নাটোরের হালতিবিলে চলছে নির্বিচারে পোনা মাছ নিধন হচ্ছে

নলডাঙ্গা (নাটোর) প্রতিনিধি : প্রসাশনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে নাটোরের হালতিবিলসহ বিভিন্ন বিলে মাছের পোনা নিধনের মহোৎসব চলছে। এ অঞ্চলের নদ-নদী ও খাল-বিলের পানিতে রাতদিন প্রকাশ্যে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারি জালসহ বিভিন্নভাবে পোনা মাছ নিধন করছে কিছু অসাধু ব্যক্তি। ফলে একদিকে যেমন মাছের স্বাভাবিক প্রজনন ব্যহত হচ্ছে। অপরদিকে এসব নিষিদ্ধ জালে ছেঁকে মাছ ধরায় বিলের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, একদিকে প্রসাশনের পক্ষ থেকে কিছু লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করা হলেও, প্রভাবশালীদের কারণে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে একটি চক্র। এছাড়া উপজেলার ব্রহ্মপুর, ঝুপদুয়ার, চাড়ালপাড়া ব্রিজ ও ব্রহ্মপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মাধনগর সংযোগ সড়কের প্রথম ব্রিজের পানি প্রবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে এলাকার অল্প কৃষকের সুবিধা হলেও বৃহত্তর এলাকার হাজার হাজার কৃষক পানির অভাবে পাট জাগ দিতে অসুবিধায় পড়ছেন।
জানা যায়, হালতিবিলসহ উপজেলার বিভিন্ন ছোট ছোট বিলে নৌকা নিয়ে অসাধু জেলেরা নিষিদ্ধ জাল ফেলে মাছ শিকার করছে। বাদাই জাল, চায়না দুয়ারি জাল ফেলে পোনা মাছ শিকার করছে তারা। ভোরের আলো না ফুটতেই হালতিবিলের মাধনগর, পাটুল, খাজুরা বাজার, ত্রিমোহনী বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে আসতে শুরু করে মাছের ছোট ছোট পোনাসহ বিভিন্ন মাছ।
নামমাত্র দামে বিক্রি হচ্ছে এসব পোনা মাছ। নামে জাল হলেও চায়না দুয়ারি মূলত এক ধরনের ফাঁদ। যাতে আটকা পড়ে পুঁটি, টেংরা, বোয়ালসহ বিভিন্ন মাছের পোনা। এতে দেশীয় মাছের প্রজনন ব্যহত হচ্ছে। বেশিরভাগ জালে মাছের সাথে মারা পড়ছে বিভিন্ন জলজ প্রাণীও। এতে হুমকির মুখে পড়ছে হালতিবিলের প্রাণবৈচিত্র্য।
আরও পড়ুনএলাকাবাসী জানায়, যারা মাছ শিকার করছেন, তাদের অধিকাংশ অপেশাদার মৎসজীবি। বর্ষাকাল আসলেই মহাজন সেজে টাকা বিনিয়োগ করে মাছ ধরার কর্মজজ্ঞ চালায় তারা। তাদের ব্যবহৃত অবৈধ জাল দিয়ে মাছ শিকারের ফলে ধবংস হচ্ছে হালতিবিলের মৎস্য সম্পদ। তাই প্রসাশনকে আরও কঠোর হয়ে হালতিবিলসহ উপজেলার অন্যান্য খাল-বিল, নদী রক্ষার দাবি জানান তারা।
নলডাঙ্গা উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে হালতিবিলের আয়তন ৮ হাজার ৫শ’ হেক্টর আর এখানে প্রায় ৮০ প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। সিনিয়র উপজেলা মৎস কর্মকর্তা মো. আবু সাঈদ জানান, ইতোমধ্যে একটি মোবাইল কোর্ট ও ৫টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে ২৯৫ পিস চায়না দুয়ারি জাল, একটি বাদাই জাল জব্দ করে তা পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া ২শ’ কেজি কাঁকড়া ও পোনা মাছ উদ্ধার করে তা হালতিবিলে অবমুক্ত করা হয়েছে। নিষিদ্ধ চায়না ও বাদাই জাল বন্ধে তারা তৎপর রয়েছেন।
নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রেদুয়ানুল হালিম বলেন, মৎস্য আইন বাস্তবায়নে অবৈধজাল উচ্ছেদসহ বিভিন্নভাবে অভিযান চালিয়ে তারা এসব নির্মূল করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন জাল উদ্ধার ও বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এসব অবৈধ কার্যকম বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে ও নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হবে।
মন্তব্য করুন