তিস্তার পানি বাড়ায় ভোগান্তিতে বানভাসীরা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে চলছে রান্নার কাজ
_original_1753980024.jpg)
লালমনিরহাট প্রতিনিধি : তিস্তার পানি বাড়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন লালমনিরহাটের বানভাসীরা। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর চুলা জ্বালিয়ে চলছে তাদের রান্নার কাজ। এখনও জেলার পাঁচ উপজেলার প্রায় ৭ হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছেন। এরমধ্যে পাঁচ শতাধিক পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা করেছে জেলা প্রশাসন।
গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে। এতে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তবে গত বুধবার সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি কমতে শুরু করে। এদিন সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানি কমে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। একই পয়েন্টে বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সকাল ৯টায় ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও মাত্র ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে পানি বেড়ে দুপুর ১২টা থেকে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়।
গত মঙ্গলবার রাত থেকে হঠাৎ তিস্তা নদীর পানি বেড়ে গিয়ে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলে পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি বৃদ্ধিতে তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোতে দেখা দিয়েছে বন্যা। আকস্মিক বন্যায় হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান, সিন্দুরনা, পাটিকাপাড়া, গড্ডিমারী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ও সদর উপজেলার রাজপুর, খুনিয়াগাছ ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোর ১৫টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে।
বসতবাড়িতে পানি ওঠায় দুর্ভোগে পড়েন এলাকার মানুষ। গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন অনেকে। পানির তোড়ে ভেঙে যায় রাস্তাঘাটও। ঘরবাড়িতে পানি ওঠায় রাস্তায় চুলা জ্বালিয়ে রান্না করছেন, আবার কেউ কেউ রাস্তার ধারে একচালা ঘর করে গরু ছাগল নিয়ে বিছানা পেতেছেন।
আরও পড়ুনএদিকে জেলার ১২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে পানি উঠেছে। কোনো কোনো বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষেও বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। স্কুলে পানি ওঠায় জেলা সদরে ৬টি ও আদিতমারী উপজেলায় ৬টি বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের স্কুলে না আসার পরামর্শ দেন শিক্ষকরা। এ বিষয়ে কথা হলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার লিটন দাস বলেন, যে সব বিদ্যালয়ে পানি উঠেছে সেসব বিদ্যালয় শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। তাই বন্যার পানি নেমে যাওয়া পর্যন্ত পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার জানান, বন্যার্তদের সবধরনের সহযোগিতা করতে জেলা প্রশাসন তৎপর রয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বন্যা আশ্রয়ণ কেন্দ্র। ইতোমধ্যে বন্যার্ত ৫ শতাধিক পরিবারের মাঝে ৩০ কেজি করে চাল, শুকনো খাবার, ডাল ও চিড়া বিতরণ করা হয়েছে। তালিকা মতে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন