বগুড়ার শাজাহানপুরে দু’পক্ষের দ্বন্দ্বে বসছেনা ‘বসন বুড়ি মেলা’, তবে কামারপাড়ায় বসবে বড়হাট

শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : দু’পক্ষের দ্বন্দ্বে এবার বসছে না বগুড়ার শাজাহানপুরের ২শ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী বালিয়াদিঘী ‘বসন বুড়ি মেলা’। মহিষের মাংসের জন্য বিখ্যাত এ মেলা প্রতি বাংলা সনের শ্রাবণ মাসের প্রথম রোববার অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। তবে মেলার আদলে কামারপাড়ায় রোববার বসবে বড়হাট।
এবছর মেলাকে ঘিরে স্থানীয় দু’টি পক্ষ বগুড়া জেলা প্রশাসকের কাছে পৃথক পৃথক আবেদন করেন। একটি পক্ষ মেলা অনুষ্ঠানের পক্ষে আবেদন করেন। তারা উল্লেখ করেন, ‘বসন বুড়ি মেলা’ কে ঘিরে বড়পাথারসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ মেতে উঠে উৎসব আনন্দে। নাইওরিতে ভরে যায় প্রতিটি বাড়ি। তাই বছর জুড়ে মেলার প্রতীক্ষায় থাকে এলাকাবাসি।
এমতাবস্থায় গ্রামীণ সংস্কৃতির ঐতিহ্য রক্ষায় ‘বসন বুড়ি মেলা’ অনুষ্ঠানের অনুমতি দানে জেলা প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করা হয়েছিল। অপরদিকে মেলা আয়োজন না করতে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছিলেন বড়পাথার বালিয়াদিঘী যৌথ কেন্দ্রিয় ঈদগাহ মাঠের সভাপতি ও চোপীনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মোজাফ্ফর রহমান।
তিনি উল্লেখ করেন, স্থানীয় মুসল্লিদের উদ্যোগে প্রায় ১শ’ ১০ বছর আগে বালিয়াদিঘীতে যৌথ কেন্দ্রিয় ঈদগাহ্ প্রতিষ্ঠা হয়। উক্ত ঈদগাহে বড়পাথারসহ আশপাশের ৫ গ্রামের ৩০-৩৫ হাজার মুসুল্লি প্রতি ঈদে এক সাথে নামাজ আদায় করেন। তা সত্ত্বেও কুসংস্কারে আচ্ছন্ন একটি মহল বালিয়াদিঘীতে ‘বসন বুড়ি মেলা’র আয়োজন করে আসছিল। কুসংস্কার বন্ধ করার লক্ষ্যে ২০০৩ সালে স্থানীয় মুসল্লিদের উদ্যোগে বালিয়াদিঘীতে ‘মাদরাসাতুল হাদীছ ও ইয়াতিমখানা’ প্রতিষ্ঠা করা হয়।
আরও পড়ুনএরপরও মেলা আয়োজন করা হলে তা মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানবে এবং এলাকাবাসির মাঝে ক্ষোভ ও বিশৃংখলার সৃষ্টি করবে। কামারপাড়া বাজার এলাকার ব্যবসায়ী রমিজ উদ্দিন বাবলু জানান, ২০০৭ সালে তত্বাবধায়ক সরকারের সময় বালিয়াদিঘী বসন বুড়ি মেলা বন্ধ করে দেওয়া হলে গ্রামীণ ঐতিহ্য রক্ষায় কামারপাড়ায় বসেছিল মেলার আদলে বড়হাট। তারপর থেকে প্রতি বছর কামারপাড়ায় বড়হাট বসে।
এবছর দু’পক্ষের আবেদনের বিষয়টি তদন্ত করে মেলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে বলে জানিয়ে ছিলেন বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা। তবে আজ শনিবার (১৯ জুলাই) পর্যন্ত মেলার অনুমতির বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে কোন সিদ্ধান্ত পাননি সংশ্লিষ্টরা।
মন্তব্য করুন