ভিডিও শনিবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৫

পাবনার বেড়ায় কর্মহীন মৃৎশিল্পীরা ঝুঁকে পড়ছেন অন্য পেশায়

পাবনার বেড়ায় কর্মহীন মৃৎশিল্পীরা ঝুঁকে পড়ছেন অন্য পেশায়। ছবি : দৈনিক করতোয়া

বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার বেড়া উপজেলায় এক সময় মৃৎশিল্পীদের মাটির তৈরি পণ্যের সুখ্যাতি ছিল । শুধু বেড়া উপজেলা নয় আশপাশের জেলাগুলোতেও এর বিস্তৃতি ছিল। তবে বর্তমানে বেশিরভাগ মৃৎশিল্পীরাই কর্মহীন হয়ে পড়ায় তাদের সেই ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারছেন না। ফলে তারা বর্তমানে তাদের পরিবারের আর্থিক সঙ্কটে জীবনের প্রয়োজন মেটাতে অনেকটা বাধ্য হয়েই অন্য পেশায় ঝুঁকে পড়ছেন।

বেড়া উপজেলার মৃৎশিল্পীদের ইতিহাস অনেক পুরনো। সকল শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে ছিল শতাব্দীর প্রাচীন এই শিল্পের প্রতি স্নেহ ও ভালোবাসা। মাটির কলস, হাঁড়ি, কোলা, থালা, টব এবং নানা ধরনের শৌখিন পণ্য তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন এখানকার মৃৎশিল্পীরা। তারা দক্ষতার সাথে মাটি দিয়ে প্রাচীন কৌশল অনুসরণ করে মাটির পণ্য তৈরি করতেন।

কিন্তু তাদের সেই ঐতিহ্য আজ  প্রায় বিলুপ্তির পথে। একদিকে অর্থনৈতিক সংকট, অন্যদিকে পেশার প্রতি অনীহা এগুলো মিলিয়ে একে একে মৃৎশিল্পীরা তাদের ঐতিহ্যের পেশা হারাচ্ছেন। বেড়া পৌর এলাকার দক্ষিণ কর্মকারপাড়া মহল্লায় ভ্যানে করে মাটির তৈরি পণ্য বিক্রি করতে আসা সুজল পাল বলেন, ম পাড়া মহল্লায় ঘুরে ঘুরে তার মাটির তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি করে থাকেন।

বর্তমানে বেঁচা বিক্রি অনেকটাই কম। মাটিসহ অন্যান্য সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে মাটির পাতিল, সরা, ঢাকনা সব কিছুরই দাম কিছুটা বেড়েছে। ফলে অনেক ক্রেতাই এগুলো কিনতে চান না। সারা দিন পাড়া মহল্লা ঘুরে বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে কোন মতে সংসার চালিয়ে নিচ্ছেন তিনি। তবে নতুন প্রজন্মের অনেকেই আর এ পেশায় আসতে  আগ্রহী হচ্ছেন না।

আরও পড়ুন

বেড়ার পৌর এলাকার মালদাপাড়া মহল্লার ষষ্ঠি পাল বলেন, ‘এক সময় তিনি মাটি দিয়ে তৈরি করা সামগ্রী বিক্রি করে মাসে ১৫-২০ হাজার টাকা আয় করতেন। কিন্তু এখন বাজারে মাটির তৈরি পণ্যের চাহিদা কমে গেছে এবং কাঁচামালও অত্যন্ত দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে পণ্য তৈরি করা আর লাভজনক হচ্ছে না। তিনি বলেন বর্তমানে মাটির পণ্য তৈরি করে যা রোজগার হয় তা দিয়ে সংসার চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। অনেকেই তাদের এ পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে।

মৃৎশিল্পীরা বিভিন্ন মেলাগুলোতে মাটির তৈরি পণ্য বিক্রি করে কিছু আয় করতেন। কিন্তু বর্তমানে মেলার সংখ্যা কমে যাওয়ায় মাটির পণ্য বিক্রিও কমে গেছে। যার ফলে মৃৎশিল্পীরা অনেকটা বাধ্য হয়েই স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে কম মূল্যে তাদের মাটির তৈরি পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

মনজুর কাদের মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, মাটির তৈরি পণ্য পরিবেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ শিল্পের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ানোর জন্য সচেতনতা সৃষ্টি করা অত্যন্ত প্রয়োজন। মাটির তৈরি পণ্যের গুণগত মান সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করাসহ পরিবেশ বান্ধব এ শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পর্ন তারকাকে ঘুস, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সাজা এবং রেহাই

খালেদা জিয়া খাচ্ছেন তারেক রহমানের বাসায় তৈরি খাবার 

প্রথম জয় পেলো সিলেট : শাকিব খানের ঢাকার টানা ছয় হার

পাবনার বেড়ায় কর্মহীন মৃৎশিল্পীরা ঝুঁকে পড়ছেন অন্য পেশায়

বগুড়ার তালোড়ায় পারভিন সমাজ কল্যাণ সংস্থার ব্যবস্থাপক গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে উধাও

নীলফামারীর সৈয়দপুরে দোকানের তালা কেটে ৮ লাখ টাকা চুরি