বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উদযাপন

বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে (৫ আগস্ট ২০২৫) যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে “জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস”। এ উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ছিল প্রাণবন্ত। আয়োজনের মধ্যে ছিল গ্রাফিতি অঙ্কন, আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা, স্মৃতিচারণ, শহীদ পরিবারের বক্তব্য, পুরস্কার বিতরণ, তথ্যচিত্র প্রদর্শনী এবং মঞ্চ নাটক।
অনুষ্ঠানের সূচনা হয় সকাল ১১টায় গ্রাফিতি ও আলোকচিত্র প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুরুতে জাতীয় সংগীত বাজানো হয় এবং এক মিনিট নিরবতা পালনের মাধ্যমে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. খাদেমুল ইসলাম মোল্যা। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মাননীয় সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। উপস্থিত ছিলেন জুলাই শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. ফয়জার রহমান, নির্বাহী পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. শামীম আহসান পারভেজ, বিভিন্ন স্কুলের ডীন, বিভাগীয় প্রধান, কো-অর্ডিনেটর, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে দুইজন শিক্ষার্থী জুলাই আন্দোলনের উপর স্মৃতিচারণ করেন। বক্তব্য রাখেন শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ। রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী শহীদ রায়হান আলীর পিতা তাঁর সন্তানের আন্দোলনে অংশগ্রহণ ও আত্মত্যাগের স্মৃতিচারণ করেন, যা পুরো মিলনায়তনে আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি করে। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী শহীদ সাকিব আনজুমের পিতা মো. মাইনুল হক বলেন, ‘পিতার কাঁধে সন্তানের লাশ বহনের যন্ত্রণা ভাষায় প্রকাশযোগ্য নয়।’ তাঁর বক্তব্যে শোক, গর্ব ও ভালোবাসা একত্রে প্রকাশ পায়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের ইতিহাসের এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়, যা শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগ ও গণতান্ত্রিক চেতনার প্রতীক।’
অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতার বিজয়ী ও অংশগ্রহণকারীদের মাঝে পুরস্কার ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। দিনব্যাপী আয়োজনের শেষ পর্বে উপস্থাপিত হয় বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নির্মিত তথ্যচিত্র এবং একটি নাট্যদলের পরিবেশনায় মঞ্চনাটক, যা দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়।
অনুষ্ঠান শেষে শহীদ শিক্ষার্থী সাকিব আনজুম-এর স্মরণে বিশ্ববিদ্যালয় গোল চত্বরের নাম "শহীদ সাকিব আনজুম চত্বর" হিসেবে উদ্বোধন করা হয়। এই উদ্বোধন ছিল আয়োজনের সবচেয়ে গৌরবময় ও স্মরণীয় অংশ, যা শহীদের আত্মত্যাগকে স্থায়ীভাবে স্মরণ করার এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
মন্তব্য করুন