ভিডিও

প্রশ্নফাঁসে কোটিপতি বনে গেছেন নওগাঁর আলমগীর

গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই সরকারি চাকরিজীবী

প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৪, ০৭:৩৫ বিকাল
আপডেট: জুলাই ১৫, ২০২৪, ১২:৫০ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

নওগাঁ প্রতিনিধি : সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজন এসএম আলমগীর কবির (৪৮)। বেড়ে উঠেছেন নওগাঁর বদলগাছি উপজেলার কোলা ইউনিয়নে গয়রা সরদারপাড়া গ্রামের সাধারণ এক দিনমজুর পরিবারে।

প্রশ্নফাঁস চক্রে জড়িত থেকে অল্পদিনেই আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে ওঠেন। নিজেকে অনেক বড় চাকরিজীবীর পাশাপাশি চাকরির কোচিং ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দেওয়া এই ব্যক্তি। প্রশ্নফাঁস কাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য পিএসসির সহকারী পরিচালক এসএম আলমগীর কবির হঠাৎ অঢেল সম্পদের মালিক বনে যাওয়ার রহস্য হিসেবে তিনি নিজ গ্রামের প্রায় ১শ’জনকে সরকারি চাকরি দিয়েছেন।

এছাড়াও নওগাঁ, বগুড়া, রাজশাহী এবং ঢাকাসহ সারাদেশেই তিনি হাজার হাজার মানুষকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে সরকারি চাকরি দিয়েছেন এই অবৈধ পন্থায়।

এসব চাকরি দেয়ার জন্য তিনি ঢাকা এবং বগুড়ায় ‘জব কর্নার সাঁটলিপি এন্ড কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট’ নামে কোচিং সেন্টার খুলে এসব চাকরি প্রত্যাশীদের সাথে যোগাযোগ করে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার মোটা অর্থের বিনিময়ে ফাঁসের প্রশ্নপত্র সরবারহ করতেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় কয়েক বছর আগেও তার বাবা অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন। ছাত্রজীবনে ছোট ভাই হুমায়ুন কবিরসহ আলমগীর কবির অন্যের জমিতে কাজ করতেন। কিন্তু পিএসসিতে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর চাকরি হওয়ার পর বদলে যেতে থাকে তাদের অবস্থা। এরপর একই দপ্তরে পদোন্নতি পেয়ে হয়েছেন সহকারী পরিচালক।

তার বয়োবৃদ্ধ বাবা আবুল কাসেম বলেন, তার ছেলের ঢাকায় বিলাশবহুল বাড়ি এবং গাড়ি থাকলেও গ্রামের বাড়িতে তেমন কিছুই করেননি। মাঝে মধ্যে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে বাড়িতে আসে এবং তাদের পরিবারের খরচ দিয়ে যায়। তিনি বলেন সম্প্রতি আলমগীর গ্রামের বাড়িতে বিঘা দশেক জমি কিনেছেন। এর চেয়ে বেশি কিছু তিনি জানেন না।

প্রসঙ্গত, সদ্য অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে পিএসসির দু’জন উপ-পরিচালক, দুজন সহকারী পরিচালকসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের। তার মধ্যে ৬ জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বাকি ১১ জন দেননি। ফলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সিআইডি বলছে প্রশ্নফাঁসের ঘটনার মূলে ছিলেন তিনজন। তারা পিএসসির উপ-পরিচালক মো. আবু জাফর ও মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং সহকারী পরিচালক এসএম আলমগীর কবির। এই তিনজনই মূলত প্রশ্নফাঁসে বিশেষ ভূমিকা রাখেন।

চক্রের অন্য সদস্যরা কেউ চাকরিপ্রার্থী সংগ্রহ করতেন, কেউ প্রশ্নপত্র পেয়ে তার সমাধান করতেন, আবার কেউ অর্থের লেনদেন করতেন। ইতোমধ্যে এসএম আলমগীর কবিরকে পিএসসি থেকে বরখাস্ত এবং তার ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS