স্বামীকে ফাঁসাতে ২ শিশুকে পুকুরে ফেলে হত্যা

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে পুকুরে ফেলে যমজ দুই কন্যাশিশুকে হত্যা করেছেন শিশুদের মা শান্তা বেগম। পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীকে ফাঁসাতে শিশু দুটিকে হত্যা করেন তিনি।
আজ বুধবার (৯ জুলাই) বিকেলে মুন্সিগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশিকুর রহমানের কাছে শান্তা বেগম স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. ফিরোজ কবির আজ সন্ধ্যায় বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত সোমবার শিশু দুটির লাশ উদ্ধারের পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শান্তা ও সোহাগকে আটক করে শ্রীনগর থানা-পুলিশ। পরে তাঁদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে শান্তা তাঁদের দুই শিশুসন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
ফিরোজ কবির জানান, দুই বছর আগে সোহাগের সঙ্গে শান্তার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। এর পর থেকে তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কলহ চলতে থাকে। সংসারে চলছিল অভাব-অনটন। এর মধ্যে পাঁচ মাস আগে লামিয়া ও সামিয়া জন্মগ্রহণ করে। শিশুদের জন্মের পর সংসারে অভাব আরও প্রকট হয়। অভাব-অনটনের কারণে তাঁদের কলহ আরও বাড়ে। নিয়মিত ঝগড়া ও মারামারির ঘটনা ঘটতে থাকে।
আরও পড়ুনগত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শান্তা তাঁর স্বামীকে মোবাইল ফোনে বাচ্চাদের দুধ, ওষুধসহ কিছু খাবার আনতে বলেন। সোহাগ বিষয়টি নিয়ে শান্তার সঙ্গে ফোনে রাগারাগি করেন। এতে শান্তা ক্ষিপ্ত হন। সেদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় লামিয়া ও সামিয়াকে ঘরের পাশের পুকুরের পানিতে ফেলে হত্যা করেন। স্বামীকে ফাঁসাতে ওই দিন পরিবারের অন্য সদস্যদের ও নিকটাত্মীয় স্বজনসহ এলাকার লোকজনকে জানান, সোহাগ তাঁর মেয়েদের পানিতে ফেলে হত্যা করেছেন।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, সামান্য পারিবারিক কলহের জেরের কারণে শান্তা তাঁর শিশু দুটিকে হত্যা করেছেন। লাশ ঘুম করার চেষ্টা করেছেন। স্বামীকে ফাঁসাতে চেষ্টা করেন। তাঁকে আদালত থেকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে পুকুর থেকে যমজ শিশু দুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে শিশু দুটির চাচা আল আমিন বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। হত্যা মামলায় শান্তা বেগমকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ বিকেলে আদালতে পাঠায় পুলিশ। জবানবন্দি নেওয়া শেষে তাঁকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন