লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে, আতঙ্কে চরের মানুষ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি : ভারতে থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি দ্রুত বাড়তে শুরু করেছে। গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। পরদিন গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তার পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়েছে নদী সংলগ্ন ৮৯টি চরের মানুষের মাঝে।
পানি যেভাবে হু হু করে বাড়ছে তাতে যে কোন সময় বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় অবস্থিত দেশের সবচেয়ে বড় সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে ৪৪ টি জলকপাট খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তিস্তার চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভারতের উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী ও কুড়িগ্রাম জেলার নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চল সাময়িকভাবে প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজে এলাকার বাসিন্দা লোকমান আলী, হাসমত আলী, রফিকুলসহ অনেকেই বলেন, ‘আমরা নদীপাড়ের মানুষ সব সময় আতঙ্কে থাকি। বন্যা, খরা নদী ভাঙনের সাথে যুদ্ধ করে আমাদের জীবন অতিবাহিত হয়।
আরও পড়ুনবিশেষ করে ভারতের উজানে যে গেট রয়েছে তার নাম গজলডোবা, এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। খরা মৌসুমে গেটটি বন্ধ রাখা হয় আর বর্ষা এলেই থেমে থেমে পানি ছেড়ে দিয়ে আমাদেরকে ভাসিয়ে দেয় ভারত। কারণ বৃষ্টির পানিতে বন্যা হয় না,- বন্যা হয় ভারতের উজানের পানিতে।
দেশের সবচেয়ে বড় সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজ কন্ট্রোল রুম ইনচার্জ নুরুল ইসলাম জানান, উজানের ঢলে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। তিস্তার পানি পরদিন গতকাল শুক্রবার ৬টায় বিপদসীমার ২৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। পানি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারেজের ৪৪ গেট খুলে রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে সতর্কসীমায় (বিপদসীমা) প্রবাহিত হতে পারে। এর ফলে লালমনিরহাট, রংপুর, নীলফামারী ও কুড়িগ্রাম জেলার নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চল সাময়িকভাবে প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ বিষয় নিয়ে কথা হলে তিস্তা ব্যারেজ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, বন্যা আশঙ্কায় আমরা সতর্কতামূলক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।
মন্তব্য করুন