ভিডিও

বগুড়ায় কুকুরের কামড়ে অহরহ আহত হচ্ছে সাধারণ মানুষ

অনেক উপজেলা হাসপাতালে টিকা নাই

প্রকাশিত: জুলাই ১৫, ২০২৪, ০৯:২৯ রাত
আপডেট: জুলাই ১৫, ২০২৪, ০৯:২৯ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়াসহ বিভিন্ন এলাকা এবং উপজেলায় কুকুরের উপদ্রব বেড়েছে। কুকুরের কামড়ে প্রতিনিয়ত মারাত্বক আহত হচ্ছে শিশু কিশোরসহ নানা বয়সী মানুষ। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কুকুর নিধন বন্ধ থাকায় এই উপদ্রব ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।

শহর অঞ্চলে মানুষের মাঝে সচেতনতা থাকায় তারা হাসপাতালে যাচ্ছে কিন্তু গ্রামাঞ্চলে আধুনিক সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত মানুষেরা এখনো ঝাড়ফুঁক, পানিপড়া, কাঁচামাংস খাওয়ার মধ্যে দিয়ে কুকুর কামড়ানোর চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে ছিন্নমূল কুকুরকে ভ্যাকসিন দেওয়ার কোন ব্যবস্থা না থাকায় এ নিয়ে আতংকিত সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে অনেক উপজেলা হাসপাতালে জলাতঙ্কের প্রতিষেধক টিকা না মিলছে না।

গত ৮ জুলাই শহরের জলেশ্বরীতলার শহিদ আব্দুল জব্বার সড়কে একটি কোচিং সেন্টার থেকে বের হওয়ার সময় বগুড়া জিলা স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সালমান ফার্সিকে কুকুর কামড়ে ক্ষত করে দেয়। ক্ষত নিয়ে তার  মা  মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে যান। হাসপাতালে পর দিন থেকে ওই শিশুকে টিকা দেওয়া শুরু হয়। শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকায় প্রায় শতাধিক কোচিং সেন্টার ও টিউটোরিয়াল হোম রয়েছে। এগুলোতে বিভিন্ন স্কুলের শতশত শিক্ষার্থী পড়তে যায়।

প্রতিদিন তারা কুকুর আতংক নিয়ে ওই এলাকা দিয়ে চলাচল করে। জলেশ্বরীতলার শত শহরের সুত্রাপুর, খান্দার, মালগ্রাম, জামিলনগর, সেউজগাড়ি, সবুজবাগ, বাদুরতলা, কাটনারপাড়া, কালীতলা, শিববাটি, মালতিনগর, বকশিবাজার, বৌ বাজার, চেলোপাড়া, নাটাইপাড়াসহ সর্বত্র কুকুরের অবাধ হিংস্র বিচরণে সাধারণ মানুষ আতংকিত।

এদিকে আগে পৌরসভার পক্ষ থেকে কুকুর নিধন করার হলেও এখন তা করা হয়না। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী পৌরসভা কর্তপক্ষ আর কুকুর নিধন করে না। ফলে কুকুরের সংখ্যা বাড়ছেই। আসন্ন প্রজনন মৌসুমে আরও হিংস্র হয়ে উঠতে পারে কুকুরগুলো।

বগুড়া পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম বাদশা জানান, কুকুর নিধনে নিষেধ থাকায় পৌরসভা আর এই কাজটি করতে পারে না। প্রাণি সম্পদ বিভাগ এবং অন্য কোন সংস্থা থেকে কুকুরকে দেওয়ার জন্য ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হলে পৌরসভার পক্ষ থেকে কুকুরকে পুশ করা হবে।

বগুড়া জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ড. মো. আনিছুর রহমান জানান, তাদের দপ্তর থেকে ছিন্নমূল কুকুরকে দেওয়ার জন্য কোন ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হয়না। এই ভ্যাকসিন দেশে তৈরী হয়না। বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এর বাজার মূল্যও বেশি প্রতিটি ভ্যাকসিন ৪ থেকে ৫শ টাকা করে নিতে হয়।

যারা বাড়িতে কুকুর পোষেন তারা বাজার থেকে ভ্যাকসিন কিনে পোষা কুকুরকে দেন যাতে ওই কুকুর কাউকে কামড়ালে সমস্যা না হয়। কোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান ভ্যাকসিন সরবরাহ করলে প্রাণি সম্পদ বিভাগ লোকবল দিয়ে কুকুরকে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিবে। বিষয়টি নিয়ে তারা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

এদিকে আমাদের সারিয়াকান্দি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, কুকুরের কামড়ে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ অন্ত:ত ২২ জন আহত হয়েছে। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে টিকা প্রদানের জন্য বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। জনতা কুকুরটিকে পিটিয়ে মেরেছে। আজ সোমবার (১৫ জুলাই) সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কুকুর কামড়ের খবর পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী জরুরী বিভাগ থেকে ১৮ জন আহত রোগী প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। তারা হলেন সদর ইউনিয়নের দেলুয়াড়ী এলাকার তারাজুল ইসলাম (৬০), জয়নব বেগম (৪০), সায়েদজ্জামান (৫৫), আসাদ (৪০), নূর আলম (৫২), ঈশ্বর চন্দ্র (৫০), বন্ধন (৬), আবু সাঈদ (৩), কমেলা (৫০), কিয়াম উদ্দিন (৬০), মহিদুল (৫০), জয়নব (৪০), সাদেকুল (১৫), মনোয়ারা (৩০), বাবলু (৪০), ছানাউল্লাহ (২৯), বৃষ্টি (১৩), আছাব্বর (৫০)। এলাকাবাসীর তথ্য অনুযায়ী বাকিরা সরাসরি চিকিৎসা গ্রহণ করতে বগুড়ার বিভিন্ন হাসপাতালে গেছেন।

সারিয়াকান্দি পৌরসভার মেয়র মতিউর রহমান মতি বলেন, বিষয়টি খুবই দু:খজনক। এ বিষয়ে এলাকাবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আজ সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরের দিকেই পৌর এলাকার ধাপ গ্রামবাসী কুকুরটিকে মেরে ফেলেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাহবুব হোসেন সরদার বলেন, অন্ত:ত ২২টি কুকুর কামড়ানোর খবর পাওয়া গেছে। হাসপাতালে জলাতঙ্কের প্রতিশেধক টিকা না থাকায় আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসার পাশাপাশি বাহির থেকে অথবা বগুড়া মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে টিকা গ্রহণ করে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS