ভিডিও বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

বগুড়া শহরজুড়ে ভাঙাচোরা ও খানাখন্দকে ভরা সড়ক 

বগুড়া শহরজুড়ে ভাঙাচোরা ও খানাখন্দকে ভরা সড়ক 

স্টাফ রিপোর্টার : ১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বগুড়া পৌরসভা কালক্রমে সীমানা বাড়তে বাড়তে বর্তমানে আয়তন দাঁড়িয়েছে ৬৯ দশমিক ৫৬ বর্গকিলোমিটার। ২১টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এ পৌরসভার জনসংখ্যা ১০ লাখের বেশি। ১৯৮১ সালে ‘ক’ শ্রেণির মর্যাদা পাওয়া এই পৌরসভার আয়তন যত বড় তার চেয়েও বড় এই পৌরসভার নানা সমস্যা।

এরমধ্যে বড় সমস্যা শহরের সড়ক। বগুড়া পৌরসভায় ১ হাজার ৩৪০ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে ৪৫০ কিলোমিটার পাকা সড়কের বেশিরভাগই এখন ক্ষতবিক্ষত, ভাঙাচোরা ও খানাখন্দে ভরা। এর মধ্যে আবার ২১ শতাংশের বেশি সড়কই কাঁচা। এসব সড়কে ভোগান্তির শেষ নেই। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, গোহাইল রোড, সেউজগাড়ী কারমাইকেল রোড, পানি ট্যাংকি সড়ক, সবুজবাগ সড়ক, চেলোপাড়া-চন্দনবাইশ, কাজির মোড় থেকে এসপি ব্রিজ হয়ে সাতমাথা সড়ক, কালীতলা-করোনেশন স্কুল সড়ক, নুরানি মোড় থেকে উপশহর সড়ক, ঈদগাহ মাঠ-কারমাইকেল, সূত্রাপুর সড়ক, পুরাতন সান্তাহার সড়ক, পিটিআই মোড়-বকশি বাজার, থানা মোড়-ফতেহ আলী বাজার, হোটেলপট্টি, রাজা বাজার, নারুলী গণকবর থেকে দত্তবাড়ী সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ।

গোহাইল রোড তথা সাতমাথা থেকে ফুলতলা পর্যন্ত সড়কের বেশিরভাগই অংশ বড় বড় খানাখন্দকে ভরা। সড়কটির এমন শোচনীয় অবস্থা দীর্ঘদিনের। এবড়োথেবড়ো এই সড়কে চলাচল একেবারেই দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। চন্দনবাইশা সড়কের কাজির বাড়ি মোড় থেকে এসপি ব্রিজ এবং ফতেহ আলী ব্রিজ পর্যন্ত সড়কে খানাখন্দকের শেষ নেই। কোথাও কোথাও রাস্তার পিচ উঠে এমন গর্তের সৃষ্টি হয়েছে যে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। নারুলী গণকবর থেকে দত্তবাড়ী পর্যন্ত সড়কে বেহাল দশা দীর্ঘদিনের। সড়কটির কোথাও পিচ নেই বললেই চলে। কাঁঠালতলা থেকে বড়গোলা পর্যন্ত ৩ নম্বর রেলগেট পারাপার হয়ে সড়কটি ভাঙাচোরা। চাঁদনী বাজার সড়ক এবং কাঁঠালতলায় সড়কের ওপর বাজার বসায় এবং ময়লা-আবর্জনার স্তূপ করে রাখায় পথচারীদের বছরজুড়েই যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হয়। ফতেহ আলী বাজার মোড়ে ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে বাজারে প্রবেশ করা খুব কষ্টকর হয়ে পড়ে। সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে ময়লার স্তুপের দুর্গন্ধে নাকাল জনজীবন।  

কেনাকাটা করতে আসা গৃহিনী সুমনা শর্মা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শহরের প্রধান বাজারে সামনের এই পরিবেশ কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। দিনভর এখানে ময়লা স্তুপ করে রাখা হয়, হেঁটে বাজারে ঢুকতে ময়লা মাড়িয়ে যেতে হয়। ভাঙাচোরা রাস্তায় দুর্গন্ধে খুব অস্বস্তি নিয়ে এই এলাকায় চলাচল করতে হয়। 

কাঁঠালতলা এলাকার পথচারী আবু মুসা আক্ষেপ করে বলেন, এখানে রাস্তা কোথায়? ফুটপাথ কোথায়? ফুটপাত দখলের পর রাস্তার বেশিরভাগ অংশ দখল করে নির্বিঘ্নে চলছে অবৈধ কারবার, যেন দেখার কেউ নেই। 
গোহাইল রোডের অবস্থা আরও বেশি খারাপ। সড়কটিতে দীর্ঘ দিন ধরে ভেঙেচুড়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হলেও নেই কোন সংস্কার কাজ। 

এই সড়কের অটোরিকশা চালক শাহিন মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির বেহাল অবস্থা। একটু বৃষ্টি হলেই কাদাজলে একাকার হয়ে যায়। তখন বড় বড় গর্তে পানি জমে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। কেন কেউ সড়কটির দিকে নজর দেয় না তা এক রহস্য।  
খান্দার এলাকার শিক্ষার্থী একরামুল হক বলেন, এই সড়কের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, পায়ে হেঁটেও যাতায়াত করতে ভয় হয়। এছাড়াও খান্দার মোড় থেকে সেউজগাড়ী পর্যন্ত সড়কটিও বেহাল। মাঝে ময়লার স্তুপ থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়, আবার বৃষ্টি হলে পানিতে রাস্তা তলিয়ে ময়লা রাস্তায় উঠে আসে, তখনতো চলাচলই বন্ধ হয়ে যায়।  

আরও পড়ুন

পথচারী সাকলায়েন সজিব বলেন, শহরের সড়কগুলোর এমন দৈন্যদশার মধ্যে পরিকল্পনাহীনভাবে সড়কের মাঝে ইচ্ছেমত আন্ডরগ্রাউন্ডে ইন্টারনেট সংযোগসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের বক্স করে রেখেছে। সড়কে মাঝে এমন উঁচু বক্সের কারণেও ঘটছে দুর্ঘটনা। 

সাব্বির রহমান নামের আরেক পথচারী বলেন, শহরের খানাখন্দকে ভরা রাস্তাঘাটের সাথে অনিয়ন্ত্রিত ও অবৈধ যানবাহনের চাপে রয়েছে যানজটের ভোগান্তি। তার ওপর মূল শহরের বেশিরভাগ সড়কের ফুটপাত ও সামনের সড়ক ভাড়া দিয়ে চলছে অবৈধ বাণিজ্য। একদিকে বেহাল সড়ক, অন্যদিকে ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় চরম ভোগান্তিতে শহরবাসী।
শহরজুড়ে বেহাল সড়কের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে বগুড়া পৌরসভা প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

 

 

 

 

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

১৮ জুলাই জবিতে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম পুনর্মিলনী

গোপালগঞ্জে হামলাকারীদের গ্রেফতারে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম এনসিপির

বগুড়ায় বউ-শাশুড়ীকে জবাই করে খুন

শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ

‘চুপিচুপি’ উইনার্স মেডেল পকেটে ঢুকিয়ে ভাইরাল ট্রাম্প

দেশে ফিরেই কয়েক ঘন্টা বিশ্রাম শেষে স্টেজ শো’তে লিজা