ডিভাইসে ট্রান্সফরমার ও খাঁচাবন্দি মিটার, তবুও থামছে না চুরি

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : ইরি-বোরো মৌসুমের শুরু থেকেই জয়পুরহাট জেলার মাঠে মাঠে গভীর ও অগভীর নলকূপের ট্রান্সফরমার ও মিটার চুরির ঘটনা আশঙ্কাজনক ভাবে বাড়ছে। চোর ধরা যাচ্ছে না, আর নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেও মিলছে না স্বস্তি।
এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নলকূপ মালিকরা। চুরিরোধে অনেকে ট্রান্সফরমার গায়ে ইলেকট্রিক ডিভাইস সংযোগ করেছেন, মিটার লোহার খাঁচায় বন্দি করে রেখেছেন। এমনকি পাহারার ব্যবস্থাও করছেন। তারপরও রক্ষা নাই। হাইড্রোলিক হর্ণ বসিয়েও চুরি ঠেকানো যাচ্ছে না। একাধিক ক্ষেত্রেই ট্রান্সফরমার হারিয়ে সেচ কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন মালিকরা।
চুরির ভয়াবহতা এতটাই বেড়েছে যে, চোরেরা এখন চুরির পর ঘটনাস্থলে বিকাশ নম্বর লিখে চিরকুট ফেলে রেখে যাচ্ছে। সেই নম্বরে টাকা পাঠালে ফেরত দিচ্ছে মিটার। তবে ট্রান্সফরমার ফিরে পাওয়ার সুযোগ থাকছে না। কারণ, সেগুলোর তামার তার খুলে নিয়ে ফেলে যাচ্ছে চোর চক্র।
জয়পুরহাট পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা গেছে, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে জেলায় মোট ১৬১টি ট্রান্সফরমার ও ৭১টি মিটার চুরি হয়েছে। এর মধ্যে কালাইয়ে চুরি হয়েছে ৭৬টি ট্রান্সফরমার ও ১৫টি মিটার। চোরদের দৌরাত্মে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন মালিকরা। একদিকে পুলিশের উদাসীনতা, অন্যদিকে পল্লী বিদ্যুতের সীমিত সহায়তা দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষকরা।
আরও পড়ুনকালাই উপজেলার আপলাপাড়া মাঠে আতাউর রহমানের গভীর নলকূপের দুটি ট্রান্সফরমার চুরি হয় দেড় মাস আগে। তিনি পুনরায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা খরচ করে দুটি ট্রান্সফরমার স্থাপন করেন। কিন্তু তিন দিনের মাথায় সেগুলোও চুরি হয়ে যায়। থানায় লিখিত অভিযোগ করেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ পাননি। বাধ্য হয়ে তিনি সেচ কার্যক্রম বন্ধ করে পাশের নলকূপ থেকে পানি নিয়ে কাজ চালাচ্ছেন।
দক্ষিণ বস্তা গ্রামের শওকত আলীর নলকূপ থেকে ৩ এপ্রিল রাতে চোরেরা পাহারাদারকে বেঁধে রেখে তিনটি ট্রান্সফরমার ও ব্যারেল খুলে নিয়ে যায়। ১০ দিন সেচ বন্ধ ছিল। ১৫ দিন আগে ওই মিটারটিও চুরি হয়। চোরদের ফেলে যাওয়া চিরকুটে বিকাশ নম্বর ছিল, টাকা পাঠিয়ে তিনি মিটার ফেরত পেলেও তা পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেনি। নতুন করে আবারও মিটার কিনতে বাধ্য হন।
মন্তব্য করুন