মুশফিকের সেঞ্চুরি, দেখিয়ে দিলেন তিনি ফুরিয়ে যাননি

ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে হিসেব করলে খুব বেশিদিনের বিরতি নয়। ইতিহাস জানাচ্ছে, ঠিক ১০ মাস আগে গত বছর আগস্টে রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৯১ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছিলেন মুশফিকুর রহিম।
তারপর থেকে হঠাৎ রানখরায় ভোগা। দেশের হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে অন্যতম সফল ও অভিজ্ঞ এই ব্যাটারের ব্যাট থেকে আর বড় ইনিংস বেরিয়ে আসেনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে ওই ‘বিগ হান্ড্রেডের’ পরের ১৪ ইনিংসে ১৩ বার ব্যাট করে (৩, ২২, ৮, ১৩, ১১, ৩৭, ১১, ৩৩, ০, ২, ৪, ৪, ৪০) মুশফিকের সাকুল্যে সংগ্রহ ছিল মাত্র ১৮৮ রান। যার গড় ছিল ১৫.৬৬।
বিশেষ করে শেষ ৪ ইনিংসে দেশের এ সিনিয়র ক্রিকেটারের ব্যাট আর হাসেনি। ওই ২ টেস্টে ৩ বার দুই অংকেই (২, ৪, ৪) পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। মনে হচ্ছিল, তার ক্যারিয়ারের সূর্য বুঝি ডুবুডুবু।
সাম্প্রতিক সময়ে টি-টোয়েন্টি আর ওয়ানডে থেকে সরে দাঁড়ানো এ অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের সামনে আছে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলার হাতছানি। কিন্তু অফফর্মের কারণে তার পক্ষে বাকি ৩ টেস্ট (এটা মুশফিকের ৯৭ নম্বর টেস্ট) খেলা সম্ভব হবে কিনা, এমন সংশয়ও দেখা দিয়েছিল। কিন্তু কঠোর পরিশ্রম, সাধনা আর আত্মনিবেদন দিয়ে বয়সকে অতিক্রম করে মুশফিক দেখিয়ে দিলেন, এখনো বড় ইনিংস খেলার সামর্থ্য আছে তার।
অবশেষে আবার হাসলো মুশফিকুর রহিমের ব্যাট। তুলে নিলেন ক্যারিয়ারের ১২তম টেস্ট সেঞ্চুরি। আজ ১৭ জুন গল ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে আবার সেঞ্চুরির দেখা পেলেন মুশফিক।
আরও পড়ুনটেস্ট ভেন্যু হিসেবে টিম বাংলাদেশের জন্য মিঠে কড়া গল। এই মাঠে নিজেদের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে ২০১৩ সালের মার্চে শ্রীলঙ্কার সাথে সমান তালে লড়ে ড্র করে করেছিল বাংলাদেশ। টেস্টে লঙ্কানদের সাথে সেটাই ছিল টাইগারদের প্রথম নিজেদের শক্তি ও সামর্থ্যে বলীয়ান হয়ে খেলে ম্যাচ ড্র করা।
কুমার সাঙ্গাকারা (১৪২), লাহিরু থিরিমান্নে (১৫৫) আর দিনেশ চান্দিমালের (১১৬) তিন সেঞ্চুরিতে লঙ্কানদের প্রথম ইনিংসে তোলা ৫৭০ রানের জবাবে ৬৩৮ রান করে ম্যাচ ড্র করে ফেলেছিল বাংলাদেশ। সে অসাধ্য সাধন হয়েছিল মুশফিকুর রহিমের ডাবল সেঞ্চুরি (২০০), মোহাম্মদ আশরাফুলের ১৯০, নাসির হোসেনের ১০০ রানের ইনিংসে ভর করে।
আবার ৪ বছর পর সেই গলে লঙ্কানদের কাছে ২৫৯ রানের বিরাট পরাজয় ঘটেছিল। কুশল মেন্ডিসের ১৯৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংসের সাথে বাঁহাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথের (৬/৫৯) জাদুকরী স্পিন বোলিং যুক্ত হলে বাংলাদেশ হারে বড় ব্যবধানে। অবশ্য সেই ম্যাচেও মুশফিকের ব্যাটে ছিল প্রতিরোধের চেষ্টা।
প্রথম ইনিংসে ৮৫ করা মুশফিক দ্বিতীয়বার করেছিলেন ৩৪ রান। এবার সেই গলে হাসলো তার ব্যাট। সাফল্যের স্বর্গে গিয়ে যেন আবার নিজেকে ফিরে পেলেন এ অভিজ্ঞ ব্যাটার।
মন্তব্য করুন