অনুমোদন ছাড়াই চলছে প্রাণিসম্পদ ব্যাংক
নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর রাণীনগরে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই কার্যক্রম শুরু করেছে প্রাণিসম্পদ ব্যাংক। নামটি দেখে মনে হবে এটি সরকারি প্রাণিসম্পদ বিভাগের একটি সেবার নাম। কিন্তু এটি মূলত উদ্দীপন নামক এনজিও’র একটি বিশেষ উদ্যোগের নাম।
শুধু রাণীনগর উপজেলাতেই নয়, জেলার ১১টি উপজেলাতেও ব্যাংকটি তাদের প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেছে। এটি কি আবার নতুন কোন প্রতারণার ফাঁদ কিনা এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সাধারণ মানুষদের মাঝে।
উদ্দীপন এনজিও’র রাণীনগর উপজেলা শাখার ম্যানেজার মোমিনুল ইসলাম জানান ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে উদ্দীপন পরিচালনা পর্ষদের ২১৩তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গবাদি প্রাণি বিনিময় ব্যাংক কর্মসূচিকে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে উদ্দীপনের একটি বিশেষ উদ্যোগ হিসেবে “প্রাণিসম্পদ ব্যাংক” নামে নামকরণের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে যা বাস্তবায়নের জন্য অফিস আদেশের মাধ্যমে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
মূলত দেশের অসহায়, হতদরিদ্র ও গরীব মানুষদের পশুপালনের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করতেই প্রাণিসম্পদ ব্যাংক প্রাথমিক ভাবে কাজ শুরু করেছে। এই কর্মসূচির আওতায় প্রান্তিক পর্যায়ের ৫ জন বিত্তহীন সদস্যকে প্রতিটি ৫ হাজার টাকা মূল্যে ছাগল প্রদান করা হচ্ছে। সেই ছাগলের প্রথম বাচ্চাটি নিয়ে অন্য সদস্যকে প্রদান করা হবে। এরপর থেকে আর ওই ছাগলের কোন বাচ্চা গ্রহণ করা হবে না।
ইতোমধ্যে রাণীনগর উপজেলাতে প্রাথমিক ভাবে এই কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এটি ট্রাস্ট আইন, ১৮৮২ এর আওতায় প্রণীত ট্রাস্ট দলিল মতে গঠন করা হয়েছে। তবে সরকারি ভাবে প্রাণিসম্পদ ব্যাংক অনুমোদন পেয়েছে কি না সেই বিষয়ে উদ্দীপনের প্রধান কার্যালয়ের প্রধান কর্তা ব্যক্তিরা জানেন বলে জানান ম্যানেজার মোমিনুল ইসলাম।
আরও পড়ুনঅপরদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (ডিভিশন-১) থেকে যুগ্ম-পরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ-আল-মামুন স্বাক্ষরিত একটি পত্রের মাধ্যমে ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসের ১৫ তারিখে প্রাণিসম্পদ ব্যাংক সম্পর্কে তথ্য প্রদানের জন্য বলা হয়। ওই পত্রে লেখা হয় যে “প্রাণিসম্পদ ব্যাংক নামে কোন প্রতিষ্ঠান ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর অধীনে ব্যাংক কোম্পানী হিসেবে অত্র কার্যালয় হতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত নয় এবং ট্রাস্ট আইন ১৮৮২ এর অধীনে নিবন্ধিত কোন প্রতিষ্ঠান অত্র কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন নয়।
রাণীনগর উপজেলার চকমনু গ্রামের বাসিন্দা রইচ উদ্দিন বলেন প্রধান সড়কের পাশে এমন আকর্ষনীয় সাইনবোর্ড দেখে আমি প্রথমে মনে করতাম যে এটি উপজেলা পশু হাসপাতালের অন্য একটি সেবার নাম। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি যে এটি উদ্দীপন নামক একটি এনজিও’র বিশেষ উদ্যোগের নাম। অনেক এনজিও রাতারাতি এমন সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে কিছুদিন পর মানুষকে ঠকিয়ে হারিয়ে যাচ্ছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবু তালেব জানান এই ব্যাংক সম্পর্কে দাপ্তরিক কোন লিখিত পত্র এখনোও তার কাছে আসেনি।
মন্তব্য করুন