রংপুর অঞ্চলে ৬ হাজার ৩শ’ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ নিয়ে স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা

রংপুর প্রতিনিধি : এবার তেমন কুয়াশা না থাকায় রংপুর অঞ্চলে আমের ভালো ফলন আশা করছে এখানকার আমচাষিরা। তারা জানান, এখন রাতে কিছুটা শীত রয়েছে। তেমন কুয়াশা নেই। যদি কুয়াশা হয় তাহলে আমের ক্ষতির শঙ্কা রয়েছে। এজন্য বাড়তি যত্ন শুরু করেছেন তারা। গাছে স্প্রে করা, গাছের গোড়ায় পানি দেওয়া, পানি ছিঁটানোসহ মুকুল আটকাতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের যত্ন নিচ্ছেন।
তারা বলেন, শীত বেশি থাকলে আমের মুকুল আসা ও গুটি আমের ক্ষতি হতে পারে। মুকুল টিকে থাকলে আমের ফলন ভালো হবে। গতবছর জেলায় আমের ফলন কম হওয়ায় এবার ভালো ফলনের আশা করছেন আমচাষিরা।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গতবছর রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় ৬ হাজার ১৮৯ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছিল। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৪ হাজার ৮৭৪ মেট্রিক টন আম। তবে ফলন ভালো না হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।
চলতি মৌসুমে রংপুর অঞ্চলে প্রায় ৬ হাজার ৩শ’ হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২ হাজার ৮৩৫ মেট্রিক টন। গত বছর রংপুরে হাড়িভাঙ্গা আমের চাষ করা হয়েছিলো ১ হাজার ৯১০ হেক্টর জমিতে। এ বছর ২ হাজার হেক্টর জমি ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন কৃষি বিভাগ।
রংপুর সদর উপজেলার পালিচড়া, শ্যামপুর, লাহেড়ীরহাট, মিঠাপুকুর উপজেলার গোপালপুর, পদাগঞ্জ, পাইকারেরহাট, রুপসি, মৌলভীবাজার, সর্দারপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় আমের বাগানগুলো মুকুলে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। আমগাছে মুকুল ধরে রাখতে চাষিরা গাছে স্প্রে করছে, গাছে সেচ দেওয়ার পাশাপাশি সব ধরনের যত্ন নেওয়া শুরু করেছেন।
আরও পড়ুনকৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, সময়ের আগেই কিছু গাছে মুকুল আসছে। হাড়িভাঙাসহ অন্যান্য আমের মুকুল এবার আগাম হয়েছে। তাতে তেমন কোনো ক্ষতির আশঙ্কা নেই। চাষিরা জানান, রংপুরে হাড়িভাঙা আমের ফলন এক বছর বেশি হলে পরের বছর কম হয় এটাই স্বাভাবিক। দাম কম পাওয়ায় প্রতিবছরই ব্যবসায়ীদের কাছে আমের বাগান আগাম বিক্রি করে দিচ্ছেন চাষিরা। তবে সরকারি সুযোগ সুবিধা ও হিমাগারের ব্যবস্থা হলে তারা আম বিক্রি করে লাভবান হবেন।
মিঠাপুকুরের খোড়াগাছ ইউনিয়নের জারুল্লাপুর এলকার আমচাষি লিটন মিয়া জানান, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের কাজ থেকে সময়মতো পরামর্শ পায় না আমচাষিরা। তারা সব ধরনের প্রণোদনা থেকে বঞ্চিত। সরকারি প্রণোদনাগুলোর সঠিক বন্টন হলে আম চাষিরা আরও উপকৃত হবে বলে জানান তিনি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চলের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আফজাল হোসেন জানান, হাঁড়িভাঙা আমসহ অন্যান্য আমের মুকুলে ছেয়ে গেছে রংপুর অঞ্চল।
হাঁড়িভাঙা আম জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এজন্য দেশে-বিদেশে এই আমের চাহিদা সৃষ্টি হয়েছে। এ বছর আবহাওয়া বেশ ভালো, বৃষ্টি-কুয়াশা নেই, ঝড় বাতাস নেই, চাষিরা যদি বাগান ভালো পরিচর্যা করে তাহলে আশানুরুপ ফলন পাবে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষিদের নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন