ভিডিও বুধবার, ০৬ আগস্ট ২০২৫

২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারতের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির হুমকি দিলেন ট্রাম্প

২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারতের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির হুমকি দিলেন ট্রাম্প, ছবি: সংগৃহীত।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতীয় পণ্যের ওপর আবারও ২৫ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধির হুমকি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সিদ্ধান্ত পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকর হতে পারে বলে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) এক সাক্ষাৎকারে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, তারা রাশিয়ার যুদ্ধ তৎপরতায় রসদ জুগিয়েই যাচ্ছে। তারা এটা অব্যাহত রাখলে আমি খুব একটা সন্তুষ্ট হব না।ভারতে বিনা শুল্কে মার্কিন পণ্য আমদানির পালটা প্রস্তাব যথেষ্ট নয় মন্তব্য করে তিনি অভিযোগ করেন, ইউক্রেন যুদ্ধের জ্বালানি যোগাচ্ছে ভারত।ট্রাম্প বলেন, ভারত এতদিন চড়া শুল্ক জারি করে রেখেছিল। তারা এখন বিনা শুল্কে আমাদের প্রবেশাধিকার দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু এটা যথেষ্ট নয়। কারণ তারা জ্বালানি তেলের বিষয়টি যেভাবে সামাল দিচ্ছে, সেটা ভালো নয়।

গত ৩১ জুলাই থেকে রাশিয়ার জ্বালানি তেল ক্রয় নিয়ে নয়াদিল্লির ওপর চড়াও হওয়া শুরু করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ভারতীয় পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্কের পাশাপাশি বিভিন্ন রকম জরিমানার হুমকি দেন তিনি।

তবে মার্কিন হুমকির বিপরীতে ভারতীয় এক কর্মকর্তা যুক্তি দিয়েছেন, তারা রাশিয়া থেকে তেল কিনছে বলেই অন্যান্য রফতানিকারকদের ওপর বাড়তি চাপ পড়ছে না, যা তেলের বৈশ্বিক মূল্য স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, আমরা রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করলে (বাজারে) নতুন ব্যারেল আনবে কে আর হুড়হুড় করে দাম বেড়ে যাওয়াই বা ঠেকাবে কীভাবে? আমরা ২০২২ সালের মতো (ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর) ব্যারেলপ্রতি ১৩৭ ডলারে চড়ে যাওয়ার পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না। 

বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল আমদানিকারক ও ভোক্তা হচ্ছে ভারত। রাশিয়া থেকে দেশটি তাদের চাহিদার এক তৃতীয়াংশ তেল আমদানি করে।

গতকাল সোমবার, নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালেও ট্রাম্প বলেছিলেন, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ না করলে ভারতের ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করা হবে।

সেদিনই রাশিয়ার তেল ক্রয়ের জন্য এককভাবে ভারতকে কাঠগড়ায় দাড় করানো অন্যায় মন্তব্য করে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে বলা হয়, ইউক্রেনের যুদ্ধ সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) মস্কোর সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বহাল রেখেছে।

তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, গত বছর রেকর্ড পরিমাণ এক কোটি ৬৫ লাখ মেট্রিক টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি)  আমদানিসহ প্রায় সাত হাজার আটশ কোটি ডলারের বাণিজ্য করেছে ইইউ।

আরও পড়ুন

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাশিয়া থেকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড, প্যালেডিয়াম, সার ও বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ আমদানি চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

তবে এসব দাবির পক্ষে কোনও সূত্র ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়নি।

ভারতের প্রতিক্রিয়ার জবাবে নয়াদিল্লিস্থ মার্কিন দূতাবাস এবং ইইউ প্রতিনিধিদের তরফ থেকে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রার আগ্রাসনের পর থেকে রাশিয়ার সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ব্যাপকভাবে সীমিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ। অথচ ২০২১ সালে রাশিয়া ছিল ইইউয়ের পঞ্চম বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার।

রয়টার্সের তথ্য অনুসারে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ভারত প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ১৭ লাখ ব্যারেল রুশ তেল আমদানি করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১ শতাংশ বেশি।

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ভারতকে রাশিয়া থেকে দূরে থাকার জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর চাপের মুখে পড়তে হয়েছে। কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার কারণে এ বিষয়ে বারবার অনীহা জানিয়ে এসেছে নয়াদিল্লি।

 

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সরকার হতাহতদের প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয়ে ব্যর্থ : এনসিপি

ব্যাংকিংখাতে যে লুটপাট হয়েছে, পৃথিবীর কোন দেশে তা হয়নি : অর্থ উপদেষ্টা

পরবর্তী ম্যাচে মাঠে নামছেন না মেসি! দ্রুত ফেরার আশা কোচের

গাজায় আরও ৮৩ ফিলিস্তিনিকে হত্যা

ব্রাজিলের হয়ে খেলতে প্রস্তুত নেইমার

নেতানিয়াহুর গাজা দখলের পরিকল্পনায় হস্তক্ষেপ করবেন না যুক্তরাষ্ট্র : ট্রাম্প