লালমনিরহাটে সড়কের কাজে অনিয়মের অভিযোগ, কাজ বন্ধের নির্দেশ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি : লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় প্রায় ৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন একটি সড়ক প্রকল্পে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের সামগ্রী। নির্মাণ শুরুর পর থেকেই ইট, খোয়া ও সিমেন্টে অনিয়মের অভিযোগ উঠছে।
প্লাসাইটিংয়ের গাঁথুনি এক দিন পরই খুলে পড়ছে। তদারকি সংস্থার চিঠি, মৌখিক নিষেধাজ্ঞা কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা করছে না ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ফলে এলজিইডির প্রকল্প বাস্তবায়নে দেখা দিয়েছে চরম দুর্নীতি ও অদক্ষতার ছাপ।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তর (এলজিইডি) ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী বাজার জিসি থেকে দুর্গাপুর জিসি সড়কটি বহুদিন ধরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে ছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) প্রকল্প গ্রহণ করে।
২০২১-২২ অর্থবছরের আওতায় ৯ কিলোমিটার ২২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটির জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ৬ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। চুক্তি অনুযায়ী ২০২৫ সালের আগস্ট মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত অর্ধেক কাজও শেষ হয়নি। প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত বগুড়ার সৈকত এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যে দুই কিস্তিতে বিলও বুঝে নিয়েছে। প্রথম থেকেই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ তোলে স্থানীয়রা।
সড়কের পাশের ছয়টি পুকুরে প্লাসাইটিং করা হয় নিম্নমানের ইটে। সেখানে এক নম্বর ইট ও সিমেন্টের মানসম্মত মিশ্রণের বদলে অধিক বালু ও কম সিমেন্ট দিয়ে গাঁথুনি দেওয়া হয়েছে। গাঁথুনি ভেঙে পড়ার পর এলাকাবাসীর প্রতিবাদে নতুন করে দেয়াল তুললেও পুনরায় সেই ভাঙা ইটই ব্যবহার করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল বলেন, সিমেন্ট তো নেই বললেই চলে, শুধু বালু দিয়ে কোনোভাবে ইট লাগিয়ে ফেলা হয়। কাজ শেষ হলে গাঁথুনি ঢেকে ফেলা হয় মাটি দিয়ে, তাই পরে কিছু বোঝা যায় না।
আরও পড়ুনঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি বলেন, কিছু নিম্নমানের ইট ভুলে শ্রমিকেরা ব্যবহার করেছে। পরে দেয়াল ভেঙে আবার গাঁথুনি করা হয়েছে। পুরোনো ইট তো ভাটা ফেরত নেয় না, তাই তা ব্যবহার করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে প্রকল্পটির সুপারভাইজার উপ-সহকারী প্রকৌশলী পারভেজ রুবেল বলেন, ভাঙা ইট পুনরায় ব্যবহার করায় প্লাসাইটিংয়ের কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। তবে অন্য অংশের কিছু কাজ সন্তোষজনক হয়েছে। কথা হলে আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলী এ.কে.এম ফজলুল হক বলেন, শুরু থেকেই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ ছিল।
মৌখিকভাবে বহুবার বলেছি, পরে লিখিত চিঠিও দিয়েছি। দ্বিতীয় দফায় আবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনও ইতোমধ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। বিধি অনুযায়ী আমরা প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি।
মন্তব্য করুন