ভিডিও বুধবার, ০৬ আগস্ট ২০২৫

ভারতে হড়কা বানে ভেসে গেলো গ্রাম, নিখোঁজ ৫০

ছবি : সংগৃহীত,ভারতে হড়কা বানে ভেসে গেলো গ্রাম, নিখোঁজ ৫০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলার উচ্চ পার্বত্য অঞ্চল ধারালি ও তার আশপাশের গ্রামগুলোতে মঙ্গলবার ভোররাতে মেঘভাঙা বৃষ্টির ফলে ভয়াবহ ফ্ল্যাশ ফ্লাড বা হড়কা বান দেখা দেয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রবল পানির তোড়ে বহু ঘরবাড়ি ভেসে গেছে এবং অন্তত ৫০ জন মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।

সংবাদ সংস্থা পিটিআই গ্রামবাসীদের উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, বহু বাড়িঘর তো বটেই, গ্রামে থাকা অন্তত ২০-২৫টি হোটেল এবং হোমস্টে ভেসে গিয়েছে। 

ধ্বংসস্তূপের নীচে অন্তত ১০-১২ জন আটকে পড়েছেন বলে আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসীরা। গ্রামের নিকটবর্তী ক্ষীরগঙ্গা নদীর উচ্চ অববাহিকায় মেঘ ভাঙা বৃষ্টির ঘটনা ঘটে। তার পরেই উঁচু থেকে দু’কূল ছাপিয়ে গ্রামের দিকে নামতে শুরু করে ফুঁসতে থাকে ওই নদী।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, উঁচু পাহাড় থেকে নীচে থাকা গ্রামে কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়ছে নদীর পানি। তার পর সব কিছু ভাসিয়ে আরও নীচের দিকে নামছে সেই পানি। 

ইতিমধ্যেই এই দুর্যোগে চার জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না প্রায় ৫০ জনের। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজে জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি হাত লাগিয়েছেন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যেরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশ (আইটিবিপি)-এর ১৬ জন সদস্য।

হিমালয়ের কোলে থাকা উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে কয়েক দিন ধরেই বৃষ্টি হচ্ছে। হরিদ্বারে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে গঙ্গা এবং কালী নদী। নাগাড়ে ভারী বর্ষণের জেরে উত্তরাখণ্ডের রাজধানী দেহরাদূনে সোমবার সমস্ত স্কুল এবং অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ রাখতে হয়। এই পরিস্থিতিতে হড়পা বানের আশঙ্কা ছিলই। অল্প সময়ে অনেক পরিমাণে (মেঘভাঙা বৃষ্টি) জেরে পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হয় উত্তরকাশী জেলার ওই গ্রামে। উত্তরকাশী জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ভারী বৃষ্টির জেরে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। বহু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা জলের তলায়। চার ধামের অন্যতম গঙ্গোত্রীর সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।

ভয়াবহ ঘটনার ভিডিও ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, পাহাড় থেকে নেমে আসা প্রচণ্ড জলের স্রোত ধেয়ে আসছে ধারালি গ্রামের দিকে এবং একের পর এক বাড়ি মুহূর্তেই ভেসে যাচ্ছে। দূর থেকে ভিডিও ধারণ করা মানুষদের চিৎকার করে গ্রামবাসীদের পালাতে বলতে শোনা গেছে।

আরও পড়ুন

ঘটনার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে জানান, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। ঘটনাস্থলে ৩টি আইটিবিপি দল পাঠানো হয়েছে এবং ৪টি এনডিআরএফ টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজে যোগ দেবে।"

এদিকে সেনাবাহিনীও উদ্ধার অভিযানে নেমেছে। হরসিলের নিকটবর্তী ধারালি এলাকায় পৌঁছে সেনাবাহিনী ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে কাজ শুরু করেছে। সেনাবাহিনীর সূর্য কমান্ড এক বিবৃতিতে জানায়, ধারালি গ্রামে খীর গড় এলাকায় এক বিশাল কাদার স্রোত নামে, যা হঠাৎ করে পানির সঙ্গে প্রবল ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।

স্থানীয়দের মতে, খীর গঙ্গা নদীর উজানে মেঘভাঙা বৃষ্টির ফলেই এই ভয়ঙ্কর বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

বর্তমানে পুরো এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। উদ্ধার কাজ চলছে জোরকদমে, তবে দুর্গম পার্বত্য এলাকা হওয়ায় বিপর্যয় মোকাবেলায় বেগ পেতে হচ্ছে প্রশাসনকে।

সূত্র: এনডিটিভি

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রংপুরে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা

লালমনিরহাটের পাটগ্রামে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন কারাদন্ডাদেশ

বগুড়ায় কিশোরীকে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ প্রধান আসামি গ্রেফতার

বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালন

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় পুলিশের অভিযানে ট্যাপেন্টাডলসহ আটক ২

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বগুড়ায় জামায়াতের গণমিছিল