নওগাঁর রাণীনগরে কর্ম চাঞ্চল্য হাসকিং মিলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে

রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি : প্রযুক্তির দাপট, নারী-পুরুষ শ্রমিক সংকট, ব্যাংক সুদের হার বৃদ্ধি, ধান আর চালের বিক্রয়মূল্য ফারাকসহ নানা কারণে ব্যবসায় টিকে থাকতে না পেরে চাতাল মালিকরা মিল বন্ধ করে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে।
৯০ দশকের পর থেকে রাণীনগরে কর্ম চাঞ্চল্যমুখর হাসকিং মিলগুলোর মালিকরা ব্যবসায় সুবিধা করায় এই অঞ্চলে একের পর এক হাসকিং মিল গড়ে উঠে। কিন্তু অটো মিলের দাপট আর বড় বড় কোম্পানিগুলো বাজার নিয়ন্ত্রণের কারণে মাঠ পর্যায়ে ধান-চালের দরের ব্যবধানে লোকসানের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় মিল মালিকরা তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছে। এমনকি সরকারের চাল সংগ্রহ অভিযানে বাজারমূল্যের সাথে সরকার ঘোষিত মূল্যের তফাত থাকার কারণে সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে চাল দিতে গিয়েও তারা লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছে।
জানা যায়, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে প্রায় ১৩২টি হাসকিং মিল চালু ছিলো। ব্যবসায় টিকে থাকতে না পারায় ইতোমধ্যে প্রায় ৬৪টি মিল পুরোদমে বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে ৬৯টি মিল ব্যবসায় দাঁড়িয়ে থাকলেও ব্যবসায় লোকসান আতঙ্কে রোপা-আমন মৌসুমে সরকারি খাদ্য গুদামে ৩জন মিল মালিক চাল সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।
উপজেলার কুজাইল বাজারের বিশিষ্ট চাল ব্যবসায়ী মো. মোয়াজ্জিম হোসেন প্রামাণিক জানান, আমি দীর্ঘদিন ধরে এই ব্যবসার সাথে জড়িত গত ৭ বছর ধরে ধান চালের ব্যবসা আমার ভালো যাচ্ছে না। প্রয়োজনীয় তুলনায় পুঁজি কম, ধান কিনতে গিয়ে বাজারদর বেশি, শ্রমিকদের নানামুখী ঝামেলা, চাল বিক্রি করতে গিয়ে দাম কম এবং অটো রাইস মিলের দাপটসহ বিভিন্ন কারণে হাসকিং মিলগুলো মালিকরা ক্রমাগত লোকসান হওয়ার কারণে দিন দিন মিলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুনউপজেলার চালকল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিতানাথ ঘোষ জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন হাট বাজারে ধানের দাম চড়া, চাল বিক্রি করতে গেলে লোকসান এর কারণে ব্যবসা বরাবরই খারাপ যাচ্ছে। সরকারি দরের চেয়ে বাজারমূল্য বেশি হওয়ার কারণে মিলারদের লোকসান আরও বেড়েই যাচ্ছে। যার ফলে অনেক মিলার খাদ্য গুদামে চাল সরবরাহে চুক্তিতে আসেনি। বর্তমানে নানা অসুবিধার কারণে হাসকিং মিলগুলো ব্যবসা ভালো করতে না পেরে মালিকরা মিল বন্ধ করে অন্য পেশায় যাচ্ছে।
উপজেলা খাদ্য অফিসার ওবায়দুল ইসলাম জানান, মিলগুলো কেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এর সুনিদ্দিষ্ট তথ্য আমার কাছে নেই। তবে যতটুকু জেনেছি ব্যবসা তারা ভালো করতে পারছে না। এমনকি তারা সরকারের ক্রয় কেন্দ্রে লোকসানের কারণে চাল দিচ্ছে না। ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে চাল কেন দেওয়া হচ্ছে না মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য করুন