ভিডিও সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫

কলাগাছের ভেলায় ভেসে বানভাসীদের ব্যতিক্রমী সংবাদ সম্মেলন

কলাগাছের ভেলায় ভেসে বানভাসীদের ব্যতিক্রমী সংবাদ সম্মেলন

বন্যায় প্লাবিত জনপদের অসহায় মানুষ আজ এক অভিনব পদ্ধতিতে নিজেদের দাবি দাওয়ার কথা তুলে ধরলেন।

কলাগাছের ভেলায় ভেসে পানিতে দাঁড়িয়ে বানভাসীরা আয়োজন করেন এক ব্যতিক্রমী সংবাদ সম্মেলনের। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে কলাগাছের ভেলায় ভেসে এ সংবাদ সম্মেলন করেছেন পটুয়াখালীর উপকূলীয় অঞ্চল কলাপাড়ার বানভাসী মানুষ।

আজ সোমবার (১১ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের পশ্চিম লোন্দা গ্রামের টিয়াখালী নদী তীর এলাকায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ওই গ্রামের শতাধিক ভুক্তভোগী মানুষ উপস্থিত ছিলেন সেখানে।

সংবাদ সম্মেলনে বানভাসী মানুষের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওই এলাকার বাসিন্দা হালিমা আয়শা। তিনি বলেন, প্রায় ৪০ বছর ধরে পশ্চিম লোন্দা গ্রামের টিয়াখালী নদী তীর-সংলগ্ন এলাকায় বসবাস করে আসছে ২৫০টি পরিবার। এ নদীর তীরে বেড়িবাঁধ না থাকায় বহু বছর ধরে প্রতিনিয়ত দু'দফা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয় ওই এলাকা। তলিয়ে যায় ২০০ একর কৃষি জমি, রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বসত ভিটা।

আরও পড়ুন

তিনি লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, বর্ষাকালীন সময়ে অনেকের চুলোয় জলে না উনুন। নষ্ট হয়ে যায় জমির ফসল। তখন চলাচলের একমাত্র বাহন হয় ভেলা কিংবা নৌকা। ওই গ্রামের ৩ কিলোমিটার এলাকায় টেকসই রিং বেড়িবাঁধ নির্মাণ করলে এ অসহনীয় দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাবে বানভাসী মানুষ। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের এক সদস্য কবির হোসেন বলেন, স্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে আমাদের পুরো এলাকা তলিয়ে যায়। আর তখন আমরা ঠিকমতো স্বাভাবিক চলাফেরা করা, গবাদিপশু চরানো, ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠানো থেকে শুরু করে সব ধরনের কাজে ভোগান্তি নেমে আসে। এই দুর্দশা থেকে বাঁচতে আমাদের টেকসই বেরিবাঁধ নির্মাণের কোনো বিকল্প নেই। টেকসই বাঁধ নির্মাণ এখন আমাদের সবার প্রাণের দাবি।

এ বিষয় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কলাপাড়া উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন মান্নু বলেন, উপকূলের সাধারণ মানুষ বছরের অধিকাংশ সময়ই বৈরী আবহাওয়া, ঝড় বন্যা, জলোচ্ছ্বাসসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্য দিয়েই জীবন অতিবাহিত হয়। এর বাইরে যে সময়টুকু পায় তাও কাটাতে পারে না শান্তি বা স্বস্তিতে। কারণ টেকসই বাঁধ না থাকায় জোয়ারের পানিতেও তলিয়ে যায় এসব এলাকা।  আর এভাবেই প্রতিনিয়ত তৈরি হয় জন ভোগান্তির। এসব সমস্যা সমাধানে দরকার স্থায়ী টেকসই বেরিবাঁধ নির্মাণ। তাহলে উপকূলের দুর্ভাগা সাধারণ মানুষ কিছুটা হলেও ভালো থাকতে পারবে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী সাদেকুর রহমান সাদিক বলেন, পটুয়াখালী কলাপাড়া উপজেলাধীন যেসব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় দুর্বল বেরিবাঁদ রয়েছে, সেগুলো সংস্কার এবং টেকসই বাঁধ নির্মাণ করার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা কথা বলবো। তবে ভুক্তভোগীরা আবেদন করলে বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি আরও গুরুত্বসহকারে দেখা যাবে বলেও মনে করেন তিনি। 

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বাংলাদেশে শুটিং হওয়া হলিউডের সেই সিনেমার সিক্যুয়েল আসছে

সেফটিপিনের ছোট্ট লুপে লুকিয়ে আছে বড় রহস্য

বগুড়ার নন্দীগ্রামে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ নিহত এক, আহত পাঁচ

লালমনিরহাটের পাটগ্রামে সড়ক সংস্কার না হওয়ায় সীমাহীন দুর্ভোগে পথচারীরা

পাকিস্তানের হারে বড় দুঃসংবাদ পেল বাংলাদেশ

আমরা সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে চাই : তারেক রহমান