দিনাজপুরের বিরলে মডেল কৃষিবাড়ি তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন মতিউর

বিরল (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দিনাজপুরের বিরলে মডেল কৃষিবাড়ি তৈরি করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন কৃষি পদক প্রাপ্ত প্রগতিশীল কৃষক মতিউর রহমান। তার তৈরিকৃত মডেল কৃষিবাড়ি প্রতিনিয়িত দেখতে আসছেন আশেপাশের গ্রামের কৃষকরা। তিনি এলাকায় এখন একজন মডেল কৃষক।
কৃষক মতিউর রহমান উপজেলার সদর ইউপির পুরিয়া গ্রামের মৃত কোবাদ আলীর ছেলে। প্রথাগত চাষাবাদ ছেড়ে দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের সহায়তায় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বিরলের তত্বাবধানে বাড়িটিকে তিনি একটি মডেল কৃষিবাড়ি হিসেবে গড়ে তুলেছেন।
তার মডেল কৃষিবাড়ির জমির পরিমাণ পুকুর ও পুকুরপাড়সহ প্রায় ১ একর। এখানে একইসাথে তিনি মাছ, ফল, আদা চাষসহ সবজি ও জৈবসার উৎপাদন করছেন। যা অন্য কৃষকদের জন্য ইতোমধ্যে এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।
তার বাড়ির পাশে পুকুরে মিশ্রভাবে চাষ হয়েছে কার্প জাতের মাছ- রুই, কাতলা, মৃগেল এবং তেলাপিয়া। পুকুরের ধার ঘেঁষে বাঁশ ও নেট দিয়ে তৈরি মাচায় চাষ করা হয়েছে চাল কুমড়া, লাউ, করলা, চিচিঙ্গা, বরবটিসহ বিভিন্ন সবজি।
বাড়ির আঙিনায় ও পতিত জমিতে তিনি কালিকাপুর মডেল অনুসরণ করে ৫টি বেডে ৫ ধরণের শাক-সবজি চাষ করে পারিবারিক পুষ্টি বাগান গড়ে তুলেছেন। পরিত্যক্ত ছায়াযুক্তস্থান ও পুকুরপাড়ে প্রায় ৫শ’ বস্তায় করেছেন কীটনাশক মুক্ত আদাচাষ। যেখানে প্রতিটি বস্তায় ১১ থেকে ১২ কেজি পর্যন্ত আদা উৎপাদন হচ্ছে।
আরও পড়ুনতার কৃষি বাড়িতে রয়েছে প্রচলিত ফলের গাছ যেমন- আম, পেয়ারা, লিচু, কলা, সুপারি, লেবু ও পেঁপেঁ গাছ। প্রচলিত ফল গাছের পাশাপাশি জাম্বুরা, চালতা, ড্রাগনফল, চাইনিজ কমলা, কাজু বাদাম, কাঠ বাদাম ও বারোমাসি কাঁঠাল গাছও রয়েছে এখানে। এছাড়াও গোবর, পঁচাপাতাসহ অন্যান্য জৈববর্জ্য দিয়ে ভার্মিকম্পোস্ট তৈরি করে ৩০-৪০ দিন পর পর কেঁচোসার উত্তোলন করে রাসায়নিক নির্ভরতা কমিয়ে এনে জৈবসার ব্যবহার করেন তিনি।
কৃষক মতিউর রহমান জানান, তার এই মডেল কৃষিবাড়ি থেকে নিয়মিত ফল, ফসল ও সবজি ও জৈবসার সংগ্রহ করে নিজের ও পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে দারুণভাবে লাভবান হচ্ছেন তিনি।
এ ব্যাপারে বিরল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোস্তফা হাসান ইমাম জানান, মডেল কৃষক মতিউর রহমান প্রমাণ করেছেন অল্প জায়গায় পরিকল্পিত ও বৈজ্ঞানিকভাবে কৃষিকাজ করলে স্বনির্ভর হওয়া যায়। তার মতো কৃষকরাই দেশের কৃষিব্যবস্থাকে আরও টেকসই ও লাভজনক করে তুলছেন।
মন্তব্য করুন