ভিডিও রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

বগুড়া সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলে ভুট্টা ও মরিচ থেকেই ৫শ কোটি টাকা কৃষকের ঘরে

বগুড়া সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলে ভুট্টা ও মরিচ থেকেই ৫শ কোটি টাকা কৃষকের ঘরে। ছবি : দৈনিক করতোয়া

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি : সারিয়াকান্দিতে গত রবি মৌসুমে প্রায় হাজার কোটি টাকার বেশি ফসল কৃষকের ঘরে উঠেছে। শুধুমাত্র এ বছর ২৭০ কোটি টাকার ভুট্টা এবং  ১৯৩ কোটি টাকার বেশি মরিচ উৎপন্ন হয়েছে। ভালো ফলন এবং দাম পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি। উপজেলায় কৃষিতে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন উদ্যোক্তা।

যমুনা এবং বাঙালি নদী বিধৌত বগুড়া সারিয়াকান্দির মাটি বেশ উর্বর। এ উপজেলার বেশিরভাগ কৃষিজমি নদী বিধৌত। তাই কৃষি জমিতে প্রতিবছর উজান থেকে বয়ে আসা পলি জমে উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে উর্বর এসব জমিতে এখন সোনার ফসল ফলে। গত কয়েকবছর আগেও চরাঞ্চলের এসব জমি পতিত থাকতো। কিন্তু আধুনিক কৃষি উদ্ভাবন, বিভিন্ন ফসলের নতুন জাত আবিষ্কার, কৃষিতে নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং ফসলের নিবিড় পরিচর্যার কারণে এখন অনাবাদি জমিতেও প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হচ্ছে।

এক্ষেত্রে মাটি থেকে শ্যালো মেশিনের সাহায্য পানি উত্তোলন করে প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে সরবরাহ করার ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উপজেলার যমুনার এবং বাঙালি চরে প্রায় সব ধরনের ফসল উৎপাদন হচ্ছে। সারিয়াকান্দি কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী এ বছর ৮ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে ৮৬ হাজার ৫০০ মে. টন ভুট্টা উৎপন্ন হয়েছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য ২৭০ কোটি ৩১ লাখ টাকার বেশি। ৩ হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে ৯ হাজার ৭৭ টন মরিচ উৎপন্ন হয়েছে।

যার বর্তমান বাজার মূল্য ১৯৩ কোটি টাকা। গত বছর ৩ হাজার ৬৩৫ হেক্টর জমিতে পাট উৎপন্ন হয়েছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৭৩ কোটি ৬০ লাখ টাকার বেশি। এ বছরও ৩০৫০ হেক্টর জমিতে পাটচাষ হয়েছে এবং যা এখনো চলমান রয়েছে। ১৩ হাজার ৯৯০ হেক্টর জমিতে ২৫ হাজার ১৮২ টন বোরোধান উৎপন্ন হয়েছে। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৭৯ কোটি টাকা।

আরও পড়ুন

এছাড়া গত রবি মৌসুমে ৯ হাজার ১১০ মেট্রিক টন আলু, ৫ হাজার ১২০ মেট্রিক টন সরিষা, ১৯ হাজার ৮০ মেট্রিক টন পিঁয়াজ, ৪৫০ মেট্রিক টন রসুন, ৮৬৮ মেট্রিক টন গম, ১ হাজার ২০ মেট্রিক টন মসুর, ১ হাজার ১৫৫ মেট্রিক টন খেসারি, ১৫ মেট্রিক টন তিল, ৯ হাজার ৪৯০ মেট্রিক টন বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি, ৫ হাজার ৮১০ মেট্রিক টন মিষ্টি আলুসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল কৃষকের ঘরে উঠেছে। সে হিসাব অনুযায়ী গত রবি মৌসুমে কৃষকদের ঘরে প্রায় হাজার কোটি টাকার বেশি ফসল কৃষকের ঘরে উঠেছে।

তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা আছালত জামান জানান, উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করে ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করার পর তিনি বাড়িতে এসে কৃষিকাজ শুরু করেছেন। এ বছর তিনি ৮ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করে ৩ লাখ টাকার বেশি লাভ পেয়েছেন। এছাড়া যমুনাচরে জমি বছর চুক্তিতে লিজ নিয়ে ১ শ থেকে ৫ শ বিঘা পর্যন্ত প্রজেক্ট আকারে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের ফসলের চাষাবাদ করছেন। এগুলোর মধ্যে ভুট্টা, মরিচ, মিষ্টি কুমড়া এবং পিঁয়াজ ফসলগুলো প্রোজেক্ট আকারে চাষ হয়েছে।

সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, উজান থেকে প্রতিবছর পলিমাটি বয়ে আসায় এ উপজেলার মাটি বেলে দোঁআশ। আর এই বেলে দোঁআশ মাটি ফসলের জন্য খুবই উপযোগী। এ মাটিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করে এখন কৃষকদের ভাগ্য ফিরেছে। গত কয়েকবছর ধরেই আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এখানে ভালো ফলন হচ্ছে, নতুন কৃষি উদ্যোক্তাও সৃষ্টি হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

লালমনিরহাটে পাটশাক চাষে আগ্রহী বেশি চাষিরা

আজকের শিশুরা আগামী দিনে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে : সাবেক এমপি লালু

জয়পুুরহাটের পাঁচবিবিতে বুপ্রেনরফিন ইঞ্জেকশনসহ গ্রেফতার ২

বগুড়ার খামারে খামারে প্রস্তুত কুরবানির পশু, গো-খাদ্যের দাম না বাড়ায় স্বস্তি

বগুড়া সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলে ভুট্টা ও মরিচ থেকেই ৫শ কোটি টাকা কৃষকের ঘরে

বগুড়ার শেরপুরে আ‘লীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতা গ্রেফতার