ভিডিও বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫

গাজায় রক্তের তীব্র সংকট, বাড়ছে মৃত্যু

গাজায় রক্তের তীব্র সংকট, বাড়ছে মৃত্যু, ছবি: সংগৃহীত।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েলি অবরোধ ও টানা হামলার মুখে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়েছে। ব্লাড ব্যাংকগুলোতে রক্তের মজুত শেষ হয়ে গেছে। এছাড়া অনেক সম্ভাব্য রক্তদাতা অপুষ্টিতে ভুগছেন। ফলে তাদের রক্ত নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। জ্বালানি সংকটও তীব্র হয়েছে। অব্যাহত রয়েছে ত্রাণ নিতে আসা মানুষের মৃত্যু। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এসব কথা জানা গেছে। 

আল-শিফা হাসপাতালের ব্লাডব্যাংকের প্রধান আমানি আবু ওউদা বলেন, অনেকেই রক্ত দিতে আসছেন। কিন্তু তাদের অপুষ্টির কারণে তা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অনেক সময় রক্তদানের পরপরই তারা অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন। এতে তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি তো বাড়ছেই, সেই সঙ্গে ওই রক্তব্যাগটিও নষ্ট হচ্ছে।ইসরায়েলি আগ্রাসনের মধ্যেই গত ২৪ ঘণ্টায় ক্ষুধায় মারা গেছেন অন্তত ৫ জন। একই সময়ে হামলায় নিহত হয়েছেন আরও অন্তত ৪৪ জন। এদের মধ্যে ১৮ জন ছিলেন ত্রাণের খোঁজে বের হওয়া সাধারণ মানুষ। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত জিএইচএফ-এর ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে।জাতিসংঘ মহাসচিবের উপ-মুখপাত্র ফারহান হক জানিয়েছেন, গাজার জ্বালানি সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত দুই দিনে কেরেম আবু সালেম সীমান্ত দিয়ে মাত্র তিন লাখ লিটার জ্বালানি প্রবেশ করতে পেরেছে। এটি প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য। এর ফলে ১০০-রও বেশি নবজাতকের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

ফারহান হক আরও বলেছেন, মার্চ মাস থেকে এ পর্যন্ত ১০০ জনের বেশি চিকিৎসক ও সার্জনকে গাজায় প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এর ফলে জটিল রোগীদের চিকিৎসা আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক টেড্রোস আডানম গ্যাব্রিয়াসিস বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, গাজায় এখনও ১৪ হাজার ৮০০ রোগীর জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন।

জিএইচএফ নামের যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত একটি ত্রাণ তদারকি সংস্থার কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন জাতিসংঘের স্বাধীন বিশেষজ্ঞরা। এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেছেন, জিএইচএফ মানবিক সহায়তার আড়ালে সামরিক ও ভূরাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের ভয়ানক উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন।

আরও পড়ুন

জিএইচএফ চালু হওয়ার পর মে মাস থেকে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৫৬০ জন ফিলিস্তিনি ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে।

ইসরায়েলের বোমা ও ট্যাংক হামলায় গাজার নিজস্ব খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা ও ইউএন স্যাটেলাইট সেন্টারের এক যৌথ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার মাত্র ৮.৬ শতাংশ চাষযোগ্য জমি এখন প্রবেশযোগ্য। এর মধ্যে মাত্র ১.৫ শতাংশ জমি এখনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

গাজায় দুর্ভিক্ষ ও অবরোধের প্রতিবাদে শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে হামাস। সংগঠনটি এক বিবৃতিতে বলেছে, শহর, রাজধানী ও জনসমাগমস্থলে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও দখলদারদের দূতাবাসগুলোর সামনে প্রতিবাদ জোরদার করতে হবে।

গাজায় দখলদার বাহিনীর সামরিক তৎপরতা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল। এমন আশঙ্কায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজাকে পুরোপুরি দখলের পরিকল্পনা নিয়ে নতুন ঘোষণা দিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অর্থপাচার মামলায় ১০ বছরের সাজা থেকে জি কে শামীমের খালাস

আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর মামলা: অভিযোগ গঠনের পরবর্তী শুনানি ১৩ আগস্ট

দুদকের মামলায় সাবেক ভিসি কলিমুল্লাহ গ্রেফতার 

পঞ্চগড়ে ছাত্রদল কর্মীর ছুরিকাঘাতে অপর কর্মীর মৃত্যু

রামপুরায় ভবনের কার্নিশে ঝুলে থাকা তরুণকে গুলির মামলায় অভিযোগ দাখিল

জামায়াত আমিরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে স্বাস্থ্যের খোঁজ নিলেন মুফতি ফয়জুল