আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস : সংখ্যা বাড়লেও নানা সংকটে সুন্দরবনের বাঘ

নানা সংকটে রয়েছে বাংলাদেশের রয়েল বেঙ্গল টাইগার। প্রাকৃতিক সমস্যার চেয়ে বেশি ঝুঁকিতে ফেলছে মানুষের তৈরি সমস্যা। ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, জলবায়ু পরিবর্তন ও বন ধ্বংস করে শিল্প কারখানার ভয়ানক দূষণে নষ্ট হচ্ছে টিকে থাকার পরিবেশ। সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও হরিণের শিকার বাড়ায় তৈরি হয়েছে খাদ্য সংকট।
রয়েল বেঙ্গল টাইগার; সুন্দরবনের অন্যতম আকর্ষণ। ধরে রাখছে বনের ভারসাম্য, রক্ষা করছে প্রাকৃতিক সম্পদ। তবে বিশ্বজুড়ে দিনের পর দিন কমছে বাঘের বিভিন্ন প্রজাতির সংখ্যা। সব প্রজাতির বাঘকে অস্তিত্ব সংকট থেকে কীভাবে রক্ষা করা যায়, সেই পদক্ষেপ নেয়ার জন্যই পালন করা হয় আন্তর্জাতিক বাঘ দিবস। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হলেও বর্তমানে বাঘের সবচেয়ে বড় সমস্যা চোরাশিকার ও আবাসন ধ্বংস। গত ১০০ বছরে বাঘের আবাসস্থল নষ্ট হয়েছে ৯৫ শতাংশ। বনদস্যুদের দাপট, অভয়ারণ্যে অবাধ যাতায়াত, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারণে গত কয়েক দশকে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা কমছিল প্রতিনিয়ত।
তবে আশার কথা, সবশেষ জরিপে সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার ১১টি বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ১২৫টিতে। সাধারণ মানুষ বলছেন, বাঘ সংরক্ষণ করতে গেলে পর্যাপ্ত খাবারও প্রয়োজন। পাশাপাশি বাঘ শিকার বন্ধ করতে হবে। বাড়াতে হবে সচেতনতা। পূর্ব সুন্দরবনের চাদঁপাই রেঞ্জ, শরণখোলা ও পশ্চিম সুন্দরবনে সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্তদের অপতৎপরতায় বেড়েই চলছে হরিণ শিকার। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় হরিণের মাংস ও চামড়া বিক্রিতে জড়িত বন তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। সাধারণ মানুষ বলছেন, হরিণের মাংস খাওয়া ও মাংস বেচাকেনার ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। যারা হরিণ শিকার করছে তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এর সুরক্ষা, প্রজনন সক্ষমতা বৃদ্ধি ও বাঘের শিকার প্রাণীর সংখ্যা বৃদ্ধিতেও কাজ করতে হবে। সেই সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে জনগণকে। জীববৈচিত্র রক্ষায় বাঘ টিকিয়ে রাখতে নিশ্চিত করতে হবে অনুকূল পরিবেশ। তাই বনের বাঘের জন্য প্রয়োজন নিরাপদ আবাসস্থল, বেঁচে থাকার মতো বন।
মন্তব্য করুন