বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনায় পানিবৃদ্ধি টানা বৃষ্টিতে ফসলহানি

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি: সারিয়াকান্দিতে গত কয়েকদিন ধরেই যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) পানি বিপৎসীমার মাত্র ৮২ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এ যাত্রায় পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা খুবই কম বলে জানিয়েছে বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড। এদিকে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে উপজেলার বিভিন্ন প্রজাতির সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলহানির খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেইসাথে বাড়ছে বাঙালি নদীর পানিও।
উজানের পাহাড়ি ঢল এবং গত কয়েকদিনের টানা ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে গত কয়েকদিন ধরেই সারিয়াকান্দিতে যমুনা এবং বাঙালি নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ গত ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর ৮ সেন্টিমিটার, ১৫ সেপ্টেম্বর ১২ সেন্টিমিটার, ১৬ সেপ্টেম্বর ১৫ সেন্টিমিটার, ১৭ সেপ্টেম্বর ১২ সেন্টিমিটার, ১৮ সেপ্টেম্বর ১৩ সেন্টিমিটার এবং গতকাল ১৯ সেপ্টেম্বর যমুনা নদীর পানি ১৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে।
আজ শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে সারিয়াকান্দি মথুরাপাড়া পয়েন্টে এ নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৫.৪৩ মিটার। সারিয়াকান্দিতে এ নদীর পানির বিপৎসীমা ১৬.২৫ মিটার। অর্থাৎ আজ শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল পর্যন্ত পানি বিপৎসীমার ৮২ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এদিকে যমুনার সাথে এ উপজেলা বাঙালি নদীর পানিও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আজ শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এ নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৩.৩৬ মিটার। ২৪ ঘন্টায় এ নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ২৮ সেন্টিমিটার। সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানির বিপৎসীমা ১৫.২১ মিটার। অর্থাৎ বাঙালি নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ২ মিটার ১৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এদিকে গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে উপজেলার নীচু জমিতে পানি জমেছে।
এসব জমিতে কৃষকরা মরিচ, মিষ্টি কুমড়া, বিভিন্ন জাতের সবজি, স্থানীয় জাতের গাইঞ্জা, মাসকলাইসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করেছেন। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সদ্য রোপণ করা বা বেড়ে ওঠা হাইব্রিড জাতের মরিচ।
আরও পড়ুনখোঁজ নিয়ে জানা গেছে উপজেলার শনপচা, নান্দিনার চর, মূলবাড়ী, জামথল, মানিকদাইড়, পাকুরিয়া, চালুয়াবাড়ীসহ বেশকিছু চরের কৃষকদের মরিচ গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ার পথে রয়েছে। যমুনার পানি এবং বৃষ্টির পানিতে উপজেলার বেশকিছু এলাকায় সদ্য বেড়ে ওঠা স্থানীয় জাতের গাইঞ্জা ধান পানিতে আক্রান্ত হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে।
উপজেলার কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, সারিয়াকান্দির যমুনার বিভিন্ন চরাঞ্চলে কৃষকেরা জমিতে মরিচসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ শুরু করেছিলেন। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে নীচু এলাকার ফসল বৃষ্টির পানিতে আক্রান্ত হয়েছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে উপজেলার মরিচ, ধানসহ বেশকিছু ফসল পানিতে আক্রান্ত হয়েছে। বৃষ্টি কমে গিয়ে আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে ফসলগুলো নষ্ট না হয়ে উত্তোরন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা সার্বক্ষণিক মাঠ তদারকি চালিয়ে যাচ্ছি।
বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক বলেন, উজানের পাহাড়ি ঢল এবং ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে বগুড়ায় বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। আরও কয়েকদিন পানিবৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকবে। তবে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা খুবই কম।
মন্তব্য করুন