অভিনয় ও নির্দেশনা নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত আবুল হায়াত
_original_1748184016.jpg)
অভি মঈনুদ্দীন ঃ একুশে পদকপ্রাপ্ত দেশ বরেণ্য জীবন্ত কিংবদন্তী অভিনেতা আবুল হায়াত এই সময়ে ভীষণ ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবুল হায়াতের ভাষ্যমতে দীর্ঘদিন পর তিনি একের পর এক কাজ করছেন নাটকে, বিজ্ঞাপনচিত্রে। যে কারণে এই সময়ে তিনি বেশ উচ্ছ্বসিত। একজন শিল্পী কাজের মাঝেই থাকতে ভালোবাসেন। এই বয়সে বা এই সময়ে এসে আবুল হায়াত এখনো কাজের মাঝেই থাকতে ভালোবাসেন।
গত মাসে কক্সবাজারে একটি নাটকের শুটিং করার আগে তিনি বিটিভির প্রযোজনায় ‘তিন পুরুষের গল্প’ নামের নাটকের কাজ শেষ করে যান। কক্সবাজারে তিনি হাসিব হোসেন রাখির পরিচালনায় ‘চলো হারিয়ে যাই’ নাটকের কাজ শেষ করেন। এরপর রবীন্দ্রনাথের গল্প নিয়ে আবুল হায়াতের নাট্যরূপে তারই পরিচালনায় তিনি অভিনয় করেন ‘সম্পত্তি সমর্পণ’ নাটকে। এরপর আবার চলে যান চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের বিটিভির কেন্দ্র’র জন্য অভিনয় করেন তারই রচিত নাটক ‘রঞ্জিত গোধূলী’ নাটকে। এরপর আবার ঢাকায় এসে তিনি আখতার ফেরদৌস রানার পরিচালনায় ‘পাতক’ নাটকের কাজ শেষ করেন। এরপর ভিকি জাহেদ’র নির্দেশনায় আবুল হায়াত ‘সিন্দুক’ নাটকের কাজ শেষ করেন। আজ থেকে রাবেয়া খাতুনের গল্পে আবুল হায়াতের নাট্যরূপে ও নির্দেশনায় নির্মিত হবে ‘লেখক’ নাটকটি। এই ‘লেখক’ নাটকের শুটিং শেষে তিনি পরপর তিনটি বিজ্ঞাপনের শুটিং-এ অংশ নিবেন।
এরমধ্যে দুটি হচ্ছে একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাটারীর বিজ্ঞাপন ও অন্য একটি হচ্ছে মেডিকেয়ারের বিজ্ঞাপন। এরইমধ্যে আবুল হায়াত গত ২৩ মে দেশের একটি বড় অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে ‘আজীবন সম্মাননা’তে ভূষিত হন।
নিজের কাজ, সম্মাননাপ্রাপ্তি প্রসঙ্গে আবুল হায়াত বলেন,‘ আলহামদুলিল্লাহ শরীর টা আগের চেয়ে বেশ ভালো আছে বিধায় বেশ আগ্রহ নিয়ে কাজ করছি। ঢাকা, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম যখন যেখানে শুটিং-এর প্রয়োজনে যেতে হচ্ছে যাচ্ছি। বেশ ভালো সময় কাটছে আমার। কাজের মধ্যে থাকতেই আসলে বেশি ভালোলাগে। আর যেহেতু মাঝে মাঝে আমাকেই নাট্যরূপ করতে হচ্ছে আমাকেই নির্দেশনা দিতে হচ্ছে, তাই নিজের ভেতর ভালোলাগাও কাজ করছে ভীষণ। সত্যি বলতে কী শিল্পীরতো আসলে অবসর নেই। শিল্পী আমৃত্যু কাজ করতে চায়, ক্যামেরার সামনে থেকে কাজটা করে যেতে চায়। আমিও একজন শিল্পী। আমি অভিনয় করতেই বেশি ভালোবাসি। বিগত কিছুদিনে অনেক কাজ করেছি, তাই ভীষণ ভালোলাগছে। আরো ভালো লাগছে আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্তিতে। আরো অনেক বেশি অনুপ্রেরণা পেলাম। আমাকে যে আরো ভালো ভালো কিছু কাজ করে যেতে হবে তা নতুন করে অনুভব করছি। সবাই আমার জন্য আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন।’
আরও পড়ুনটিভি নাটকের মতোই চলচ্চিত্রেও আবুল হায়াতের এক স্বর্ণালী অধ্যায় রয়েছে। তিনি যতো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন বলা যায় সব ক’টি চলচ্চিত্রই দর্শকনন্দিত হয়েছে। ঋত্তিক ঘটকের নির্দেশনায় ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ চলচ্চিত্রে আবুল হায়াত প্রথম অভিনয় করেন। এরপর তিনি রাজেন তরফদারের ‘পালংক’, সুভাষ দত্তের ‘অরুনোদয়ের অগ্নিসাক্ষী’, ‘বলাকা মন’, বেবী ইসলামের ‘চরিত্রহীন’ এবং মাজেদ মল্লিকের ‘রক্ত শপথ’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এই সব চলচ্চিত্রে অনেকটাই অনুরোধে অভিনয় করেছিলেন তিনি। তবে কাজী জহিরের ‘বধূ বিদায়’ চলচ্চিত্রে তিনি পরিচালকের সর্বোচ্চ আগ্রহের কারণেই তিনি অভিনয় করেন।
এরপর তিনি চাকরী করতে লিবিয়া চলে যান। লিবিয়া থেকে ফেরার পর আয়েত আলী পাটোয়ারীর ‘সূর্য সন্তান’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তবে আবুল হায়াত জানান পুরোপুরি পেশাগত মনোভাব নিয়ে তিনি সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এরপর থেকেই তিনি চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয় করেন পেশাগতভাবে।
মন্তব্য করুন