রোজাদারের তৃপ্তি আনে বেড়ার শীতল মাঠা

বেড়া (পাবনা) প্রতিনিধি : গরমের সময়ে পাবনার বেড়া উপজেলায় মাঠার প্রচলন দীর্ঘকালের। তবে রমজান মাসে রোজাদারদের কাছে এই মাঠা পরিণত হয় অপরিহার্য এক সামগ্রীতে। উপজেলার বেশির ভাগ মানুষ দীর্ঘকাল ধরে ইফতারিতে মাঠার সরবত ব্যবহার করে আসছেন। সারাদিন রোজা পালনের পর মাঠার সরবতে শরীরে শীতল আমেজ সৃষ্টি হয়। রোজাদাররা পান তৃপ্তির পরশ।
দেশের অন্য এলাকার চেয়ে বেড়া উপজেলার মাঠা কিন্তু কিছুটা আলাদা। মূলত এটি ঘোল ছাড়া আর কিছু নয়। স্থানীয়ভাবে এই ঘোল ‘মাঠা’ নামে পরিচিত। এর স্বাদ ও বর্ণও দেশের অন্য এলাকার চেয়ে আলাদা। উপজেলার মানুষ মনে করেন, এই মাঠা বা ঘোল আলাদা স্বকীয়তায় ভরা এবং ইতিমধ্যেই এটি পরিণত হয়েছে উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পানীয়তে।
বিশু ঘোষের বাড়ি বেড়া পৌর এলাকার বনগ্রাম মহল্লায়। সেখানেই তিনি মাঠা তৈরি করে বেড়া বাজারে নিয়ে আসেন বিক্রির জন্য। গোটা রমজান মাস জুড়ে একরকম কাড়াকাড়ি করেই ক্রেতারা কিনে থাকেন তার মাঠা। সাধারণত দুপুর একটার দিকে তিনি ২০ থেকে ২৫ মণ মাঠা নিয়ে বাজারে বসার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় লাইন ধরে ক্রেতাদের মাঠা কেনা। এক থেকে দেড় ঘন্টার মধ্যেই সাফ হয়ে যায় তার সব মাঠা। প্রতি লিটার মাঠা বিক্রি হয় ৭০ টাকায়।
আরও পড়ুনবিশু ঘোষ বলেন, ‘আমার মাঠা সবাই পছন্দ করেন বলে খুব ভালো লাগে। আরও ১০ থেকে ১৫ মণ মাঠা বেশি করে তৈরি করলেও তা শেষ হয়ে যাবে তাতে সন্দেহ নাই।’ বেড়ার মনজুর কাদের মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘বেড়ার ইফতারিতে মাঠা এখন একটি ঐতিহ্যবাহী উপকরণ। দেশের আর কোথাও এমন স্বাদ ও বর্ণের মাঠা মিলবে না বলেই আমার বিশ্বাস।’
বেড়া বাজারের ব্যবসায়ী এনামুল হক বলেন, ‘বেড়ার মাঠা বিশেষ করে বিশু ঘোষের মাঠা খুব গাঢ়। কেউ কেউ সরবত বানানোর জন্য এতে পানি মেশান আবার কেউ বা মেশান না। এর সঙ্গে লেবু ও বরফের কুচি মিশিয়ে বাড়িতে বা দোকানে বসে ইফতারির জন্য শরবত বানানো বেশির ভাগ মানুষেরই দীর্ঘদিনের প্রচলিত একটি অভ্যাস।’
মন্তব্য করুন