৫০ কোটি ডলারের জরিমানা থেকে রেহাই পেলেন ট্রাম্প

গত বছর প্রতারণার দায়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৫০ কোটি মার্কিন ডলার জরিমানার রায় দিয়েছিল নিউইয়র্কের আদালত। আপিল আদালত ওই সিদ্ধান্ত খারিজ করেছে।
আজ শুক্রবার (২২ আগস্ট) এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার দুই প্রাপ্তবয়স্ক সন্তান ও পারিবারিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগের প্রমাণ পায় আদালত।
অভিযোগ মতে, ট্রাম্প ও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তাদের জমি-জমা ও অন্যান্য সম্পদের মূল্য অন্তত ৮১ কোটি ২০ লাখ ডলার বেশি দেখিয়েছিলেন, যা এক ধরনের প্রতারণা।
সে সময় ম্যানহাটনে অবস্থিত নিউইয়র্ক স্টেট কোর্টের বিচারক আর্থার এনগোরন এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৫০ কোটি (৫০০ মিলিয়ন) ডলারের জরিমানার রায় দেন।
রায়ে ট্রাম্পকে ৩৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার জরিমানা করা হলেও পরবর্তীতে সুদসহ তা বেড়ে ৫০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যায়।
দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) প্রকাশিত ৩২৩ পাতার দীর্ঘ রায়ে নিউইয়র্ক সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারকরা মন্তব্য করেন, প্রতারণার জন্য ট্রাম্পের দায় থাকলেও জরিমানার পরিমাণ "অত্যধিক"। মার্কিন নাগরিকরা কঠোর শাস্তি থেকে "সাংবিধানিক সুরক্ষা" পেয়ে থাকেন, যা এ ক্ষেত্রে ট্রাম্প পাননি।
বিচারক পিটার মুলটন বলেন, '(ট্রাম্পের প্রতারণার কারণে) ক্ষতি অবশ্যই হয়েছিল, কিন্তু সেই ক্ষতি এমন কোনো বিপর্যয় সৃষ্টি করেনি যাতে প্রায় অর্ধ-বিলিয়ন ডলার জরিমানা যৌক্তিকতা পায়।
রায়ের পর সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে ট্রাম্প বলেন, এই সিদ্ধান্ত 'একটি পরিপূর্ণ বিজয়'।
তিনি বলেন, 'একটি বেআইনি ও অসম্মানজনক সিদ্ধান্তকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়ার সাহস দেখানোয় আদালতের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। ওই সিদ্ধান্ত নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সব ধরনের ব্যবসার ক্ষতি করছিল', বলেন ট্রাম্প।
এটা ছিল আলেয়ার পিছে ছোটার মতো একটি ঘটনা। একটি রাজনৈতিক চাল। ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখলে, এ ধরনের পদক্ষেপ নজিরবিহীন।
নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকেও 'বিজয়ের' দাবি করা হয়েছে। মূলত, তাদের দাবি, আর্থিক দণ্ড বাদ গেলেও ট্রাম্পকে প্রতারণার দায় কাঁধে নিতে হয়েছে এবং বিচারকরা আর্থিক নয় এমন দণ্ড বাতিল করেননি।
আরও পড়ুনতা সত্ত্বেও, অঙ্গরাজ্যের সর্বোচ্চ আপিল আদালতে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল জানাবেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিচারকরা বিচারিক আদালতের সিদ্ধান্ত বাতিল করেনি।
'ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার প্রতিষ্ঠান ও তার দুই সন্তান প্রতারণার জন্য দায়ী', বিবৃতিতে বলা হয়।
'ইতিহাসের পাতায় যেন এ ঘটনা হারিয়ে না যায়: আরও একটি আদালত রায় দিয়েছে যে প্রেসিডেন্ট আইনভঙ্গ করেছেন এবং আমাদের মামলা যথার্থ ছিল।
ট্রাম্প, তার দুই প্রাপ্তবয়স্ক ছেলে সন্তান ও তার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আনা মামলায় অর্থ দণ্ডের পাশাপাশি অন্যান্য শাস্তিও দেন বিচারক এনগোরন।
তিনি ট্রাম্পকে নিউইয়র্কে কোনো প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে কাজ করা ও ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার ওপর তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
বৃহস্পতিবারের রায়েও এই সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে।
শুনানির প্রায় এক বছর পর এই রায় প্রকাশ পেল।
ট্রাম্পের ছেলে এরিক ট্রাম্প এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি বলেন, 'পাঁচ বছরের নরক-যন্ত্রণার পর ন্যায়বিচার পেয়েছি।
মন্তব্য করুন