ভিডিও বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

আগাম সংযোগ বিচ্ছিন্ন করছেন মালিকপক্ষরা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে সেচ পাম্পের বৈদ্যুতিক মিটার ও ট্রান্সফর্মার চুরি থামছে না

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে সেচ পাম্পের বৈদ্যুতিক মিটার ও ট্রান্সফর্মার চুরি থামছে না

ক্ষেতলাল (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি : জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে বোরো মৌসুমে জমিতে সেচ দেওয়া প্রায় শেষের দিকে। কোন কোন এলাকার মাঠের উঁচু জমির ধান কাঁচা থাকায় দুই-এক বার সেচ দিলে কৃষকের আশানুরূপ ফসল ঘরে আসত। কিন্তু সেচ পাম্পের বৈদ্যুতিক মিটার চুরি বৃদ্ধি পাওয়ায় চুরি থেকে রক্ষা পেতে পাম্প মালিকরা আগাম সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যদিকে উঁচু জমিতে কাঁচা ধানের সেচের অভাবে কাঙ্খিত বোরো ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা।

জানা গেছে, সমগ্র উপজেলা রবি ও খরিপ মৌসুমে এবার ৯ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে আলু, ১০ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে বোরো, ৯০৫ হেক্টর জমিতে সরিষা, ৪০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ এবং ৩০ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়। এসব ফসল চাষের জন্য এই উপজেলায় ৩৮৬টি গভীর নলকূপ, ২৬৭টি অ-গভীর নলকূপ এবং ২০টি ডিজেলচালিত সেচ পাম্প চালু রাখা হয়।

ফসল উৎপাদনের সেচ সুবিধার্থে প্রতি বৎসর ডিসেম্বর মাস থেকে শুরু করে মে মাসের শেষ পর্যন্ত সেচ পাম্প চালু রাখতে গিয়ে বিভিন্ন এলাকায় সেচ পাম্পের মিটার চুরির ঘটনা ঘটলেও গত এক সপ্তাহ থেকে তা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশিরভাগ সেচ পাম্প মালিকরা মিটার চোরের হাত থেকে রক্ষা পেতে আগাম তাদের সেচ পাম্পের বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বাধ্য হচ্ছেন।

এ দিকে কিছু কিছু উঁচু জমিতে কাঁচা ধান থাকায় এসব জমিতে আরও দুই-এক বার সেচের প্রয়োজন হলেও মিটার ও ট্রান্সফর্মার চোরের উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় পাম্প মালিকরা মাঠের কাঁচা ধানে সেচ না দিয়ে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছেন পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে। এতে পরিপূর্ণ সেচের অভাবে বোরো ফলন কিছুটা কম হবে এমন আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

আরও পড়ুন

উপজেলা আকলাশ গ্রামের কৃষক ইব্রাহীম বলেন, সেচ পাম্পের মালিকরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন তাদের স্কিমে সুষ্ঠুভাবে সেচ সরবরাহ করতে। কিছু উঁচু জমিতে আরও সেচের প্রয়োজন হলেও চোরের অত্যাচারে তারা বাধ্য হচ্ছেন আগাম বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে। তবে পরিপূর্ণ সেচের অভাবে কিছুটা বোরো ফলন কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আকাশের বৃষ্টি হলে সেচের অভাব দূর হবে।

উপজেলা আলমপুর গ্রামের সেচ পাম্প মালিক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বর্তমান যেভাবে মিটার ও ট্রান্সফর্মা চুরি শুরু হয়েছে তাতে পাম্প মালিকরা আতঙ্কে রয়েছেন। একজন মালিকের সেচ পাম্পে একাধিকবার চুরির ঘটনা ঘটলে লাভ তো দূরের কথা ক্ষতি পোষাতে দুই থেকে তিন বছর সময় লাগবে। জয়পুরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ক্ষেতলাল সাব-জোনাল অফিসের এলাকা পরিচালক মাহমুুদুর হাসান চৌধুরী রকেট বলেন, প্রতিদিন কোন না কোন এলাকা থেকে মিটার চুরির খবর পাওয়া যায়। চুরি যাওয়া মিটার না নিয়ে অফিস থেকে নতুন মিটার সংগ্রহ করে পুনঃসংযোগ নিতে গ্রাহকদের বলা হয়েছে। এতে চোর চক্রের সদস্যরা নিরুৎসাহিত হয়ে মিটার চুরি কিছুটা রোধ হবে।

ক্ষেতলাল থানা ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, সেচ পাম্পের মিটার, ট্রান্সফর্মার চুরি প্রতিরোধে বিভিন্ন এলাকাতে জনসচেতনতামূলক সভা-সমাবেশ করা হয়েছে। সেই সাথে চোর চক্রের সদস্যদেরকে চিহ্নিত করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। চুরি ঠেকাতে কিছু কিছু এলাকায় স্থানীয়দের উদ্যোগে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত:সেনাপ্রধান

চামড়া সংরক্ষণে মসজিদ-মাদ্রাসায় ৩০ হাজার টন লবণ ফ্রিতে দেবে সরকার

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে মা-মেয়েকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে চলে গেল ট্রাক

ঈদের আগে বগুড়ার ১২ পৌরসভার সাড়ে ৩৮ হাজার সুবিধাভোগী ভিজিএফ’র চাল পাবেন

বগুড়ার সারিয়াকান্দির যমুনা নদী থেকে চায়না দুয়ারি জাল জব্দ ও ধ্বংস

বগুড়ার ধুনটে সরকারি জায়গা থেকে ভূমিহীনদের উচ্ছেদের অভিযোগ