শিবচরে ভ্যানচালককে হত্যার পর মাটিচাপা : গ্রেপ্তার আরও ৩

মাদারীপুরের শিবচরে অটোভ্যানচালক মিজান শেখকে (৪৫) হত্যার পর মাটি চাপা দিয়ে ভ্যান চুরির ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে মিডিয়া ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ তথ্য জানান মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম। এ নিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিহত মিজান শিবচর উপজেলার পাঁচ্চর ইউনিয়নের বালাকান্দি এলাকার মৃত আজিজ শেখের ছেলে।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন, শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নওডোবা ইউনিয়নের উমেদ আলী গোমস্তাকান্দি গ্রামের হাসেম শেখের ছেলে শামীম শেখ ওরফে নুরুল আমিন (৩৫), মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাখরেরকান্দি গ্রামের মৃত তারা মিয়া হাওলাদারের ছেলে হুমায়ন হাওলাদার (৩৯), একই উপজেলার পাচ্চর ইউনিয়নের শিকদারকান্দি গ্রামের আব্দুল হক চোকদারের ছেলে লিটন চোকদার (৩৪) ও নমুকান্দি (কাঠালবাড়ী) গ্রামের মৃত শামসুল হক মাতুব্বরের ছেলে মামুন মাতুব্বর (৩৮)। তাদের কাছ থেকে নিহত মিজানের মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগসহ নগদ ৬ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গত ৩১ জুলাই রাতে ভাঙ্গাড়ি মালামাল পরিবহনের কথা বলে মিজানকে শিবচর উপজেলার মাদবরের চর ইউনিয়নের শিকদার কান্দি গ্রামে নিয়ে যায়। পরে পরিত্যক্ত একটি ঘরে তাকে আটকে রেখে হাত-পা বেঁধে অমানবিক নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে আসামিরা গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে মিজানকে হত্যা করে। এরপর মরদেহটি গুম করার উদ্দেশে বস্তায় ভরে মাটিচাপা দেওয়া হয়। এদিকে মিজানের সন্ধান না পেয়ে গত ১ আগস্ট শিবচর থানায় নিখোঁজ জিডি করেন তার স্ত্রী মোসা. রাহিমুন।
আরও পড়ুনআরও জানা যায়, গতকাল ১১ আগস্ট দিবাগত রাতে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং মাদারীপুর র্যাব-৮-এর প্রত্যক্ষ সহায়তায় নুরুল আমিনকে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানাধীন লালন শাহের (লালন ফকির) মাজার থেকে হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি নুরুল আমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও নগদ ৬ হাজার টাকাসহ মানিব্যাগ উদ্ধার করে পুলিশ। পরবর্তীতে তার দেখানো মতে আজ মঙ্গলবার ১২ দিন পর শিকদার কান্দির একটি বাড়ি থেকে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় মিজানের মরদেহ উদ্ধার করে এবং আরও তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অটোভ্যানচালক মিজান হত্যা ঘটনায় এজাহার নামীয় পাঁচজন আসামি রয়েছে। এর মধ্যে চারজন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। তবে অটোভ্যানটি এখনো উদ্ধার হয়নি। এ ছাড়া এই মামলায় আরও কিছু অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আশা করি, দ্রুতই সব আসামিদের গ্রেপ্তার ও ভ্যানটি উদ্ধার করতে পারবো।
উল্লেখ্য, প্রতিদিনের মতো গত ৩১ জুলাই সকালে জীবিকার তাগিদে ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন মিজান। কিন্তু রাতে আর বাড়ি ফিরে না আসায় ও খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান না পাওয়ায় পরের দিন বাদী হয়ে শিবচর থানায় জিডি করেন মিজানের স্ত্রী মোসা. রাহিমুন। একপর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে নুরুল আমিনকে গ্রেপ্তার করলে তার জবানবন্দিতে জানা যায়, ভ্যান চুরির জন্য পরিকল্পিতভাবে মিজানকে হত্যার করে মাটিচাপা দেওয়া হয় এবং ভ্যানটি শরীয়তপুর নিয়ে মাত্র ২৭ হাজার টাকায় বিক্রি করে টাকাগুলো ভাগবাটোয়ারা করে নেন হত্যাকারীরা।
মন্তব্য করুন