গাইবান্ধার সাঘাটায় সড়কের উন্নয়ন কাজ ফেলে রেখে ঠিকাদার ৬ বছর ধরে লাপাত্তা

সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া চৌ-মাথা হতে কচুয়াহাট এলাকার সাঘাটা-গাইবান্ধা সড়ক পর্যন্ত সড়কের বেশির ভাগ উন্নয়ন কাজ ফেলে রেখে প্রায় ৬ বছর পূর্বে লাপাত্তা হয়েছেন ঠিকাদার। দীর্ঘদিন ফেলে রাখা সড়কে প্রতিবর্ষা মৌসুমের প্রবল বৃষ্টি এবং যানবাহনের চাকার ঘর্ষণে রোলিং করা খোয়া উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে প্রকল্পের এখনও ৭৫/৮০ ভাগ কাজ বাকি রেখে হঠাৎ করে চলে গেছেন, আর আসেননি। এদিকে বৃষ্টিতে ধসে যাওয়া সড়কটি মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত এ সড়কে চলাচল করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে স্কুলগামী শিশু শিক্ষার্থী সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার অসংখ্য মানুষ।
দীর্ঘদিন ধরে সড়কের এমন অবস্থা চলতে থাকায় ভুক্তভোগী মানুষের মধ্যে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, সাঘাটা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) আওতায় বিগত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রুরাল কানেকটিভিটি ইমপ্ররুভমেন্ট প্রকল্পের আওতায় বোনারপাড়া জিসি-কচুয়াহাট পর্যন্ত ৬ হাজার ৪শ’ মিটার সড়কের প্রশস্তকরণসহ উন্নয়ন কাজের টেন্ডার হয়। সড়কটি প্রশস্তকরণ, সড়কের দু’পাশের আবাদি জমির পানি নিষ্কাশনের জন্য ৪টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ, ৪টি ইউড্রেন ও গাইডওয়াল নির্মাণ সহ কার্পেটিংয়ের জন্য ৫ কোটি ৬৫লাখ ৭৩ হাজার ৭৩৬ টাকা বরাদ্দ হয়।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ পায় ঢাকার ধানমন্ডির মেসার্স এইচটিবিএল-সিসিসিজেভি নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বিগত ২০২১ সালের জুন মাসের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করার কথা ছিল। সে মোতাবেক ২০১৯ সালের ১৮ অক্টোবর কাজ শুরু করে ছিলেন ঠিকাদার।
আরও পড়ুনএ সড়কে চলাচলকারী বাঁশহাটা এলাকার ভ্যানচালক আসাদুল জানান, সড়কের খোয়ার ওপর চলতে মানুষের যেমন কষ্ট হচ্ছে, তেমনি ভ্যানের টায়ার খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হচ্ছে। বোনারপাড়া কিন্ডারগার্টেন স্কুুলের ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী অনিক, তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী সিয়ামসহ অনেকেই সড়কে যাতায়াতে তাদের কষ্টের কথা জানায়। বোনারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ইব্র্রাহীম হোসেন বলেন, এখন সড়কটি এলাকার মানুষের গলার কাঁটা। সড়কে যানবাহন চলাচলে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করলেও জনসাধারণের এসব দুঃখ-কষ্ট দেখার কেউ নেই।
মুক্তিনগর ইউপি চেয়ারম্যান আহসান হাবিব লায়ন বলেন, সড়কে জনদুর্ভোগ দেখে অনেকবার এলজিইডি অফিসে গিয়ে অবশিষ্ট কাজ করার কথা বলেছি, কিন্তু কাজ হয়নি। এবিষয়ে ওই ঠিকাদারের সাথে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। বর্তমানে সড়কটির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর গাইবান্ধা জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরীকে মুঠোফোনে কল করলে সাংবাদিকের পরিচয় পেয়ে তিনি ফোন কেটে দেন।
মন্তব্য করুন