ভিডিও রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

বগুড়া চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন বই পেলেও অন্যদের ক’দিন অপেক্ষা করতে হবে

বগুড়া চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন বই পেলেও অন্যদের ক’দিন অপেক্ষা করতে হবে। ছবি : দৈনিক করতোয়া

স্টাফ রিপোর্টার : নানান ঘটনার জন্ম দিয়ে পুরাতন বছরকে বিদায় জানিয়ে শুরু হলো সম্ভাবনার নতুন বছর। পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে দুই যুগের মধ্যে এবারই প্রথম বছরের প্রথম দিন সকল শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যের নতুন বই তুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

মাধ্যমিক, মাদ্রাসা ও কারিগরী শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়া সম্ভব না হলেও প্রাথমিকের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন বই দেওয়া হবে। অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক’দিন অপেক্ষা করতে হবে বগুড়ার দুই শিক্ষা কর্মকর্তাসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ এই তথ্য জানিয়েছেন।

বগুড়ার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বইয়ের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৮১ লাখ পিস। এরমধ্যে প্রাথমিকে ১৮ লাখ ৯০ হাজার এবং মাধ্যমিকসহ ইবতেদায়ী, দাখিল, ইংরেজি ভার্সন এবং কারিগরী মিলে বইয়ের চাহিদা রয়েছে ৬২ লাখ ১৯ হাজার ৬৯৪টি।

বগুড়া বিয়াম মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ৫০ শতাংশ বই তাদের কাছে এসে পৌঁছেছে তবে অন্যান্য শ্রেণির বই এখনও তারা পাননি। বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন অর রশীদ জানান, প্রাথমিকের দুটি শ্রেণির তিনটি করে বই তাদের হাতে এসেছে। অন্যান্য শ্রেণির বই এখনও তারা পাননি।

যে বইগুলো তারা পেয়েছেন সেগুলো শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেবেন। বগুড়া জিলা স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তহমিনা বেগম জানান, তারাও চতুর্থ শ্রেণির ৪টি ও পঞ্চম শ্রেণির ৩টি করে বই পেয়েছেন। অবশিষ্ট বই কিছুদিনের মধ্যে পাবেন বলে প্রত্যাশা করেন।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ রেজোয়ান হোসেন জানান, জেলার কয়েকটি উপজেলায় বিতরণের জন্য প্রাথমিকের তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণির কিছু বই গতকালই তারা পেয়েছেন। ইতোমধ্যে বইগুলো বিভিন্ন উপজেলার স্কুলে স্কুলে পৌঁছে গেছে।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. রমজান আলী আকন্দ জানান জানান, জেলার ৯৮৮ মাধ্যমিক, নিম্ন মাধ্যমিক, কারিগরী ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্য ৬২ লাখ ১৯ হাজার ৬৯৪টি বইয়ের প্রয়োজন। এরমধ্যে মাদ্রাসার একটি শ্রেণির কিছু বই এলেও মাধ্যমিক ও কারিগরী শিক্ষার্থীদের জন্য কোন বই এখনও আমাদের হাতে পৌঁছায়নি।

তবে আজ ষষ্ঠ শ্রেণির তিনটি বই পাওয়া যাবে। এছাড়া অন্যান্য ক্লাসের বইগুলো আগামি কিছুদিনের মধ্যে পাওয়া যাবে। মাধ্যমিক ও প্রাথমিকের দুই শিক্ষা কর্মকর্তাই জানান, দেশে জুলাই আগস্ট অভ্যূত্থান এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে এবার বই পেতে কিছুটা দেরি হচ্ছে।

আরও পড়ুন

২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য দেশে প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বইয়ের চাহিদা অনুযায়ী ৪০ কোটি ১৬ লাখ বই প্রয়োজন। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিকের বইয়ের সংখ্যা ১২ কোটি ৮ লাখ ৬৭ হাজার ৭৫২টি। মাধ্যমিক পর্যায়ের অর্থাৎ ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য এবার ২৮ কোটি ৬ লাখ ২২ হাজার ৩৩৭টি বইয়ের প্রয়োজন।

এদিকে আমাদের পাবনার প্রতিনিধি জানান, অনিশ্চয়তার মাঝেও পাবনায় আজ নতুন বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে নতুন বই। গত কয়েকদিন ধরে উপজেলা থেকে স্কুলে স্কুলে পাঠানো হয়েছে নতুন বই। শিক্ষকরা ইতোমধ্যে বই বুঝে নিয়ছেন তাদের স্কুলের জন্য।

শিক্ষকরা জানান, শুধুমাত্র প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির বই দেওয়া হচ্ছে। চাহিদার মাত্র ৪০ শতাংশ বই পাওয়া গেছে। যা দেওয়া হচ্ছে তার মাঝেও অনেক শিক্ষার্থী নতুন বই থেকে বঞ্চিত হবে। নতুন বইয়ের আনন্দের পাশাপাশি আছে হতাশাও। তকে সব শ্রেণির সব বই পাওয়া যাবে সেটিও অনিশ্চিত।

গতকাল সোমবার বিকেলে কথা হয় সুজানগর উপজেলার আনিসুর রহমান আইডিয়াল স্কুলের সহকারী শিক্ষক শাহনাজ খাতুনের সাথে। তিনি বলেন, নতুন বই পেয়ে ভাল লাগছে। শিশুরা নতুন বই পাবে। তবে সব শিক্ষার্থীরা বই পাবে না। কারণ সবগুলো বই পাওয়াও যায়নি। তাই আনন্দের সাথে হতাশাও আছে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই কবে পাবো তাও জানি না।

ব্রিলিয়ান্ট কেজি হাইস্কুলের শিক্ষক সুলতান মাহমুদ খান বলেন, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ৪০ শতাংশ বই পেয়েছি আমরা। কিন্তু চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই পাইনি। যে বই পেয়েছি তাতেও সব শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দিতে পারবো না। কিছু পাবে, কিছু পাবে না। কারণ আমাদের যে চাহিদা ছিল সে তুলনায় অর্ধেকেরও কম বই পেয়েছি। সবার হাতে বই তুলে দিতে পারলে ভাল লাগতো।

এ বিষয়ে পাবনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দীক মোহাম্মদ ইউসুফ রেজা জানান, 'জেলার ১১৩৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য বইয়ের চাহিদা ছিল ১৯ লাখ ৫৯ হাজার ৩০৩টি। প্রথম অবস্থায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণি মিলিয়ে পাওয়া গেছে ৮ লাখ ৬৪ হাজার ১০৮টি। বই প্রাপ্তির হার ৪৪ শতাংশ। সারা বাংলাদেশে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির কোনো বই দেওয়া হয়নি।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

লালমনিরহাটে পাটশাক চাষে আগ্রহী বেশি চাষিরা

আজকের শিশুরা আগামী দিনে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে : সাবেক এমপি লালু

জয়পুুরহাটের পাঁচবিবিতে বুপ্রেনরফিন ইঞ্জেকশনসহ গ্রেফতার ২

বগুড়ার খামারে খামারে প্রস্তুত কুরবানির পশু, গো-খাদ্যের দাম না বাড়ায় স্বস্তি

বগুড়া সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলে ভুট্টা ও মরিচ থেকেই ৫শ কোটি টাকা কৃষকের ঘরে

বগুড়ার শেরপুরে আ‘লীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতা গ্রেফতার