ভ্যাকসিন বন্ধ
শহরজুড়ে বেওয়ারিশ কুকুরের অবাধ বিচরণ, আতঙ্কে শিশুদের সাথে বড়রাও

স্টাফ রিপোর্টার : কুকুর নিধনে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় সারা দেশের মত বগুড়ায় অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা। এসব কুকুরের কামড়ে যেন জলাতঙ্ক রোগ না ছড়ায় সেজন্য নেওয়া হয়েছিল কুকুরকে ভ্যাকসিন (টিকা) দেওয়ার কর্মসূচি। কিন্তু বর্তমানে সেই কর্মসূচিও বন্ধ হয়ে গেছে।
সারা বছর তো বটেই বর্তমানে প্রজনন মৌসুমে দলবদ্ধ কুকুরের কবলে পড়ে কুকুরের হামলার শিকার হচ্ছেন শিশুরাসহ এলাকাবাসী। এদিকে জেলা কিংবা পৌরসভায় বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা বর্তমানে কত তার কোনো পরিসংখ্যানও নেই স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল ও শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বগুড়াসহ আশেপাশের জেলা ও উপজেলা থেকে প্রতিদিন নতুন এবং পুরাতন মিলিয়ে ৩ থেকে ৪শ’ জন রোগী আসে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন নিতে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের ভ্যাকসিনেটর কেন্দ্রের সিনিয়র স্টাফ নার্স জানান, দিন দিন এই সংখ্যা শুধু বাড়ছে। তিনি মনে করেন, কুকুর নিধনে নিষেধাজ্ঞা থাকা ও তাদের ভ্যাকসিন না দেয়ায় এমনটি হচ্ছে।
এদিকে সকালে যারা হাঁটতে বের হন এবং বিদ্যালয়ে গমনেচ্ছুক শিক্ষার্থীরা পরে বিপাকে। গতকাল শহরের জামিলনগর এলাকার মালগ্রাম যাওয়ার রাস্তার মাঝখানে একসাথে আট-দশটা করে কুকুর দাঁড়িয়ে-বসে থেকে নিজেদের মধ্যে ঝগড়া শুরু করে। তা একপর্যায়ে মারামারিতে রুপ নেয়। সেসময় পাশ দিয়ে হেটে যাচ্ছিলেন গৃহবধূ সুলতানা ও তার কয়েকজন সাথী।
আরও পড়ুনতাদের ওপরও আক্রমন করে বসে হিংস্র কুকুরগুলো। পরে কয়েকজন এসে কুকুরগুলোকে ছত্রভঙ্গ করে দেন। একই অবস্থা প্রায় শহরের প্রতিটি রাস্তার মোড়ে মোড়ে। হাতে খাবারের ব্যাগ থাকলে সেটা ধরেও টানা-টানি করছে এই প্রাণিগুলো। কুকুরের ভয়ে শিক্ষার্থীদের নিরাপদে বিদ্যালয়ে যেতে একা ছাড়তে পারছেন না অভিভাবকরা। সববয়সি মানুষ কুকুর দেখলেই আতঙ্ক নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন।
এদিকে কুকুরের ভ্যাকসিন বিষয়ে বগুড়া পৌরসভার সেনেটারি ইন্সপেক্টর শাহ আলী বলেন, পরিবেশবাদী সংগঠনের উচ্চ আদালতে রিটের পরিপ্রেক্ষিতে কুকুর নিধন বন্ধের নির্দেশ আছে। পরবর্তীতে জলাতঙ্ক রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কুকুরকে ভ্যাকসিন বা টিকা দেওয়া হয়েছিল।
এখন সেটিও বন্ধ রয়েছে। তবে কয়েকদিন আগে পৌরসভার অর্থায়নে প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য কিছু ভ্যাকসিন কেনা হয়েছে । তা কবে প্রয়োগ করা হবে তার তারিখ ঠিক করা হয়নি। এব্যাপারে বগুড়া জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা: কাজী আশরাফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কুকুরের টিকার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে (জলাতঙ্ক প্রতিষেধক) জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও বগুড়া পৌরসভা। আমরা শুধু টেকনিক্যাল সার্পোট (কারিগরি সহায়তা) দিয়ে থাকি।
মন্তব্য করুন