চাঁপাইনবাবগঞ্জে কিশোর সিহাব হত্যা মামলায় দু’জনের যাবজ্জীবন
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি : চাঁপাইনবাবগঞ্জে ব্যাটারীচালিত একটি রিকশাভ্যান কেড়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে ১৪ বছরের কিশোর সিহাবকে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় দায়ের একটি মামলায় দু’জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেই সাথে উভয়কে ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাস কারাদন্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৪টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের দায়রা জজ মো. মিজানুর রহমান আসামিদের উপস্থিতিতে দন্ডাদেশ প্রদান করেন।
দন্ডিতরা হলেন- জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ছোটদাদপুর গ্রামের আফজাল হোসেন ওরফে আবজাল মন্ডলের ছেলে আব্দুল হাকিম ওরফে হাকিম আলী (৩৮) এবং জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার মির্জাপুর কর্নখালী গ্রামের সুজন আলী (২৪)। একই মামলায় গোমস্তাপুরের কাশিয়াবাড়ি আলমপুর গ্রামের মৃত তফের আলীর ছেলে মোয়াজ্জেম হোসেন (৬২) নামে অপর এক আসামিকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। নিহত সিফাত গোমস্তাপুরের পার্বতীপুর ইউনিয়নের ধলখেরৈ গ্রামের সাদিকুল ইসলামের ছেলে।
মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা যায় এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মো. আব্দুল ওদুদ বলেন, ২০২০ সালের ৩১ আগস্ট বিকেলে বাড়ি থেকে ভাড়ার জন্য ভ্যান নিয়ে বের হয় সিফাত। কিন্তু ওইদিন সে আর বাড়ি ফেরেনি। অনেক খুঁজেও তার সন্ধান মেলেনি। এ ঘটনায় পরদিন ১ সেপ্টেম্বর গোমস্তাপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন সিফাতের বাবা। এরপর পুলিশ সিফাতকে খুঁজতে শুরু করে এবং ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হাকিম ও সুজনকে আটক করে।
আরও পড়ুন
জিজ্ঞাসাবাদে তারা পরিকল্পিতভাবে ভ্যান কেড়ে নেবার জন্য সিফাতকে ৩১ আগস্ট রাতেই গলায় পরনের গেঞ্জি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেন। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পরদিন ২ সেপ্টেম্বর ভোররাতে গোমস্তাপুরের রাধানগর ইউনিয়নের যাতাহারা বাজার এলাকায় সড়ক থেকে ৩শ’ গজ ভেতের একটি আখক্ষেতের মধ্যে থেকে সিফাতের মরদেহ উদ্ধার হয়। কেড়ে নেয়া ভ্যান উদ্ধার হয় মোয়াজ্জেমের বাড়ি থেকে।
এ ঘটনায় ওইদিন সিফাতের বাবা গোমস্তাপুর থানায় ৩ জনকে আসামি করে মামলা করেন। ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) এবং গোমস্তাপুর থানার তৎকালীন পরিদর্শক মিজানুর রহমান ওই ৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। ২৮ জনের সাক্ষ্য, প্রমাণ ও যুক্তিতর্ক শেষে আদালত গতকাল মঙ্গলবার হাকিম ও সুজনকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা প্রদান করেন এবং মোয়াজ্জেমকে খালাস দেন। আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এড. গোলাম মোস্তফা এবং অন্যরা।
মন্তব্য করুন