ভিডিও শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বগুড়ার বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় নির্ধারিত মূল্যে কিনতে পারছে না খাদ্য বিভাগ

র। ছবি : দৈনিক করতোয়া

স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়া জেলার হাট-বাজারে নতুন বোরো ধানের আমদানি রয়েছে পর্যাপ্ত। আমদানি বাড়তে থাকায় ধানের দামও কমছে। হাটে ধানের দাম কম হলে বেশী দামে সরকারি খাদ্য গুদামে ধান কিনতে পারছে না খাদ্য বিভাগ। বগুড়া জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এবছর জেলার ১২ টি উপজেলায় ৩৬ টাকা কেজি দরে অর্থাৎ ১৪৪০ টাকা মণ দরে ১২ হাজার ১৬৯ মেট্রিকটন ধান খাদ্য বিভাগ কিনবে।

তবে কার্ডধারী কৃষক অ্যাপসের মাধ্যমে আবেদন করে ধান সরবরাহ করবেন। গত ২৪ এপ্রিল থেকে ধান সংগ্রহ শুরু করেছে খাদ্য বিভাগ। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে ধান সংগ্রহ। রোববার (১৮ মে) পর্যন্ত খাদ্য বিভাগ ধান সংগ্রহ করেছে মাত্র ১৮৭ মেট্রিক টন।

বগুড়ার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ধান কাটা মাড়াই চলছে পুরোদমে। অধিকাংশ  কৃষক ধান কেটে  জমি থেকেই অথবা হাটে নিয়ে বিক্রি করছেন। গত দুই  সপ্তাহের ব্যবধানে ধানের দাম মণ প্রতি কমেছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। গতকাল শনিবার বগুড়া সদরের ঘোড়াধাপ হাটে দেখা গেছে শুকানোর পর মোটা ধান বিআর-৩৩ বিক্রি হচ্ছে ১০৫০ টাকা থেকে ১১০০ টাকা মণ দরে। শুক্রবার কাহালু উপজেলার বিবিরপুকুর হাটে চিকন ধান বিআর-২৮ বিক্রি হয়েছে ১১৫০ থেকে ১২০০ টাকা মণ দরে।

ঘোড়াধাপ হাটের ধান ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতি হাটেই ধানের আমদানি বাড়তে শুরু করেছে। একারণে দামও কমছে। আমদানি বাড়ায় হাটে কাঁচা ধান কেনা হচ্ছে না। ধান ব্যবসায়ীরা জানান, আগামী দুই সপ্তাহ ধানের দাম কম থাকলেও এরপর  দাম বাড়তে থাকবে। কারণ হিসেবে তারা বলেন, কৃষক ধান কাটা মাড়াই এর শুরুতেই কিছু ধান বিক্রি করেন দেনা পরিশোধ করার জন্য। সার,কীটনাশক এবং সেচের টাকা বাকী থাকে অনেক কৃষকের। যার কারণে তারা দেনা পরিশোধের জন্য দাম কম হলেও ধান বিক্রি করে। এদিকে অ্যাপসের মাধ্যমে খাদ্য বিভাগ সরকারি গুদামে ধান কেনার কারণে  কৃষক ধান সরবরাহ করতে আগ্রহী না।

যার কারণে বাজারের চেয়ে সরকারি খাদ্য গুদামে ধানের দাম বেশী হলেও কৃষক সেখানে ধান বিক্রি করছেন না। কৃষক বলছেন, খাদ্য বিভাগে ধান সরবরাহ করতে অনেক ঝামেলা। অ্যাপসের মাধ্যমে আবেদন, এরপর কৃষি অফিসে কৃষি কার্ড নিয়ে যোগাযোগ করতে হয়।সেখান থেকে অনুমোদন পেলে খাদ্যগুদামে ধান নিয়ে যেতে হয়। সেখানে ধান পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তারপর গুদামে ঢুকানো হয়।

আরও পড়ুন

তারপরেও ধান বিক্রির টাকা নগদ পাওয়া যায় না। খাদ্য বিভাগ থেকে ব্যাংকে কৃষকের হিসাব নাম্বারে টাকা পাঠানো হয়। এসব প্রক্রিয়া করতে সময় লাগে। যার কারণে দাম কম হলেও হাটে নগদ টাকায় ধান বিক্রি করতে আগ্রহী কৃষক। বগুড়া সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হারুন- উর- রশিদ বলেন,পুরোপুরি ধান কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। বাজারে ধানের দাম অনেক কম, কিন্তু তারপরেও কৃষকের মধ্যে সরকারি খাদ্য গুদামে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ নেই।

তিনি বলেন, সদর উপজেলায় ছয় শতাধিক কৃষক অ্যাপসের মাধ্যমে নিবন্ধন করলেও তাদের মধ্যে ধান সরবরাহ করার আগ্রহ নাই। আগ্রহ বাড়ানোর জন্য গ্রামে গিয়ে খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা কৃষকদের সাথে সভা করে  কাজে আসছে না। বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ  অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সোহেল মোঃ সামছুদ্দিন ফিরোজ বলেন, বোরো চাষের জন্য কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লক্ষ ৮৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমি।

কিন্তু ভুট্টার চাষ বেড়ে যাওয়ার কারণে প্রায় দুই হাজার হেক্টর কম জমিতে বোরো চাষ হলেও এবার ফলন অনেক ভাল হয়েছে। এবার বোরো ধানের ফলন হয়েছে চাল আকারে হেক্টর প্রতি ৪ দশমিক১৩ মেট্রিক টন। ইতিমধ্যে জেলার ৬২ ভাগ জমির ধান কাটা মাড়াই শেষ হয়েছে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে পরকীয়ার ঘটনায় ভায়রাকে পিটিয়ে হত্যা

বগুড়ার কাহালুতে এক প্রধান শিক্ষককে গণপিটুনি দিয়ে অবরুদ্ধ করল গ্রামবাসী

ঋণের চাপে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে শিক্ষককের আত্মহত্যা

গাইবান্ধার সাঘাটা বাজারে প্রবেশ পথের বেহাল অবস্থা 

অনার্স ফরম ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে দিনাজপুর ফুলবাড়ীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মানববন্ধন

বিদেশে নির্বাচনী প্রচার চালানো যাবে না