আইপিসির সতর্কবার্তা
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় চলছে দুর্ভিক্ষ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় এখন দুর্ভিক্ষ ‘চলছে’ সতর্ক করে দিয়েছে একটি বৈশ্বিক ক্ষুধা পর্যবেক্ষণ সংস্থা। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের পরিস্থিতি নিয়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক তীব্র সমালোচনার মাঝে মঙ্গলবার এই সতর্কবার্তা দিয়েছে সংস্থাটি।
ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) নামের ওই সংস্থাটি বলেছে, দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি এখন গাজা উপত্যকায় চলমান। এই উপত্যকায় ব্যাপক ক্ষুধা, অপুষ্টি এবং রোগব্যাধির সঙ্গে ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর হারও বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে আইপিসির এই সতর্কবার্তায় গাজাকে আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ভিক্ষপীড়িত এলাকা হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়নি। এই ধরনের ঘোষণা কেবল বিশ্লেষণের মাধ্যমে দেওয়া যায় বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। আইপিসি বলেছে, তারা বিলম্ব না করে গাজা উপত্যকাকে দুর্ভিক্ষকবলিত হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার কাজ শুরু করবে।
আন্তর্জাতিক ২১টি সংস্থার বৈশ্বিক উদ্যোগ আইপিসি। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংগঠন ও জাতিসংঘের কিছু সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে এই সংস্থাটি। তারা বিশ্বের নানা প্রান্তের জনগোষ্ঠীর মাঝে ক্ষুধার মাত্রা নির্ধারণ করে থাকে।
গত ২২ মাস ধরে গাজায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের মাঝে যুদ্ধ চলছে। মানবিক সংকটের কারণে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে পড়া ইসরায়েল গত রোববার বলেছে, তারা প্রতিদিন ১০ ঘণ্টার জন্য গাজার কিছু অংশে সামরিক অভিযান বন্ধ রাখবে এবং নতুন ত্রাণপথ চালু করবে।
কোনও এলাকায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করতে হলে সেখানকার অন্তত ২০ শতাংশ মানুষের চরম খাদ্যসংকট, প্রতি তিনজন শিশুর একজনের তীব্র অপুষ্টি ও প্রতি ১০ হাজার জনে দু’জনের দৈনিক মৃত্যুহার থাকতে হয়।
সতর্কবার্তায় আইপিসি বলেছে, গাজা উপত্যকায় এই মুহূর্তে সংঘাতের অবসান এবং বাধাহীন ও ব্যাপক পরিসরে জীবনরক্ষাকারী মানবিক সহায়তার অনুমতি দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। কেবল এই পদক্ষেপই সেখানে মৃত্যুহার ও মানবিক বিপর্যয় ঠেকানোর একমাত্র উপায়।
আরও পড়ুনজাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ২১ লাখ মানুষের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার বেশিরভাগ এলাকায় খাদ্যগ্রহণের দিক থেকে দুর্ভিক্ষের মাত্রা অতিক্রম করেছে। এছাড়া গাজা নগরীতে তীব্র অপুষ্টির মাত্রাও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
আইপিসির সতর্কবার্তার আগে ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির প্রধান ডেভিড মিলিব্যান্ড এক বিবৃতিতে বলেছেন, দুর্ভিক্ষের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা সবসময় বাস্তবতার পেছনে পড়ে থাকে।
‘‘২০১১ সালে সোমালিয়ায় যখন দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হয়, তখনই ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ—যাদের অর্ধেকই ছিল ৫ বছরের কম বয়সী শিশু—মারা গিয়েছিল। গাজায় যখন দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হবে, তখন হয়তো অনেক দেরি হয়ে যাবে।’’
সূত্র: রয়টার্স।
এসএস
মন্তব্য করুন