ধুনট-শেরপুর সড়ক নির্মাণের বছর না যেতেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং

ধুনট (বগুড়া) প্রতিনিধি : ঝকঝকে নতুন পিচঢালা রাস্তা। অথচ নির্মাণের বছর না পেরোতেই পিচ পাথরের মিশ্রন আলাদা হয়ে উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। উঁকি দিচ্ছে হলুদ রংয়ের ইট। বগুড়ার ধুনট-শেরপুর রাস্তার এমন চিত্র দেখেই বোঝা যায় নিম্নমানের নির্মান কাজ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার শেরপুর থেকে ধুনট হয়ে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত আঞ্চলিক সড়ক এটি। প্রতিদিন বগুড়া, গাইবান্ধা, রংপুরসহ উত্তরের বিভিন্ন জেলা থেকে এই সড়ক হয়ে সিরাজগঞ্জে যানবাহন চলাচল করে। আবার মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লে বা যানজট হলে উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাসসহ বিভিন্ন পরিবহন এই সড়ক ব্যবহার করে থাকে।
গুরুত্ব বিবেচনায় ২০১৯ সালে প্রায় ১ হাজার ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটির ৭৬ কিলোমিটার প্রশস্ত করার কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। যার মধ্যে ৪ কিলোমিটার সড়ক উন্নীত করা হবে চার লেনে। সিরাজগঞ্জ অংশে ৯টি ও বগুড়া অংশে ২টি প্যাকেজে চলা কাজের মধ্যে এই সড়কে ৩টি ব্রিজ, ৩৯টি কালভার্ট, ১৬ কিলোমিটার ড্রেন রয়েছে। এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে ৩০ জুন।
তবে বগুড়া অংশে ২টি প্যাকেজের মধ্যে ১টির কাজ শেষে হয়েছে এবং অন্যটির কাজ চলমান আছে। এরমধ্যে ধুনট থেকে শেরপুর পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটারের মধ্যে ১১ কিলোমিটার অংশের কাজ প্রায় এক বছর আগে শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট ৩ কিলোমিটারের কাজ ভূমি অধিগ্রহন জটিলতা কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে।
তবে যে অংশে শেষ হয়েছে সেই রাস্তার কাজে নিম্নমানের ইটের খোয়া, পাথর আর বিটুমিন ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। যার কারণে নির্মানের বছর না যেতেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং ও বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হচ্ছে।
আরও পড়ুনসরেজমিনে দেখা যায়, গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির বেশিরভাগ অংশে বিটুমিন উঠে গর্তের সৃষ্ট হয়েছে। সড়কের বিটুমিন ধুয়ে-মুছে গিয়ে নুড়িপাথর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। এর মধ্য দিয়ে দূর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীবাহী যানবাহনের পাশাপাশি পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লরি হেলেদুলে চলছে।
আঞ্চলিক এই সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বিপর্যস্ত ছিল। আঁকা-বাঁকা সরু সড়কটিতে দুর্ঘটনা ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী। আগে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলো থেকে পরিবহনগুলো সিরাজগঞ্জ রোড হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করেছে। এতে সময় অনেক বেশি লাগতো।
এছাড়া এই সড়কে সব সময় যানজট লেগে থাকে। বিশ্বরোডের যানজট এড়াতে বর্তমানে পরিবহনগুলো শেরপুর অংশ থেকে ধুনট-কাজিপুর আঞ্চলিক সড়ক হয়ে সিরাজগঞ্জ বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে কম সময়ে সহজেই ঢাকা পৌঁছতে পারছে।
বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল মুনসুর আহমেদ বলেন, সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে গর্ত হওয়ার বিষয়টি ঠিকাদারকে জানানো হয়েছে। কিন্ত বৃষ্টির কারণে ঠিকাদার কাজ করতে পারছেন না। তবে বৃষ্টির মৌসুম শেষ হলেই কাজ শুরু করবেন। আর এই প্যাকেজের ৩ কিলোমিটার সড়কের কাজ ভূমি অধিগ্রহন জটিলতার কারনে বন্ধ রয়েছে। তবে দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে।
মন্তব্য করুন