাহারাদারকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।
আরও পড়ুনপাহারাদার দেলোয়ার হোসেন বলেন, রাত সাড়ে ৯টার দিকে চতুরদিক থেকে একসাথে ৬/৭ জন এসে এলোপাথারি মারপিট করতে থাকে। পরে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে হাত-পা বেঁধে ঘরের মধ্যে রেখে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেয়। এরপর চোরেরা কী করেছে তা আর বলতে পারি না।
গভীর নলকূপের মালিক হেলাল উদ্দিন প্রামানিক বলেন, খবর পেয়ে গভীর নলকূপে গিয়ে ঘরের মধ্যে থেকে দেলোয়ারকে হাত-পা বাঁধা ও মুখে স্কচটেপ লাগানো অবস্থায় উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসি। খুঁটির গোড়ায় ট্রান্সফরমারের খালি বোতল দেখে পল্লীবিদ্যুৎ অফিস ও থানায় জানায়। তিনি আরও বলেন, মৌসুমের প্রায় মাঝামাঝি সময়, তিনটি ট্রান্সফরমার নিতে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা জমা দিতে হবে। সেচ না দিলে ফসলেরও ক্ষতি হবে। আলুর দামও নেই।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন বলেন, ট্রান্সফরমার চুরির বিষয় শুনেছি। এখনও অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জয়পুরহাট পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) আবু উমাম মো. মাহবুবুল হক বলেন, চুরির বিষয়ে আমরাও পুলিশকে জানিয়েছি। ট্রান্সফরমার ও মিটার চুরির ঘটনা একদিনের সমস্যা নয়, সব মহলের সহযোগিতা ছাড়া এই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।
মন্তব্য করুন