বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে পাটের বাম্পার ফলন, দাম ভালো পেয়ে খুশি কৃষক

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি : সারিয়াকান্দিতে আগাম বপণ করা পাট কর্তন শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে ভালো দাম পেয়ে লাভবান কৃষকরা। পাটখড়ি বিক্রি করেও হচ্ছে বাড়তি আয়।
সারিয়াকান্দির মাটিতে সোনালী আঁশ খ্যাত পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ উপজেলার ওপর দিয়ে যমুনা, বাঙালি এবং সুখদহ নদী বয়ে যাওয়ার কারণে উপজেলার কৃষি জমি বেলে-দোঁআশ মাটি। আর এই মাটিতেই পাটের বাম্পার ফলন হয়। প্রতি বছরের মতো এবছরও কৃষকরা আগাম চরে পাটচাষ করেছেন। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং আগাম বন্যা না হওয়ায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। পাটগাছগুলো ১০ ফুট থেকে শুরু করে কোথাও ১৩ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়েছে। তাই পরিপক্ব পাটগাছ এখন কাটছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, দেশীয় উফশী জাতের পাটসহ এবছর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নানা জাতের পাটচাষ হয়েছে। গত বছর এ উপজেলায় তিন হাজার ৬৫০ হেক্টর পাট হয়। ফলন হয় প্রতি হেক্টরে ২.৮ মেট্রিকটন। এবছর পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন হাজার ৬৫০ হেক্টর। কিন্তু লক্ষমাত্রা পূরণ না হয়ে তিন হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে পাটচাষ হয়েছে।
গত মৌসুমে কৃষকরা ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা মণ দরে পাট বাজারে বিক্রি করেন। এবছর পাটের বাজারদর বেশ চড়া এবং বাজারে প্রতিমণ পাট ৫ হাজার টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। পাট চাষের সবচেয়ে ভালো গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো পাটখড়ি। কৃষকেরা পাটের আঁশ বিক্রির পাশাপাশি পাটখড়ি বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকা আয় করেন এবং তাদের উৎপাদিত পাটখড়ি তারা সারাবছর জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করেন।
আরও পড়ুনসদর ইউনিয়নের পারতিত পরল গ্রামের কৃষক লেবু আকন্দ জানান, গত বছর তিনি তার ৬ বিঘা জমিতে ৩০ মণ পাট পেয়েছেন। আগাম বন্যা হওয়ায় তিনি ভালো ফলন পাননি। কিন্তু এবছর বন্যার আগেই তার ৬ বিঘা জমির পাট পরিপক্ব হয়েছে। গাছগুলো ১৩ ফুটের মতো লম্বা হয়েছে। তাই তিনি তার পাট কর্তন শুরু করেছেন।
প্রতি বিঘা জমিতে তিনি ৮ থেকে ১০ মণ পাট পাবেন বলে আশা করছেন। প্রতি বিঘা জমিতে তার মাত্র ৩ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। বিক্রির আশা করছেন প্রতি বিঘায় ৪৫ হাজার টাকা। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তিনি ভালো ফলন পেয়েছেন। বাজারে ৫ হাজার টাকা মণ দরে পাট বিক্রি হচ্ছে বলে তার মুখে হাসি ফুটেছে। পাটখড়ি বিক্রি করেও তিনি প্রতিবছর বাড়তি আয় ঘরে তুলছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, কৃষকদের পাটচাষ করতে তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ এবং সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছর পাটের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। বাজারে পাটের ভালো দাম থাকায় কৃষকরা পাট বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন।
মন্তব্য করুন