নওগাঁর ট্রিপল মার্ডার মামলা ৩ জনের যাবজ্জীবন, ৮ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা

নওগাঁ প্রতিনিধি : ২২ বছর আগে নওগাঁর পোরশায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ৩ জনকে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসাথে তাদের প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মামলার ৭ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন চার জন।
আজ বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে নওগাঁর অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১ ও স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মোহাম্মদ ফেরদৌস ওয়াহিদ এ রায় দেন। যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া তিন আসামি হলো পোরশার কালাইবাড়ি গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক, একই গ্রামের আবুল কাশেম ও আব্দুল কাদির। রায় ঘোষণার সময় আবুল কাশেম ও আব্দুল কাদির আদালতে উপস্থিত ছিল। এছাড়া আবু বক্কর সিদ্দিক পলাতক রয়েছে।
রায়ে মামলার আসামি পোরশার কালাইবাড়ি গ্রামের দুরুল হুদা, আলিম, আবুল কাশেম ও ওয়াজেদ আলীকে ৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সাথে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে কারাদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া মামলার আসামি তরিকুল ইসলাম, রেজাউল করিম ও আবুল কালামকে এ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে আসামি দুরুল হুদা পলাতক রয়েছেন। রায় ঘোষণার পর আদালতে উপস্থিত দণ্ডপ্রাপ্তদের কারাগারে পাঠানো হয়। রায়ে খালাস পাওয়া ব্যক্তিরা হলো, মরিয়ম বিবি, কামেলা বেগম, কহিনুর বেগম ও রফিকুল ইসলাম।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালের ৩০ আগস্ট পোরশা উপজেলার কালাইবাড়ি গ্রামের কৃষক আব্দুস সামাদ আম বাগানে কাজ করছিলেন। ওইদিন সকাল ৭টায় কালাইবাড়ি গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক, আবুল কাশেম ও আব্দুল কাদিরের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন ব্যক্তি তার আম বাগানে এসে অবৈধভাবে জায়গা দখলে নিতে চায় এবং কিছু আম গাছ উপড়ে ফেলে।
আরও পড়ুনএ সময় আব্দুস সামাদের স্ত্রী, ছেলে, ভাই এবং বোনেরা এগিয়ে আসলে মামলার আসামিরা তাদের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলে অন্তত ১২ জন গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ৮জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুস সামাদের ভাই শফিকুল ইসলাম, বোন সেলিনা এবং তাঁর মেয়ে নার্গিস মারা যান। এ ঘটনায় আব্দুস সামাদ বাদি হয়ে ২০০৩ সালের ৩০ আগস্ট পোরশা থানায় ২৬ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ ২২ বছর ধরে এ মামলায় ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও উভয়পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষে আদালত এ রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটির শুনানি করেন নওগাঁর অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১ ও স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-২ এর অতিরিক্ত সরকারি কৌসুলি (এপিপি) সাব্বির আহমেদ। আসামিদের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী তাজরিন নাহার।
মন্তব্য করুন