গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বৃষ্টির পানিতে ডুবলো কৃষকের পরিশ্রমের ধান

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে ধান কেটে আনা সম্ভব হয়নি। গভীর পানিতে তলিয়ে গেছে ধান গাছ গুলো পচে যাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে ডুব দিয়ে পানির নিচে তলিয়ে থাকা ধান যতটা সম্ভব কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা করছেন নদী তীরবর্তী বিপন্ন কৃষকরা। গত তিনদিনের টানা বৃষ্টিতে নদীর তীরবর্তী জমি গুলোতে পানিতে ডুবে গিয়েছে।
গতকাল রোববার উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের তারাপুর এলাকায় এমন দৃশ্য চোখে পড়ে। কৃষকরা জীবন বাজি রেখে পানির নিচ থেকে যে পরিমাণ ধান তুলে আনছেন, তলিয়ে থাকা ধানের পরিমাণ থেকে তা খুবই নগণ্য। কষ্টসাধ্য হওয়ায় সবার পক্ষে এটা সম্ভবও হচ্ছে না। তাদের বুক ভরা কষ্ট-হাহাকার নিয়ে নদীর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখা গেছে কৃষকদের।
তারাপুর গ্রামের মহুবর মিয়া বলেন, তিনি ছয় বিঘা জমিতে ধান এবং তিন বিঘা জমিতে ভুুট্টা রোপণ করেছিলেন। ধান-ভুট্টা পেকে কাটার উপযুক্ত হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টির পানিতে ধান গুলো ডুবে গেছে। তিনি সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ডুব দিয়ে বেশ কয়েক বস্তা ধান পানির নিচ থেকে কেটে পাড়ে তুলেছেন। আর একটু সামনে এগুতেই চোখে পড়ে একই গ্রামের জাহাঙ্গীর মিয়া নৌকায় করে ধান কেটে আনছেন তিনি বলেন, তার পাঁচ বিঘা জমির পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।
অনেক কষ্ট করে মাত্র দেড় বিঘা জমির ধান কাটতে পেরেছি। ধান ছাড়া তো আমাদের জীবিকার অন্য কোনো পথ নাই। পেটে তো কিছু দিতে হবে। তাই জীবন বাজি রেখে দম আটকিয়ে পানির নিচ থেকে ধান কেটে আনতে বাধ্য হচ্ছে।
আরও পড়ুনমাঠ ঘুরে দেখা যায়, পাকা ধান কেটে ক্ষেতেই রোদে শুকাতে দিয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু দুদিনের টানা বৃষ্টির পানিতে এখন অনেক ধান ভাসছে ক্ষেতে জমেছে হাঁটুপানি। মেঘলা আকাশের কারণে শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। ক্ষেতে পানি জমে কাটা ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে নিজেরাই ভিজা ধান নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছে। অনেকে আবার ডুবে ডুবে জমিতে এবার ধান কাটতেছে।
কেউ কেউ ধান ঘরে তুলেছেন কেউ বা তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এমন সময়ে এ দুুর্ভোগে পড়ে হতাশ উপজেলার কৃষকেরা। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাশেদুল কবির জানান, কয়েকদিনের ভারি বর্ষণের কারণে নিচু জমি গুলোতে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে এতে করে কিছু জমির ধান ডুবে গেছে আমরা সেগুলো দ্রুত কাটার ব্যবস্থা নিয়েছি। সঠিক সময়ের ভিতর ধান কাটা স¤পূর্ণ হলে তেমন ক্ষতি হবে না আশা করেন।
মন্তব্য করুন